সরাইলে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আরমানের

- আপডেট সময় : ০৯:৫৫:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জুলাই ২০২২ ২০৫ বার পড়া হয়েছে
সরাইলে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল আরমান হোসেন (১৫) নামের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। আহত হয়েছে আখিঁ নামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। নিহত আরমান শাখাইতি গ্রামের এলাই মিয়ার ছেলে। আজ সোমবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার পানিশ্বর বাজারের ষোলাবাড়িতে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে। বিদ্যালয়, নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, পানিশ্বর উত্তর বাজারের ষোলাবাড়ি এলাকায় শাখাইতি গ্রামের বাছির মিয়ার একটি দ্বিতল ভবন রয়েছে। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকেন পানিশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিষয়ের শিক্ষক মো. রাশেদুল ইসলাম। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ান। ওই ভবনের ছাদের ২-৩ ফুট উপর দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লাইনের (এইচ.টি) ক্যাবল টানা আছে। অন্যান্য দিনের মত আজও সকালে প্রাইভেট পড়তে আসে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আখিঁ। এর আগে প্রাইভেট পড়ছিল ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মো. আরমান হোসেন। আরমানদের ছুটির পরই পরের ব্যাচে পড়বে আখিঁরা। এরই ফাঁকে হঠাৎ কয়েকজন শিক্ষার্থী চিৎকার করে জানায় ছাদের উপর আখিঁ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছটফট করছে। দৌঁড়ে ছাদে গিয়ে আখিঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে বৈদ্যুতিক শর্ট খেয়ে নিচে পড়ে যায় আরমান। নাক কান দিয়ে রক্ত ঝড়তে থাকে। উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরমানকে জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ভবনে বসবাসকারী শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম বলেন, ছাদের ঠিক ২-৩ ফুট উপর দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লাইন টানা আছে। যা আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদের দরজা খুলা ছিল এমনটা আমার জানা নেই। আঁখি নামের শিক্ষার্থীকে রক্ষা করতে গিয়েই আরমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে। ভবন মালিক বাছির মিয়া বলেন, ৮-১০ বছর আগে নির্মল ডাক্তারের কাছ থেকে ভবনটি ক্রয় করে ২-৩ বছর আগে সংস্কার কাজ করেছি। জীবন মিয়ার কাছে বছরে ৫০ হাজার টাকায় ভবনটি ভাড়া দিয়েছি। ছাদ থেকে বিদ্যুতের ক্যাবল সরাতে অনেক চেষ্টা করেছি। কর্তৃপক্ষ বলেছেন অপেক্ষা করূন। প্রকল্প দিয়েছি। বড় খুঁটি আসবে। ছাদের গেইট আমি শক্ত করে বন্ধ করে রেখেছি। জীবনকে বলেছি, ‘তোর বাপ কবর থেকে এসে বললেও ছাদের গেইট খুলবি না।’ নিচতলায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। দ্বিতীয় তলায় শিক্ষক ভাড়া আছেন আমি জানতাম না। পল্লী বিদ্যুতের ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মো. মফিজ মিয়া বলেন, ওই লাইন ২০ বছর আগে টানা। ভবনের ছাদের কোন জায়গায় ক্যাবল আছে এটা বড় কথা নয়। মানুষ যেকোন উপায়ে বিদ্যুৎ চাই। অন্য কিছু বুঝতে তারা রাজি না। ছাত্র মৃত্যুর খবর আমাকে কেউ জানায়নি। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস’লে পুলিশ অফিসার পাঠিয়েছি। নিহত ছাত্রের লাশ জেলা সদর হাসপাতালে আছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কারো কোন অভিযোগ নেই।
মাহবুব খান বাবুল