ঢাকা ০৮:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ইফতার  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীর মেয়াদ পুর্তির চেক প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, চারটি ইউনিট সিলগালা অপসংবাদিকতা রোধে ও অপসংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান বিজয়নগরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে মানববন্ধন অপসাংবাদিকতা রোধে সকলকে সোচ্চার থাকার আহবান জানিয়েছে বিটিজেএ এআরডি’র উদ্যেগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক গ্রেপ্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রয়াত সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন জামির ২য় মৃত্যু বার্ষিকী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৫১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মে ২০২৩ ১১৬ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন অধ্যক্ষ মুস্তাব আলীর স্ত্রী নাটোর উপজেলা সদরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা মোছাম্মদ বিলকিস খাতুন (৫০), অধ্যক্ষের ছেলে আহম্মেদ ওয়াজিহ ওয়াসিক (২৭) ও নাটোরের পাইপাকপাড়ার পাওনাদার অধ্যক্ষের চাচাতো ভাই রায়েজুল ইসলাম ওরফে রাজু (৫৫)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়।

জানা গেছে, গত ১০ মে সকাল নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরার ২ নম্বর লোকেশনের আবাসিক এলাকায় থেকে অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। শৌচাগারের ভেতরে গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। তিনি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তার বাড়ি নাটোরে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দেড় থেকে দুই বছর আগে রায়েজুলের কাছ থেকে সুদের উপর ছয় লাখ টাকা ঋণ করেন অধ্যক্ষ মোস্তাব আলী। সুদের কিস্তির টাকা নেওয়ার জন্য রায়েজুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষের কাছে আসা-যাওয়া করত। সুদের কিস্তি দিতে দেরি হলে তিনি অধ্যক্ষকে মানসিকভাবে অপমান অপদস্থ করতেন। অপরদিকে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে অধক্ষের পারিবারিক কলহ হত। তারা বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ দিয়ে নাজেহাল করাসহ আত্মহত্যা করার জন্য অধ্যক্ষকে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতন। স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক কথাবার্তায় তিনি প্রায় সময় বাসায় সকালের নাস্তা ও অনেক সময় দুপুরের খাবার খেত না। অধ্যক্ষ ঋণগ্রস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর স্ত্রী-সন্তান বিলাসিতার জীবন যাপন করত। অধ্যক্ষের ছেলে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করত। টাকার জন্য প্রায় অধ্যক্ষকে চাপ সৃষ্টি করত ছেলে। প্রতিবাদ করলেই স্ত্রী-সন্তানের লাঞ্ছনার শিকার হতেন তিনি। তারা প্রায়ই অধ্যক্ষকে বিষ খেয়ে বা ফাঁসি দিয়ে মরে যেতে বলতেন। গত ১০ মে সকালে অধ্যক্ষের কর্মস্থলে পৌঁছে মুঠোফোনে সুদের টাকা চান রায়েজুল। এতে মানসিকভাবে উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েন অধ্যক্ষ। সেসময় স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক ও অশোভন আচরণে এবং সুদের টাকাকে কেন্দ্র করে পাওনাদারের কটুক্তিসহ অপমানজনক কথাবার্তায় লজ্জা ও ঘৃণায় অধ্যক্ষ শৌচাগারের ঝর্ণার পাইপের সঙ্গে গলায় পায়জামার রশি (নিয়ার) পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

অধ্যক্ষের ভাতিজা আসিফ বিন আলী বলেন, ‘চাচা কলেজের অধ্যক্ষ থাকলেও পারিবারিকভাবে ভালো ছিলেন না। ঋণে জর্জরিত ছিলেন। কলেজের বেতনের সবটা দিয়ে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতেন।’

মামলার বাদী অধ্যক্ষের ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ভাই আত্মহত্যা করার মতো মানুষ ছিলেন না। তাঁর মৃত্যুর পেছনের কারণ উদ্‌ঘাটন করার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ রইল। স্ত্রী-সন্তান তাঁকে (মোস্তাব আলী) মানসিক নির্যাতন করতেন। স্ত্রী-সন্তান ও পাওনাদার তাঁর ভাইকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছেন।

আজ রোববার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষের মৃত্যুর বিষয়ে তাঁর বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে ছেলে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

আপডেট সময় : ০৮:৫১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মে ২০২৩

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিহতের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলেন অধ্যক্ষ মুস্তাব আলীর স্ত্রী নাটোর উপজেলা সদরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা মোছাম্মদ বিলকিস খাতুন (৫০), অধ্যক্ষের ছেলে আহম্মেদ ওয়াজিহ ওয়াসিক (২৭) ও নাটোরের পাইপাকপাড়ার পাওনাদার অধ্যক্ষের চাচাতো ভাই রায়েজুল ইসলাম ওরফে রাজু (৫৫)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়।

জানা গেছে, গত ১০ মে সকাল নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরার ২ নম্বর লোকেশনের আবাসিক এলাকায় থেকে অধ্যক্ষ মোস্তাব আলীর লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। শৌচাগারের ভেতরে গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। তিনি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তার বাড়ি নাটোরে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দেড় থেকে দুই বছর আগে রায়েজুলের কাছ থেকে সুদের উপর ছয় লাখ টাকা ঋণ করেন অধ্যক্ষ মোস্তাব আলী। সুদের কিস্তির টাকা নেওয়ার জন্য রায়েজুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অধ্যক্ষের কাছে আসা-যাওয়া করত। সুদের কিস্তি দিতে দেরি হলে তিনি অধ্যক্ষকে মানসিকভাবে অপমান অপদস্থ করতেন। অপরদিকে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে অধক্ষের পারিবারিক কলহ হত। তারা বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ দিয়ে নাজেহাল করাসহ আত্মহত্যা করার জন্য অধ্যক্ষকে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলতন। স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক কথাবার্তায় তিনি প্রায় সময় বাসায় সকালের নাস্তা ও অনেক সময় দুপুরের খাবার খেত না। অধ্যক্ষ ঋণগ্রস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাঁর স্ত্রী-সন্তান বিলাসিতার জীবন যাপন করত। অধ্যক্ষের ছেলে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করত। টাকার জন্য প্রায় অধ্যক্ষকে চাপ সৃষ্টি করত ছেলে। প্রতিবাদ করলেই স্ত্রী-সন্তানের লাঞ্ছনার শিকার হতেন তিনি। তারা প্রায়ই অধ্যক্ষকে বিষ খেয়ে বা ফাঁসি দিয়ে মরে যেতে বলতেন। গত ১০ মে সকালে অধ্যক্ষের কর্মস্থলে পৌঁছে মুঠোফোনে সুদের টাকা চান রায়েজুল। এতে মানসিকভাবে উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েন অধ্যক্ষ। সেসময় স্ত্রী-সন্তানের অপমানজনক ও অশোভন আচরণে এবং সুদের টাকাকে কেন্দ্র করে পাওনাদারের কটুক্তিসহ অপমানজনক কথাবার্তায় লজ্জা ও ঘৃণায় অধ্যক্ষ শৌচাগারের ঝর্ণার পাইপের সঙ্গে গলায় পায়জামার রশি (নিয়ার) পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

অধ্যক্ষের ভাতিজা আসিফ বিন আলী বলেন, ‘চাচা কলেজের অধ্যক্ষ থাকলেও পারিবারিকভাবে ভালো ছিলেন না। ঋণে জর্জরিত ছিলেন। কলেজের বেতনের সবটা দিয়ে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতেন।’

মামলার বাদী অধ্যক্ষের ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ভাই আত্মহত্যা করার মতো মানুষ ছিলেন না। তাঁর মৃত্যুর পেছনের কারণ উদ্‌ঘাটন করার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ রইল। স্ত্রী-সন্তান তাঁকে (মোস্তাব আলী) মানসিক নির্যাতন করতেন। স্ত্রী-সন্তান ও পাওনাদার তাঁর ভাইকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছেন।

আজ রোববার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, অধ্যক্ষের মৃত্যুর বিষয়ে তাঁর বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে ছেলে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।