শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট, এসিল্যান্ডকে অব্যাহতি

- আপডেট সময় : ০২:৩৯:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫ ১০১ বার পড়া হয়েছে
ফেসবুকে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে পোস্ট দেয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা কায়ছানকে প্রাথমিকভাবে দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তার এই পোস্ট দেওয়ার পর সরাইলজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে তার দাবি ফেসবুক হ্যাক করে পোস্টটি দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে এই পোস্ট দেওয়া হয়।
অফিসিয়াল ফেসবুকে এসিল্যান্ডের লিখা পোস্টটি ছিল…..
‘পৃথিবীর বুকে বাংলার নাম আজ উজ্জ্বল, লড়াইয়ের ইতিহাসে লেখা হলো অনন্য মহিমা, সেখানে বীরত্বের গান বাজে নিঃশব্দে, শাসকগোষ্ঠীর শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির সীমানা।’
‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম গণহত্যা চালায়। সেদিন রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন-বাংলাদেশ স্বাধীন! এরপর শুরু হয় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়, কিন্তু এর ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ২৬শে মার্চেই। তাই এই দিনটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, সংগ্রামের চেতনা এবং আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল।’
‘আমাদের স্বপ্ন-একটি দুর্নীতিমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর, উন্নত বাংলাদেশ। যেখানে সব নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে, শিক্ষার মান আরও উন্নত হবে, অর্থনীতি হবে স্বনির্ভর এবং সর্বোপরি-গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার থাকবে সুসংহত।’
‘অর্জিত স্বাধীনতা কেবল একটি ঘটনা নয়, জীবনধারার প্রাত্যহিকতায় মুক্তির আবেশ দায়িত্ব এদেশের প্রতিটি সন্তানের কাঁধে, আগামী দিনে গড়তে হবে সোনার বাংলাদেশ।
মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা…
পোস্টটি মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পরই সরাইল উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানান এবং এসিল্যান্ডের অপসারণ দাবি করেন। এই ঘটনার পর সরাইল অন্নদা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে গেলে সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। এরপর তিনি মাঠ থেকে ফিরে যান। এর প্রায় পৌনে একঘণ্টা পর সেই পোস্ট মুছে ফেলা হয়। পরে আরেকটি পোস্ট করা এতে প্রথম পোস্টটি ফেসবুক হ্যাক করে করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, সরাইলের এসিল্যান্ড ফ্যাসিবাদের দোসর। তার এই নাটকে কাজ হবে না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তবে এ ঘটনাকে নাটক দাবি করে সরাইল উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা এসিল্যান্ডের অপসারণ দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে সরাইল কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা কায়ছানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এসিল্যান্ড দাবি করেছেন লেখাটি তিনি লিখেননি। এ আইডির পাসওয়ার্ড অনেকের কাছে ছিল। জেলা প্রশাসক মহোদয় বলেছেন তাকে আপাতত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ছুটিতে পাঠাতে। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’