পুলিশ এ্যাসল ও হেফজতের তান্ডবের মামলায় সন্ধিগ্ধ তদন্তে প্রাপ্ত আসামী হওয়ায় শ্রমিক দলের সম্পাদক ডি এম দুলাল, সদ্য ঘোষিত উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মীর ওয়ালীদ উদ্দীনসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২৮ মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি প্রচারের কয়েক ঘন্টা পর রাত ৮টার দিকে উপজেলা সদরের কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে স্থানীয় বিএনপি’র দায়িত্বশীলরা বলছেন এটা ন্যায় বিচারের নামে প্রহসন। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, এক বছরেরও অধিক সময় পর সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা ছাত্রদল। গত ২৮ মার্চ জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রূবেল চৌধুরী ফুজায়েল ও সদস্য সচিব মহসিন মিয়া হৃদয় স্বাক্ষরিত ওই কমিটিতে মো. জামাল হোসেন লস্করকে আহবায়ক ও মীর ওয়ালীদ উদ্দীনকে (সাক্ষাত) করা হয়েছে সদস্য সচিব। গত এক বছরেরও অধিক সময় ধরে সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি নেই। এক বছর পূর্বে ছাত্রদলের একটি কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। দলীয় গ্রূপিং ও কোন্দলের কারণে ওই কমিটির বিরূদ্ধে নানা অভিযোগ এনে প্রতিবাদে রাজপথে নেমে পড়ে ছাত্রদলের আরেকটি গ্রূপ। এক সময় ছাত্রদলের ওই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরপর মাঝখানে গত এক বছরের মধ্যে আর কমিটি গঠন হয়নি। গত সোমবার ফেসবুকে দেখা যায় দলীয় প্যাডে সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটি। অনুমোদন দিয়েছেন জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক ও সদস্য সচিব। এ কমিটির দায়িত্বশীল পদে আগের দুই গ্রূপের কেউ নেই। এক সময় ছাত্রদলের কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর ও সদস্য সচিব এডভোকেট নুরূজ্জামান লস্কর তপু। তবে কমিটি ঘোষণা ও প্রচারের রাতে ৮টার দিকে পুলিশ এ্যাসল ও হেফাজত তান্ডবের মামলায় অভিযুক্ত থাকায় সদ্য ঘোষিত আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মীর ওয়ালীদ উদ্দিন (৩৩), উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ডি এম দুলালসহ ৪ জনকে শহিদ মিনার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলো- ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. সোহাগ মিয়া ও সেচ্ছাসেবক দলের সাধারন সম্পাদক আল আমীন। প্রসঙ্গত: গত ২৭ মার্চ অরূয়াইল পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে সেখানকার হেফাজতের নেতা কর্মীরা। পরের দিন ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে বিশ্বরোড খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় হামলা চালিয়ে সরকারি গাড়ি, পিকআপ ভ্যানসহ কয়েকটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। থানার অফিস কক্ষ ডাম্পিং ভাংচুর লুটপাট শেষে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ দুই ঘটনায় সরাইল থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এস আই মো. সাইফুল ইসলাম-২ বাদী হয়ে পুলিশ এ্যাসল মামলা ও সার্জেন্ট মাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে হেফাজতের তান্ডবের মামলা করেন। তবে উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব এডভোকেট নুরূজ্জামান লস্কর তপু বলেন, ছাত্রদলের কমিটি হয়েছে। তাই তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে আনন্দ মিছিল করছিল। সেখান থেকে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে। স্বাধীন দেশে কমিটি করে আনন্দও করতে পারবে না? এটা ন্যায় বিচারের নামে প্রহসন ও পুলিশী শাসনের নমুনা। নিরপরাধ ছেলেদেরকে এক বছর পর হেফাজতের মামলার আসামী করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের উপর সাধারণ মানুষের ধারণা পাল্টে যাচ্ছে। সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শেহাবুর রহমান বলেন, ডিএম দুলাল পুলিশ এ্যাসল মামলার আসামী। ওয়ালীদসহ ছাত্রদলের ৩ নেতা হেফাজত তান্ডবের মামলার সন্ধিগ্ধ তদন্তে প্রাপ্ত আসামী। তাদেরকে আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মাহবুব খান বাবুল