ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির আয়োজনে ‘অদ্বৈত উৎসব ২০২৫’ অনুষ্ঠিত

- আপডেট সময় : ১০:০১:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫ ১১২ বার পড়া হয়েছে
বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী ঔপন্যাসিক অদ্বৈত মল্লবর্মণের ১১১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাহিত্য একাডেমির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে ‘অদ্বৈত উৎসব ২০২৫’। বুধবার গোকর্ণ গ্রামে অদ্বৈতের জন্মভিটায় আলোচনা, আবৃত্তি ও নাটক মঞ্চায়নের মধ্যদিয়ে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে অদ্বৈত মল্লবর্মণের ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন সংস্কৃতিকর্মীরা। পরে আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সাহিত্য একাডেমির সদস্যরা একক আবৃত্তি, দলীয় আবৃত্তি এবং নাটক পরিবেশন করে। সাহিত্য একাডেমির পরিচালক রম্যলেখক পরিমল ভৌমিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের আহ্বায়ক শাহ মো. সানাউল হক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসিসোয়েশনের সভাপতি আল আমিন শাহীন, জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার সহসভাপতি ডা. অরুনাভ পোদ্দার, নারী নেত্রী নন্দীতা গুহ, ফজিলাতুন্নাহার, ফারুক আহমেদ ভূইয়া, কবি শিরীন আক্তার, কবি আমির হোসেন, এম. এ হানিফ, কবি শাহজাদা জালাল, নেলী আক্তার, অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি পাঠাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য সচিব মো. হুমায়ূন কবীর, কবি মো. ইউনুছ সরকার, মাসুদ আহমেদ, জামিনুর রহমান, মো. মঈন উদ্দিন, নির্জয় হাসান সোহেল, নির্মল বর্মণ প্রমুখ।অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন এবং সদস্য নুসরাত জাহান বুশরা।
অদ্বৈত মল্লবর্মণ ১৯১৪ সালের ১ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার গোকর্ণ গ্রামের ধীবর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র সাঁইত্রিশ বছরের জীবনে অদ্বৈত মল্লবর্মণ সামান্য কটি উপন্যাস, গোটা চারেক গল্প এবং গোটা কয়েক প্রবন্ধ রচনা করলেও তাঁর রচনার প্রসাদ গুণের কারণে তিনি বিদগ্ধ পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন। ‘মোহাম্মদী’ পত্রিকায় তাঁর তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে মুদ্রিত হতে শুরু হলে পাঠক মহলে তোলপাড় তোলে; কিন্তু উপন্যাসটি সম্পূর্ণ পত্রস্ত হবার আগেই খোয়া যায় এর পাণ্ডুলিপি। পরে অবশ্য তাঁর আগ্রহী পাঠকের অনুরোধেই তিনি শেষ করেন তাঁর কালজয়ী উপন্যাস তিতাস একটি নদীর নাম। তিতাস একটি নদীর নাম ১৯৫১ খ্রীস্টাব্দে তাঁর প্রয়াণের কয়েক বছর পর গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
অদ্বৈত মল্লবর্মণ ১৯৩৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্নদা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করার পর কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি হয়েও অসচ্ছলতার জন্য পড়া এগিয়ে নিতে পারেননি; জীবিকার সন্ধানে কলকাতা পাড়ি জমান। কিছুদিন মাসিক ‘ত্রিপুরা’ পত্রিকায় কাজ করার পর ১৯৩৬ সালে কলকাতার ‘নবশক্তি’ পত্রিকায় কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের সহযোগী হিসেবে সহ-সম্পাদক পদে চাকরি শুরু করেন।
পরবর্তীতে তিনি ‘আজাদ’, ‘মোহাম্মদী’, ‘যুগান্তর’ এবং সাপ্তাহিক ‘দেশ’ পত্রিকার সাথেও যুক্ত ছিলেন। অদ্বৈত মল্লবর্মণ কিছুদিন বিশ্বভারতীর সাথেও যুক্ত ছিলেন। সাংবাদিকতায় যুক্ত থাকাকালেই তিনি সাহিত্য রচনায় নিজেকে নিয়োজিত করেন।