ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবশেষে ভূয়া সিআইডি র, মুল হোতা জেলহাজতে
- আপডেট সময় : ১১:৫৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৯৭ বার পড়া হয়েছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাজীপাড়া দরগা মহল্লা নুরু মিয়ার ছেলে সুমন নূর ( ডিস সুমন কে) গত ২৪.৯.২০২৩ ইং বিজ্ঞ আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করেন। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়। ভুয়া সিআইডি নাইম ও তার বন্ধু সুমন নূর নাঈমকে সিআইডির সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবেই পরিচয় করিয়ে দিত মানুষের কাছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে, তারা সিআইডির কোন অফিসার নয় বলে জানান। তবে অনেক আগে তিনি ঢাকার সিআইডির কোন এক অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন। তবে এর পক্ষে তিনি কোন প্রমান দিতে পারেনি। এসময় নাইম জানিয়েছে, এ ঘটনায় জনৈক ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নেওয়ার জন্য সুমন নূর তাকে পরামর্শ দিয়েছিলো বলে জানিয়েছে নাইম। এসময় ভুয়া সিআইডি নাঈম ও সুমন নুরের ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। আরো অনুসন্ধান করে জানা যায় সুমন নুরের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় যেসব মামলা রয়েছে।
নরসিংদী সদর থানার সুমন নূরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অপহরণ, ব্ল্যাকমেলের মামলা,অভিযোগ পত্র নং ৬১৩ – মামলার ধারা ৩৬৫.৩৮৫.৩৮৬.১০৯.৫০৬ পেনাল কোড – ১৮৬০ এফ আই আর নং ৩৪
এছাড়া ও CR মামলা, নং ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে CR – ১৪৩১/২০১৬, CR – ৪৬৮৪/২০১৬, CR – ৩৪০৪/২০১৬, CR – ২৮৮৪/২০১৬. ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে CR ৮১৮ / ২০২২ . চট্টগ্রাম আদালতে CR ৩৬১ / ২০২২ ।
সুমন নুরের সহযোগী ভুয়া সিআইডি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পুরোয়ানা জারি করেন আদালত। এদিকে ভুয়া সিআইডি নাইমের খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়। তিনি কখনো সিআইডি কখনো সাংবাদিক আবার কখনো বড় ব্যবসায়ী। এ পরিচয় দিয়ে তিনি আয় রোজগার করেন আর নিঃস্ব করেন সাধারণ মানুষকে। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলা রয়েছে। অভিযুক্তের নাম ইফরেখারুল ইসলাম নাইম (৩০)। তিনি নরসিংদী জেলা সদরের বাগদী মার্কাজ মসজিদ এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে। তবে তার মা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে দীর্ঘদিন যাবৎ নার্সের চাকরি করার সুবাধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাইম অতীতে বসবাস করেছেন। ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার বন্ধু-বান্ধব রয়েছে।
আর এদের সহযোগীতায় নাইম এই প্রতারণা করে চলেছেন দিনের পর দিন,অনুসন্ধান করে নাইমের বিরুদ্ধে হওয়া একটি মামলা থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের জগৎসার (ভাদুঘর) গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের মেয়ে সুমিকে (কমলা) সিআইডি পরিচয়ে বিয়ে করেন নাইম। তখন পাঁচ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। এছাড়াও ৪ লক্ষ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবপত্র দিয়ে দেওয়া হয়। তারপরও নাইম যৌতুকের জন্য তার স্ত্রী সুমিকে মারধর করতেন। সবশেষ গত ১৪ জানুয়ারী নাইম তার শশুর বাড়িতে এসে তার স্ত্রী সুমিকে মারপিট করে মারাত্মক আহত করেন। এরই প্রেক্ষিতে স্বামী নাইমের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেন সুমি। বিয়ের দুই মাসের মাথায় এই ঘটনা ঘটে। মামলায় বাদি সুমি নাইমকে জুয়াড়ি ও নেশাখোর বলে উল্লেখ্য করেন। এর আগে ২০২১ সালের ১৫ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিআইডির এসআই পরিচয় দিয়ে জনৈক এক ব্যক্তির (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) মোবাইল থেকে তার ব্যক্তিগত ভিডিও জোর করে নিয়ে তা ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ে করলে। গত ২৪.৯.২০২৩ ইং আদালতে আত্মসমর্থন করলে সুমন নূরকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন, অপরদিকে ভুয়া সিআইডি নাঈম পালাতক থাকায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।