মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
সরাইল নির্বাচন অফিসের তেলেসমতিতে চমকে গেছেন স্থানীয় গ্রাহকরা। গ্রাহকদের করা আবেদনে কোন তদবির ছাড়াই নাম সংশোধন হয়। ইসি গ্রাহককে ম্যাসেজ দিয়ে সংশোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর ওই সংশোধনের জন্য ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবী করেন ওই অফিসের অফিস সহকারী মো. আবু সুফিয়ান মোল্লা। ঘুষ নিতে গ্রাহককে দেন বিকাশ নম্বর। গ্রাহক সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়দেওয়ান পাড়ার বাসিন্দা মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুরের ছেলে আসিফ উল ইসলাম ঠাকুর। ভুক্তভোগি গ্রাহক সূত্র জানায়, এনআইডি কার্ড নম্বর-৫১০৪২৪৯৯৩২। এতে পিতার নাম ভুল বশত আনিছ উল ইসলাম ঠাকুর লিপিবদ্ধ হয়। সঠিক নামটি হবে আনিছুল ইসলাম ঠাকুর। আবেদনের মাধ্যমে নামটি সংশোধন করতে সরাইল নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী আবু সুফিয়ান মোল্লার কাছে যান গ্রাহক। প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে সুফিয়ান অফিসের কম্পিউটার থেকেই আবেদনটি সেন্ড করেন। ২৫/০৫/২০২২ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে গ্রাহকের দেয়া মুঠোফোন নম্বরে নির্বাচন কমিশন থেকে একটি ম্যাসেজ পাঠায়। ম্যাসেজটি ছিল এমন- প্রিয় (আসিফ উল ইসলাম ঠাকুর), কর্তৃপক্ষের নিকট উপযুক্ত বিবেচিত হওয়ায় আপনার আবেদনটি (NIDCA6409884)অনুমোদন করা হয়েছে। অনলাইন সিস্টেম হতে কার্ডটি ডাউনলোড অথবা আবেদন জমাকৃত অফিস হতে কার্ডটি গ্রহণ করতে পারবেন।-ইসি, বাংলাদেশ। অনলাইন সিস্টেম হতে ডাউনলোড করে সংশোধিত কার্ডটির একটি ফটোকপি সংরক্ষণ করেন আসিফ। ওইদিনই সকালের দিকে সুফিয়ান আসিফের পিতা আনিছুল ইসলাম ঠাকুরের মুঠোফোনে (০১৭১১-৪০৭৭৬৬) ফোনে দিয়ে কার্ডটি সংশোধনের খবর ও একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে বলেন, আমাকে ১০ হাজার টাকা পাঠান। সরকারী ফি সহ সবকিছু দিয়েছি। এখন আবার কেন ১০ হাজার টাকা? সুফিয়ান লাইন কেটে দেয়। অতি সম্প্রতি পাসপোর্ট করার জন্য যায় আসিফ। সংশোধিত আইডি কার্ডের কপি বের করে দেখেন আগের ভুল নামটিই আছেন। আনিছ ঠাকুর বিষয়টি জানতে সরাইল নির্বাচন অফিসে যান। তিনি কর্মকর্তার সহায়তায় ওই সার্ভেয়ারে প্রবেশ করে দেখেন আরেকটি আবেদনের মাধ্যমে ১৪/০৯/২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ওই সংশোধনিটি বাতিল করা হয়েছে। অথচ গ্রাহক আসিফ কোথাও কোন আবেদন করেননি। গ্রাহক আসিফ ও তার আনিছুল ইসলাম ঠাকুর বলেন, সকল প্রকার নিয়ম নীতি অনুসরণ করে সরকারী ফি পরিশোধের মাধ্যমে আবেদনের প্রেক্ষিতে নামটি সংশোধন হয়েছিল। সুফিয়ানকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় সে নিজেই অফিসের কম্পিউটারে আরেকটি আবেদন করে সংশোধনিটি বাতিল করেছে। ঘুষ না পাওয়ায় আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। অভিযুক্ত মো. আবু সুফিয়ান মোল্লা বলেন, ঘুষ চাওয়া ও পরবর্তীতে আমার দ্বারা আবেদন করার কথাটি মিথ্যা। এসএসসি’র সনদ পরে দিব বলে আমিই কাজটি করিয়েছিলাম। সংশোধন করার পর এসএসসি সনদপত্রের সাথে ওই নামের মিল পাওয়া যায়নি। তাই বাতিল করেছেন। সরাইল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি আনিছ ঠাকুরের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। আমি উনাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিব।