স্থানীয় হাইওয়ে পুলিশের উদ্যোগে সরাইলে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের বিশ্বরোড মোড়ের উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজালাল আলম ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. আনোয়ার হোসেন। উচ্ছেদ চলাকালে ৫-৬ জনের দখলদার চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরাও পাশে অবস্থান করছিলেন। তবে জনৈক যুবলীগ নেতার দখলে থাকা মোড়ের পূর্ব পাশের সিএনজি ষ্ট্যান্ডটিতে গড়ে ওঠা বাজারটি এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে।
হাইওয়ে পুলিশ, একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি ও স্থানীয়রা জানায়, ৫-৬ জনের একটি চক্র বিশ্বরোড মোড়ে মহাসড়কের পাশের সওজের জায়গা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দখল করে জামানত ও দৈনিক ভাড়া আদায়ের ব্যবসা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে নিয়মিত মহাসড়কে যানজট লেগেই আছে। গিজাগিজির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোকে ভর করে মাদক সহ নানা অসামাজিক কর্মকান্ডও চলছে। দখলকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সড়কের উপরই বড় ধরণের সংঘর্ষেল ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই। গত ৩-৪ বছরে ৫-৬ বার উচ্ছেদ করা হয়েছে। দখলদার বাহিনী এতই শক্তিশালী উচ্ছেদের ৩-৪ মাস পরই আবার দখল করে নেয়। দখলদার সিন্ডিকেটের সদস্যরা নিয়মিত গরীব অসহায় লোকদের শোষন করছে। জায়গা সওজের। আর ২০-৩০ হাজার টাকা জামানত নিয়ে অস্থায়ী দোকান করার সুযোগ দেয়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রত্যেক দোকান থেকে ২০০-৪০০ পর্যন্ত টাকা আদায় করে থাকে তারা। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্যের ভাগে কমপক্ষে ২০-৩০ টি দোকান রয়েছে। মাসে কামাই করছে দেড়/দুই লাখ টাকা করে। তাই উচ্ছেদের কথা শুনলেই মাথা খারাপ হয়ে যায় দখলদার বাহিনীর। গত ৪ ফেব্রূয়ারি শুক্রবার মহাসড়কের পাশের ওই স্থাপনা গুলো পরিদর্শন করে গেছেন হাইওয়ে পুলিশ সিলেট অঞ্চলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মাসুদ করিম। তিনি দ্রূত তাদের উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়ে যান। এরপর থেকেই হাইওয়ে থানা কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদাররা নিজে থেকে মালামাল নিয়ে সরে যেতে একাধিকবার মাইকিং করেছেন। মৌখিক নির্দেশও দিয়েছেন। অধিকাংশ স্থাপনা সরিয়ে ফেললেও অনেকেই থেকে যায়। নোটিশে সরে যাওয়ার সর্বশেষ তারিখ ছিল ১০ ফেব্রূয়ারি বৃহস্পতিবার। সময় শেষ। তাই গতকাল সরজমিনে সড়কে অভিযান চালিয়ে অবশিষ্ট অবৈধ স্থাপনা গুলো উচ্ছেদ করেছেন খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশ। বদলে গেছে সড়কের চিত্র। তবে মোড়ের পূর্ব পাশে সওজের জায়গায় মহাসড়কের পাশের সিএনজি ষ্ট্যান্ডটি এখনো দখলমুক্ত হয়নি। ওই সড়কটি রয়েছে জনৈক যুবলীগ নেতা দখলে। দোকান বসিয়ে দৈনিক ৩-৪ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছেন। আর সিএনজি গুলো দাঁড়িয়ে থাকে মহাসড়কের উপরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি বলেন, জায়গা সরকারের আর জামানত নেন উনারা। ঘর উঠাতে হয় আমাদের টাকায়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় টাকা নেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। না দিলে মারধরের হুমকিও দেন। করোনার সময়ও উনারা আমাদের করূনা করেননি। খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজালাল আলম বলেন, মহাসড়কের পাশে কোন অবৈধ স্থাপনা থাকবে না। বিশ্বরোড মোড়ের পূর্ব পাশের সিএনজি ষ্ট্যান্ডটিও উদ্ধার করা হবে। সড়ক যানজটমুক্ত করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মাহবুব খান বাবুল