সরাইলে সচিবের বিরূদ্ধে চেয়ারম্যানের লিখিত অভিযোগ শোকজ করেছেন জেলা প্রশাসক!

- আপডেট সময় : ১০:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ অগাস্ট ২০২২ ৫৬৪ বার পড়া হয়েছে
সরাইল সদর ইউনিয়নের সচিব রূবেল ভূঁইয়া। এখানে যোগদান করেছেন এ বছরের ৮ মে। শুরূ থেকেই দায়িত্ব পালনে অনীহা। আনমনা ঘাছাড়া ভাব। মন চায় না। না পেরে যেন ইচ্ছার বিরূদ্ধে অফিসে আসা। সুবিধা ভোগীদের সাথে দূর্ব্যবহার ও কাজে দীর্ঘ সূত্রিতা নিত্যদিনের বিষয়। সকাল ৯টা থেকে লোকজনের অপেক্ষা। ১২টা, ১টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর চিৎকার চেচামেচি করে চলে যান লোকজন। তার দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকান্ড ও হয়রানিতে চরমভাবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় লোকজন। দৈনিক স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন চেয়ারম্যান। অবশেষে গত ২৫ জুলাই ১৪৬৯ নং স্মারকে রূবেলের অনিয়ম অবহেলা তুলে ধরে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান মো: আব্দুল জব্বার। ইতিমধ্যে আজ রবিবার তাকে শোকজ করেছেন জেলা প্রশাসক। এর আগে শোকজ করেছিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল। লিখিত অভিযোগপত্র ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রূবেলকে কসবার মূলগ্রাম ইউনিয়ন থেকে গত ২৫ এপ্রিল ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ তারিখের এক আদেশে সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদে বদলী করা হয়। ৮ মে তিনি যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই এখানের কর্মক্ষেত্রে উনার অনীহা। একদিন আসলে ৪ দিন আসেন না। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে কর্মক্ষেত্রে তার অনুপস্থিতি। চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ভুক্তভোগিদের চাপাচাপিতে মাঝে মধ্যে তিনি আসেন। তাও আবার ১২ টা/ ১টায় এসে তড়িঘড়ি করে চলে যান। জন্ম নিবন্ধন, ট্রেডলাইসেন্স সহ বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ কাজ ঘুরতে থাকেন শতশত মানুষ। অনেকে কাজ দিয়ে সপ্তাহ, ১০ দিন ও ১৫ দিন ধরে ঘুরছেন। সচিবকেই খুঁজে না পেয়ে ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন। মনের দু:খে সরকারের উপর চড়াও হচ্ছেন। সব মিলিয়ে স্থানীয় লোকজন রূবেলের দায়িত্বে অবহেলার শিকার হয়ে যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। ভুক্তভোগী সরাইল ত্রিতাল সঙ্গীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আইয়ুব খান, ব্যবসায়ি মোহাম্মদ আলী ও মো. ফারূক মিয়া সহ অনেকেই বলেন, সচিব রূবেল অফিসে আসেন না। আমরা কাজ নিয়ে আটকে গেছি। তার দেয়া দূর্ভোগ ও কষ্টে হাবুডুবু খাচ্ছি। সুবিধা ভোগিদের জন্য এখন সে বোঝা। আমরা সরাইল থেকে সচিব রূবেলের অপসারণ চাই। সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, বিলম্বে অফিসে আসার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় রূবেলকে শাসিয়েছেন। তারপরও সংশোধন হননি রূবেল। তার অনিয়মিত অফিসে হাজিরা। কর্মক্ষেত্রে অবহেলা জন্মনিবন্ধন নিয়ে জনগণকে হয়রানি। এসব কারণে পরিষদের নিয়মিত কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। তাই আমি দ্রূত রূবেলের বদলী চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, দায়িত্ব পালনে অবহেলা সহ তার সকল অনিয়মের কারণে আজ জেলা প্রশাসক মহোদয় শোকজ করেছেন। এর আগে আমি শোকজ করেছি। এরপর তার বিরূদ্ধে বিভাগীয় ভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত ইউপি সচিব রূবেল ভূঁইয়া বিলম্বে আসা, অফিসে নিয়মিত না আসতে পারা ও জেলা প্রশাসক কর্তৃক তাকে শোকজের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অনাকাঙ্খিত ও নানাবিধ সমস্যার কারণে এমনটি হচ্ছে। ১১টা-১২টায় অফিসে গেলেও সরাইলের লোকজন ক্ষেপে যায়। বদলী হওয়ার কোন ইচ্ছা আমার নেই। খুবই সমস্যায় আছি।
মাহবুব খান বাবুল