ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় প্রথমবারের মতো একটি মাদ্রাসায় শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে।
১৯৮৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহীমপুরে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সুফিয়াবাদ শাহ সুফি সাইয়্যেদ আজমত উল্লাহ (র.) ফাজিল মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসাটির শিক্ষার্থী রয়েছে ১২ শতাধিক। প্রতিষ্ঠার ৩৬ বছরেও এই মাদ্রাসায় শহীদ দিবস, মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে কোন প্রকার শহীদ মিনার ছিল না। অস্থায়ী ভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে বিভিন্ন দিবস উদযাপিত হয়ে আসছিল। অবশেষে প্রতিষ্ঠার ৩৬ বছর পর মাদ্রাসায় স্থায়ীভাবে স্থাপিত হলো শহীদ মিনার। মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন। এরফলে প্রথমবারের মতো উপজেলার কোন মাদ্রাসায় স্থাপিত হলো শহীদ মিনার।
এর মাধ্যমে উপজেলাটির সকল মাদ্রাসায় শহীদ মিনার স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক বলেন, এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যেন দেশ প্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বাঙালি ঐতিহ্যকে ধারণ করতে পারে, তাই মাদ্রাসার শিক্ষকদের আন্তরিক অনুরোধে শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ আমি নিয়েছিলাম। ১৯৫২ সালে সালাম, রফিক ও জব্বররা বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলা করেছে। বাংলা আমার মাতৃ ভাষা।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মাদ্রাসায় দেখা যায় শিক্ষার্থীরা আরবি শিক্ষায় ভাল থাকে। অনেকে বাংলায় দূর্বল থাকে, অনেকে নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্য জানে না। তাই নিজের অস্তিত্ব, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের অবদান মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জানাতে শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। উপজেলায় এটি প্রথম কোন মাদ্রাসায় শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সব মাদ্রাসায় শহীদ মিনার স্থাপিত হবে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মোহাম্মদ এনামুল হক কুতুবি বলেন, মাদ্রাসা পর্যায়ে শহীদ মিনার স্থাপনের উদ্যোগের প্রথমে আমাদের মাদ্রাসাকে বাছাই করেছেন। লাল সবুজ দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণীয় একটি শহীদ মিনার তিনি তৈরি করেছেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছে। এই কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই। শহীদ মিনার স্থাপনের পর পর পরই শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান, মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক ইব্রাহীম খলিল, উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম সহ মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।