Dhaka ১২:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
News Title :
সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩ সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘এক্স স্কাউট রি-ইউনিয়ন’ আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২৪ সরাইলে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা সরাইলে ২৩ রোগী পেল ১৮৪০০০ টাকা বাবার সেই চিঠি শুধুই মনে —–আল আমীন শাহীন জমে ওঠেছে সরাইলের ঈদ বাজার‘আলিয়া’ নিয়ে টানাটানি সরাইলে ১৪ কেজি গাঁজাসহ ২ কারবারী গ্রেপ্তার ব্রাহ্মণবাড়ি়য়া জেলা কাজী সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

বিএডিসি’র ওয়াটার পাস স্ট্রাকচার নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ “কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ”

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০২২
  • ২৭৯ Time View

মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:

কোন ধরণের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই অনুমোদিত স্থান থেকে ৪শত মিটার দূরে শুধু একটি পরিবারকে সুবিধা দিতে বসত ঘরের সামনে নির্মাণ করা হচ্ছে বিএডিসি’র ওয়াটার পাস স্ট্রাকচার (কালভার্ট)। বিধি ভঙ্গ করে কাজ করছেন সাব-কন্টাক্টার। অভিযোগ ওঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মোটা অংকের মাসোয়ারার বিনিময়ে সহস্রাধিক কৃষকের সেচের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছেন। কাজের ফলকটি লাগানোর পর বেরিয়ে আসে দূর্নীতির থলের বিড়াল। ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন সেখানকার সহস্রাধিক কৃষক। ইউএনও’র নির্দেশে স্থানীয় ভূমি অফিসের লোকজনের বাঁধাও আমলে নেননি বিএডিসি ও ঠিকাদার। সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের বারইজীবি পাড়া এলাকার প্রবাসী আবুল হোসেনের বাড়ির পেছনের সরকারি খালের উপর চলছে নির্মাণ কাজ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এই দূর্নীতির প্রতিকার চেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন দুই ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় ৬০ জন কৃষক। প্রকৌশলীর মৌখিক নিষেধাজ্ঞার পরও গতকাল শুক্রবারেও দেখা গেছে নির্মাণ কাজ চলছে। বঞ্চিত কৃষকদের জিজ্ঞাসা এই দূর্নীতিবাজদের খুঁটির জোর কোথায়? অভিযোগপত্র ও সরজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় কৃষকদের চেষ্টায় কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকরা সেচ সুবিধার জন্য বারূইজীবিপাড়া গ্রামের মন্নর সর্দারের পুকুরের পূর্ব কোণায় সরকারি খালের উপর একটি ওয়াটার পাস স্ট্রাকচার (কালভার্ট) নির্মাণ মঞ্জুর করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। কালভার্টটি নির্মাণ হলে এখানকার গোটা গ্রামের পানি নিস্কাশনে সুবিধা হবে। সেই সাথে সহস্রাধিক লোকের যাতায়ত ও ধান চাষের জন্য পানি সেচের সুবিধাও বাড়বে। কালভার্ট নির্মাণের কাজটি পায় মেসার্স ইফা ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি স্থানীয় জনৈক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। বিএডিসি’র স্থানীয় প্রকৌশলী ও ঠিকাদারে যোগসাজসে কয়েকশত পরিবারের কৃষকদের বঞ্চিত করে অনুমোদিত স্থান থেকে চারশত মিটার দূরে শুধু এক পরিবারের সুবিধার জন্য সরকারি খাল ভরাট করে কালভার্ট নির্মাণ করছেন। প্রথমে বুঝতে না পারলেও কাজের সরকারি ফলকটি লাগানোর পর সব অনিয়ম ধরা পড়ে যায়। টাকার বিনিময়ে এক জায়গার কালভার্ট আরেক জায়গায় নির্মাণ করছেন। ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন ওই গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক। কৃষকদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেললেন বিএডিসি? আর যাব কোথায়? প্রকৃত স্থান কার নির্দেশে স্থানান্তরিত করেছেন? কৃষকদের এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি বিএডিসি। কৃষক নবী হোসেন (৬০), মো. দরবেশ আলী (৪০) সহ অনেকেই বলেন, শতশত কৃষকের ক্ষতি করে এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনে কালভার্ট নির্মাণের কারণ কি? প্রভাবশালীদের তদবিরে এক জায়গার কালভার্ট অন্য জায়গায় লাভ ছাড়া করেননি। ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েদ হোসেন বলেন, এইটা বিএডিসি’র প্রকল্প। তারা যেখানে ভাল মনে করে সেখানে দেয়। আবুল হোসেন বলেন, উপজেলায় দরখাস্ত দিয়ে অনুমোদন এনেছি। ঠিকাদার শ্রমিকদের আমার বাড়িতে ৫-৬ দিন রেখে কাজ করেছেন। আর মাটি ভরাটের কাজটি আমি করাইতেছি। বিএডিসি সরাইলের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আলী আশরাফ বারূইজীবি পাড়ার আবুল হোসেনের বাড়ির পেছনে ময়লাযুক্ত খালে কালভার্ট নির্মাাণের কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগকারীরা যেখানের কথা বলছেন। সেখানে প্রয়োজন নেই। কালভার্টটি ভেঙ্গে ফেলতে আমি আবুল হোসেনকে নোটিশ দিয়েছি। এটা হবে না। আর তাদের ওইখানে আগামী এক/দেড় মাসের মধ্যে করে দিব। এটি খুব গুরূত্বপূর্ণ বিষয় না। সেখানকার ২/১ জন সাংবাদিক একটু বাড়াবাড়ি করছেন। ফেসবুকে আরো কোথায় লেখালেখি করছেন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল লিখিত অভিযোগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নিব। বিএডিসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, এই কাজ গুলো ছোট। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরামর্শেই এই গুলো হয়ে থাকে। পরিবর্তন করা ঠিক না। আমি খুঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩

বিএডিসি’র ওয়াটার পাস স্ট্রাকচার নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ “কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ”

Update Time : ০২:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০২২

মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:

কোন ধরণের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই অনুমোদিত স্থান থেকে ৪শত মিটার দূরে শুধু একটি পরিবারকে সুবিধা দিতে বসত ঘরের সামনে নির্মাণ করা হচ্ছে বিএডিসি’র ওয়াটার পাস স্ট্রাকচার (কালভার্ট)। বিধি ভঙ্গ করে কাজ করছেন সাব-কন্টাক্টার। অভিযোগ ওঠেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মোটা অংকের মাসোয়ারার বিনিময়ে সহস্রাধিক কৃষকের সেচের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছেন। কাজের ফলকটি লাগানোর পর বেরিয়ে আসে দূর্নীতির থলের বিড়াল। ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন সেখানকার সহস্রাধিক কৃষক। ইউএনও’র নির্দেশে স্থানীয় ভূমি অফিসের লোকজনের বাঁধাও আমলে নেননি বিএডিসি ও ঠিকাদার। সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের বারইজীবি পাড়া এলাকার প্রবাসী আবুল হোসেনের বাড়ির পেছনের সরকারি খালের উপর চলছে নির্মাণ কাজ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এই দূর্নীতির প্রতিকার চেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন দুই ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় ৬০ জন কৃষক। প্রকৌশলীর মৌখিক নিষেধাজ্ঞার পরও গতকাল শুক্রবারেও দেখা গেছে নির্মাণ কাজ চলছে। বঞ্চিত কৃষকদের জিজ্ঞাসা এই দূর্নীতিবাজদের খুঁটির জোর কোথায়? অভিযোগপত্র ও সরজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় কৃষকদের চেষ্টায় কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকরা সেচ সুবিধার জন্য বারূইজীবিপাড়া গ্রামের মন্নর সর্দারের পুকুরের পূর্ব কোণায় সরকারি খালের উপর একটি ওয়াটার পাস স্ট্রাকচার (কালভার্ট) নির্মাণ মঞ্জুর করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। কালভার্টটি নির্মাণ হলে এখানকার গোটা গ্রামের পানি নিস্কাশনে সুবিধা হবে। সেই সাথে সহস্রাধিক লোকের যাতায়ত ও ধান চাষের জন্য পানি সেচের সুবিধাও বাড়বে। কালভার্ট নির্মাণের কাজটি পায় মেসার্স ইফা ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি স্থানীয় জনৈক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। বিএডিসি’র স্থানীয় প্রকৌশলী ও ঠিকাদারে যোগসাজসে কয়েকশত পরিবারের কৃষকদের বঞ্চিত করে অনুমোদিত স্থান থেকে চারশত মিটার দূরে শুধু এক পরিবারের সুবিধার জন্য সরকারি খাল ভরাট করে কালভার্ট নির্মাণ করছেন। প্রথমে বুঝতে না পারলেও কাজের সরকারি ফলকটি লাগানোর পর সব অনিয়ম ধরা পড়ে যায়। টাকার বিনিময়ে এক জায়গার কালভার্ট আরেক জায়গায় নির্মাণ করছেন। ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন ওই গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক। কৃষকদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেললেন বিএডিসি? আর যাব কোথায়? প্রকৃত স্থান কার নির্দেশে স্থানান্তরিত করেছেন? কৃষকদের এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি বিএডিসি। কৃষক নবী হোসেন (৬০), মো. দরবেশ আলী (৪০) সহ অনেকেই বলেন, শতশত কৃষকের ক্ষতি করে এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনে কালভার্ট নির্মাণের কারণ কি? প্রভাবশালীদের তদবিরে এক জায়গার কালভার্ট অন্য জায়গায় লাভ ছাড়া করেননি। ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েদ হোসেন বলেন, এইটা বিএডিসি’র প্রকল্প। তারা যেখানে ভাল মনে করে সেখানে দেয়। আবুল হোসেন বলেন, উপজেলায় দরখাস্ত দিয়ে অনুমোদন এনেছি। ঠিকাদার শ্রমিকদের আমার বাড়িতে ৫-৬ দিন রেখে কাজ করেছেন। আর মাটি ভরাটের কাজটি আমি করাইতেছি। বিএডিসি সরাইলের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আলী আশরাফ বারূইজীবি পাড়ার আবুল হোসেনের বাড়ির পেছনে ময়লাযুক্ত খালে কালভার্ট নির্মাাণের কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগকারীরা যেখানের কথা বলছেন। সেখানে প্রয়োজন নেই। কালভার্টটি ভেঙ্গে ফেলতে আমি আবুল হোসেনকে নোটিশ দিয়েছি। এটা হবে না। আর তাদের ওইখানে আগামী এক/দেড় মাসের মধ্যে করে দিব। এটি খুব গুরূত্বপূর্ণ বিষয় না। সেখানকার ২/১ জন সাংবাদিক একটু বাড়াবাড়ি করছেন। ফেসবুকে আরো কোথায় লেখালেখি করছেন। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল লিখিত অভিযোগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নিব। বিএডিসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, এই কাজ গুলো ছোট। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরামর্শেই এই গুলো হয়ে থাকে। পরিবর্তন করা ঠিক না। আমি খুঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখব।