চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে সাংবাদিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গতকাল দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (প্রথম আদালত) আসমা জাহান নিপা-এর আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আনারকলি। মামলার আইনজীবী মো. সাইফুল ইসলাম (১) জানান, আদালত মামলাটি তদন্তের জন্যে আশুগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিরা হচ্ছেন আশুগঞ্জের চরচারতলার টেকপাড়ার ম সাদেকুল ইসলাম সাচ্চু (৪০), কেচকিবাড়ির নূরুল্লাহ (৩৫), মাহবুব, সালমান (২৫), যাত্রাপুর গ্রামের হাসান জাবেদ (৩০) ও সময় টিভির সাংবাদিক উজ্জ্বল কুমার চক্রবর্তী (৪২)। মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত ১৪ই মে ঘটনাস্থলে এসে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়। এ সময় তুই-তুকারি করে ধমকানোর প্রতিবাদ করলে বাদী আনারকলিকে আসামিরা শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। সাক্ষীরা তাকে রক্ষা করে। ওই সময় সেখানে নির্মিত একটি টিনের ঘর ভেঙে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে আসামিরা। চাঁদা না পেয়ে আসামি সাদেকুল ইসলাম সাচ্চু ও হাসান জাবেদ তাদের ফেসবুক আইডিতে আপত্তিকর পোস্ট দেয়। আপত্তিকর এসব পোস্টে বাদীর পিত্রালয় অর্থাৎ কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের বিশিষ্ট নাগরিক মহামান্য রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আবদুল হামিদ এবং সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশের ডিআইজি হারুনুর রশিদের সঙ্গে থাকা বাদীর ছবি তার ফেসবুক আইডি থেকে নিয়ে ব্যবহার করে। চাঁদার দাবি পূরণ না হওয়ায় পরবর্তীতে গত ১৯শে মে সাংবাদিক উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাঁদাবাজি ও দখলবাজির মিথ্যা অভিযোগ এনে বাদী ও তার দলের সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে। বাদী আনারকলি বলেন- চাঁদাবাজ, টিভি সাংবাদিককে এই অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। কোথায় চাঁদাবাজি করেছি সেটি জানাতে হবে কয়টি চাঁদাবাজির মামলা আছে তা বের করে দিতে হবে। বৈধভাবে রেলওয়ের ভূমি বন্দোবস্ত এনেছি। সে এই কাগজপত্র না দেখে চাঁদা না পাওয়ার ক্ষোভে যা খুশি রিপোর্ট বানিয়েছে এবং প্রচার করেছে। জীবন বিপন্ন করার জন্যে এই রিপোর্ট করা হয়েছে। আমার অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিচার দাবি করছি। এজাহারে উল্লেখ করা হয় বাদীনির পিতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পিতাসহ ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে তার পরিবারে। ছেলে ও ভাতিজাদের মুক্তিযুদ্ধে পাঠানোর কারণে ১৯৭১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর তার দাদা আমির হোসেন ভূঁইয়াকে রাজাকাররা বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। পাকবাহিনী নৌকায় তাকে গুলি করে হত্যার পর রাজাকাররা আমির হোসেনের মরদেহ কুচিকুচি করে পানিতে ভাসিয়ে দেয়। মুক্তিযুদ্ধে পরিবারটির এই অবদানের জন্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান তার নিজের স্বাক্ষরিত দুটি চেক ও সমবেদনাপত্র দেন শহীদের পরিবারকে।
এনই আকঞ্জি