ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়া এলাকায় মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকার মৃত রফিকের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় (২৭) দীর্ঘ তিন বছর যাবৎ মাদক ব্যবসা করে আসছে। তার গডফাদার হলো সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজীপাড়ার মেহেদী হাসান লেনিন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকায় ইমরান নামে এক মাদক ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছিলো। তখন ওই এলাকার ইলিয়াস চৌধুরী, যুব পঞ্চায়েত কমিটির সেক্রেটারি সুমন আহমেদ ও যুব পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মনির হোসেন নামাজে যাওয়ার সময় মাদক বিক্রির ঘটনা দেখতে পেয়ে বাধা দেন। তখন ইমরান ফোন করে অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদের বিষয়টি জানায়। তখন মেহেদী হাসান লেনিন ও হৃদয়সহ ১৫/১৬ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ ইলিয়াসের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। এসময় হৃদয়ের আপন বড় চাচা তাজুল ইসলাম (৬৫) হৃদয়কে বাধা দিতে গেলে লেলিনের নির্দেশে হৃদয় ও তার দলবল এলোপাথাড়ি হামলা চালায়। এসময় হৃদয়ের ঘুষিতে চাচা তাজুল ইসলামের একটি দাত পড়ে যায়, এবং তার আরেক চাচা শফিকুল ইসলাম সহ মাদক বিক্রিতে বাধা দানকারীদেরও পিটিয়ে আহত করে। পরে এলাকার সাধারণ মানুষ এসে তাদের প্রতিহত করেন।
এব্যাপারে মামলার বাদী ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, এলাকার পঞ্চায়েত কমিটি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর-সবাই জানে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মাদক ব্যবসায়ী কারা। থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও আছে। প্রশাসনের কাছে আছে তাঁদের বাসাবাড়ির ঠিকানাও। কিন্তু তাঁরা আছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর এই কারণে এলাকার ছোট ছোট ছেলেরা মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী হয়ে উঠছে। লেলিন এবং রিদয়ের নেতৃত্বে এলাকায় গড়ে উঠেছে ৩০-৩৫ জনের একটি কিশোর গ্যাং। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই হতে হয় আক্রমণের শিকার। গতকালও মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়া মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হয় আমরা। তাই এলাকাবাসীর মতামত এর ভিত্তিতে ৩শতাধিক লোকের গণ স্বাক্ষর নেয়া হয় যা ডিসি এসপি সহ সভার নিকট পাঠানো হবে। তাছাড়া গত রাতেই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রায় দুই শতাধিক এলাকাবাসী মিছিল সহ থানায় গিয়ে অভিযোগ জমা দিয়ে এসেছি। আমরা মাদক মুক্ত এলাকা চায়।
জানতে চাইলে ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম এ মালেক চৌধুরী বলেন, মধ্যপাড়া গত কয়েক বছর যাবত মাদকের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। গতবছরও মাদক নিয়ে কথা বলায় আমাদের এলাকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা ব্রাদার্স ক্লাবে হামলার শিকার হয়। এবার আক্রমনের শিকার হয়েছে এলাকার পঞ্চায়েত কমিটি সহ মুরুব্বিরা। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দিলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
এবিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি ইমরানুল ইসলাম জানান, এটা তাদের নিজেদের মধ্য ঘটনা। হ্যা, এখানে মাদকের সংশ্লিষ্টতাও আছে। থানায় মামলা করা হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছেনা যাদেরকে সবাই চিনে এবং জানে? এমন প্রশ্ন করা হলে ওসি বলেন, কারো সাথে মাদক না পেলে তাকে আটক করা যায়না। আপনারা সবাই মিলে সহযোগীতা করলে অবশ্যয় মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে পারবো।
এনই আকন্ঞ্জি