সরাইলে সংবাদ সম্মেলন” অর্থের বিনিময়ে মনগড়া কমিটি বাতিলের দাবী

- আপডেট সময় : ০৯:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ জুলাই ২০২২ ৩০৮ বার পড়া হয়েছে
দলের সভাপতিকে কিছু না জানিয়ে অর্থের বিনিময়ে স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সদস্যকে সভাপতি এবং বিএনপির নেতাকে সাধারণ সম্পাদক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়ন শাখা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণার অভিযোগ ওঠেছে। দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশের কথা বলে তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে মনগড়া কমিটি বাতিলের দাবীও জানিয়েছেন খোদ ওই ইউপি আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন। আজ রবিবার দুপুরে সরাইল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবী করেন তিনি। দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাতে ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে হাবিবুর রহমানকে সভাপতি এবং আবুল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের আংশিক একটি কমিটি ঘোষণা করে আ.লীগের জেলা ও উপজেলা কমিটি। লিখিত বক্তব্যে আমির হোসেন বলেন,‘ ১৯৭১ সালে আমি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণের অপরাধে যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামি এমদাদুল হক ওরফে টাক্কাবালীর (প্রেপ্তার ও পরে জেলহাজতে মৃত্যু) প্রধান সহযোগী আবদুর রহমানের নেতৃত্বে আমার বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে। হাবিবুর রহমান ওই আবদুর রাহমানের ছেলে। আর যাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। এ ছাড়া তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, আমি চুন্টা ইউনিয়ন আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। আমি অসুস’্য হয়ে হাসপাতাল গেলে সুযোগ কাজে লাগায় একটি গ্রূপ। আমাকে না জানিয়ে তারা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে অর্থের বিনিময়ে আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছেন। আমাকে অপমান করা হয়েছে। আমি এ অবৈধ কমিটি মানি না। অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে নতুন করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপসি’ত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইসমত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা করম আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী, চুন্টা ইউপি আ.লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী লায়ন মাসুদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ফারুক হোসেন, আবদুর রজ্জাক প্রমুখ। মো. মাসুদুর রহমান ও মো. ফারূক হোসেন বলেন, সম্মেলনের পূর্ব থেকেই আমাদেরকে প্যান্ডেলের কাছে না যাওয়ার হুমকি দেয়। কৌশলে প্রার্থী না হতে চাপ সৃষ্টি করেন। দীর্ঘ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দায়িত্বশীল পদে থাকা দলের ত্যাগী পরীক্ষীত নেতা মনিরূল ইসলামকে প্যান্ডেলের কাছে যেতে দেয়নি। উপজেলার জনৈক নেতা ফারূককে উনার বাসায় নিয়ে কালামের পাশাপাশি তাকেও প্রার্থী হতে বলেন। সরকারি চাকরির কারণে কালাম বাতিল হলে যেন ফারূক থাকেন। এত ত্যাগী নেতা রেখেও বিএনপি পরিবারের সদস্য আবুল হোসেনকে কেন পদ দিলেন বুঝলাম না। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী বলেন, কমিটি গঠনে সরাইল আ’লীগ জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অবমূল্যায়ন করছেন। মুক্তিযোদ্ধা পদ না পেলেও চুন্টা, শাহবাজপুর, শাহজাদাপুর ইউনিয়নে রাজাকারের উত্তরসূরিদের পদ দিচ্ছেন। আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা এখানকার আওয়ামী লীগকে ডুবানোর একটা গভীর নীল নকশা ও চক্রান্ত। ইউপি কমিটির পদের জন্য কতিপয় অনুপ্রবেশকারী লাখ লাখ টাকা খরচ করছেন। তাদের এই টাকার উৎস কী? বিএনপি’র নেতারা বলেছেন, শেখ হাসিনা পালানোর পথ পাবে না। তাদের এই শক্তির উৎস কোথায়? এই সব আলামতে মনে হচ্ছে আস্তে আ’লীগের ভেতরে প্রবেশ করছে রাজাকারের উত্তরসূরি ও বিএনপি’র লোকজন। স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে আমরা কোন ভাবেই মেনে নিব না। উপজেলা আ.লীগের আহবায়ক এডভোকেট নাজমুল হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অর্থে বিনিময়ে কাউকে পদ দেওয়া হয়নি। কোন ধরণের সুযোগও নেই। সম্মেলনে তাঁদের বাইরে যত প্রার্থী ছিল সবাই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় নির্বাচন দিতে হয়নি।
মাহবুব খান বাবুল