ঢাকা ০৬:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‌উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাফওয়ান হোসেন(শাওন) নিখোঁজ নদী রক্ষায় কার্যকর সংস্কারের আহবান তরী বাংলাদেশের বিল্ডিং কোড আইন অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ নবীনগরে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত তারাবী নামাজের টাকা নিয়ে সংর্ঘষ, আহত ১৫ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আ.লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদ উপলক্ষ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পেল ঈদ-পোশাক সরাইলে শহীদ পরিবারের পাশে এনসিপি’র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ উদ্দিন মাহদি

গ্যাস স্বল্পতায় দূর্ভোগে পড়েছেন সরাইলের ৩ সহস্রাধিক গ্রাহক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:০০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭৩ বার পড়া হয়েছে

গ্যাস স্বল্পতায় দূর্ভোগে পড়েছেন সরাইলের ৩ সহস্রাধিক গ্রাহক

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নে বসতবাড়িতে গ্যাসের স্বল্পতায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন ৩ সহস্রাধিক গ্রাহক। গত ১ মাসেরও অধিক সময় ধরে অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস স্বল্পতার কারণে টেনশন বেড়ে গেছে গৃহিনীদের। অনেকে বাধ্য হয়ে রান্নার কাজে লাকড়ি ও কেরোসিনের চুলা ব্যবহার করছেন। সকালের নাস্তার জন্য অনেক পরিবার হোটেল নির্ভর হয়ে পড়েছেন। পরিত্রাণের আশায় অনেক গ্রাহক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে গ্যাসের গ্রাহকদের এমন দূর্দশায় প্রতিকারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ বলছেন সরাইলে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের কাজ চলমান থাকায় এই সমস্যা হচ্ছে। সরজমিনে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক মাসেরও অধিক সময় ধরে সরাইল সদরের অধিকাংশ গ্রামে পাড়ায় মহল্লায় বসতবাড়ির গ্যাসের চুলা গুলোতে আগুন থাকে সামান্য। অনেকের চুলাতে আগুনের দেখাই মিলে না। ভোর বেলা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে গ্যাস স্বল্পতা। ২টার পর কিছুটা বৃদ্ধি পায় আগুনের গতি। তাই সকাল বেলা রান্নার কাজ করতে অনেক কষ্ট করতে হয় গৃহিনীদের। ২টার আগে অনেক গৃহিনী চুলার কাছে যেতে চান না। জরূরী হলে স্বল্প আগুনের দ্বারা দীর্ঘ প্রতিক্ষা ও কষ্টে রান্নার কাজ করেন তারা। আর অনেকেই তাদের শিক্ষার্থীসহ গোটা পরিবারের নাস্তার জন্য হোটেল নির্ভর হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ কনফেকশনারী আইটেম দিয়ে করছেন নাস্তা। কেউ খাচ্ছেন চিড়া মুড়ি কলা। সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্রাপড়া, সৈয়দটুলার একাংশ, ফকিরপাড়া, নিজসরাইল, আরিফাইল, সকাল বাজার, সাহাপাড়া, নতুনহাবলি, মোঘলটুলা, চানমুনি পাড়া, বড় দেওয়ানপাড়া, বড্ডাপাড়া ও উচালিয়া পাড়ার একাংশে চলছে গ্যাস স্বল্পতা। ফলে অনেক কিছু থাকার পরও খাবারের কষ্ট করছেন অগণিত পরিবার। মেহমান আসলে লজ্জায় পড়তে হচ্ছে গৃহিনীদের। বড় দেওয়ান পাড়ার বাসিন্ধা মো. আকবর ঠাকুর ও মো. দুলাল মিয়া বলেন, চুলায় গ্যাস স্বল্পতার কারণে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের কষ্ট হচ্ছে। সকালের নাস্তা বিকেলে আর দুপুরের খাবার রাতে খেতে হচ্ছে। যাদের ঘরে রোগী আছে তাদের দূর্ভোগ সীমাহীন। এভাবে আর কত? আমরা তো বিল কম দেয় না। এই দূর্ভোগ নিরসনে কর্তৃপক্ষ দ্রূত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি। উচালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্ধা ব্যবসায়ি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, গ্যাস স্বল্পতার সমস্যায় জনজীবন দূর্বীসহ হয়ে ওঠেছে। অনেক সময় গ্যাস থাকেও না। ফলে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। বিল তো কম নেন না। নিয়মিত বেড়েই চলেছে। কখন এই দূরাবস্থা থেকে রেহাই পাব আল্লাহই ভাল জানেন। মো. আনিছুর রহমান বলেন, আর পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে গত সপ্তাহে স্টুব চুলা ক্রয় করেছি। সরাইল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার নিজ ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়ির চুলায় দীর্ঘ সময় গ্যাস স্বল্পতা বা না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, লোকজন খুবই কষ্টে আছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরূত্ব দিয়ে দেখার অনুরোধ রাখছি। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর একাধিক ঠিকাদার বলেন, শীতকালে গ্যাস কিছুটা ঘণ হয়। ফলে স্লো গতিতে সাপ্লাই হয়। সাপ্লাইয়ের প্রধান জায়গায় এক ধরণের স্প্রে দেওয়া হয়। সমস্যাটি থাকবে না। এইবার মনে হয় এখনো স্প্রে দেয়া হয়নি। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এর দায়িত্বে থাকা মো. শাহ আলম বলেন, সরাইলে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ অনেক বেশী। অবৈধ সংযোগ গুলো পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। তাই সাপ্লাইয়ে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য চুলা গুলোতে মাঝে মধ্যে গ্যাসের স্বল্পতা দেখা দিচ্ছে। বিচ্ছিন্নের কাজ একেবারে শেষ হলে এই সমস্যা থাকবে না। তবে বিষয়টি জানতে ডিজিএম এর মুঠোফোনে (০১৭৩০-৭০৭৩৭১) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গ্যাস স্বল্পতায় দূর্ভোগে পড়েছেন সরাইলের ৩ সহস্রাধিক গ্রাহক

আপডেট সময় : ০৭:০০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নে বসতবাড়িতে গ্যাসের স্বল্পতায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন ৩ সহস্রাধিক গ্রাহক। গত ১ মাসেরও অধিক সময় ধরে অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস স্বল্পতার কারণে টেনশন বেড়ে গেছে গৃহিনীদের। অনেকে বাধ্য হয়ে রান্নার কাজে লাকড়ি ও কেরোসিনের চুলা ব্যবহার করছেন। সকালের নাস্তার জন্য অনেক পরিবার হোটেল নির্ভর হয়ে পড়েছেন। পরিত্রাণের আশায় অনেক গ্রাহক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে গ্যাসের গ্রাহকদের এমন দূর্দশায় প্রতিকারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ বলছেন সরাইলে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের কাজ চলমান থাকায় এই সমস্যা হচ্ছে। সরজমিনে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত এক মাসেরও অধিক সময় ধরে সরাইল সদরের অধিকাংশ গ্রামে পাড়ায় মহল্লায় বসতবাড়ির গ্যাসের চুলা গুলোতে আগুন থাকে সামান্য। অনেকের চুলাতে আগুনের দেখাই মিলে না। ভোর বেলা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে গ্যাস স্বল্পতা। ২টার পর কিছুটা বৃদ্ধি পায় আগুনের গতি। তাই সকাল বেলা রান্নার কাজ করতে অনেক কষ্ট করতে হয় গৃহিনীদের। ২টার আগে অনেক গৃহিনী চুলার কাছে যেতে চান না। জরূরী হলে স্বল্প আগুনের দ্বারা দীর্ঘ প্রতিক্ষা ও কষ্টে রান্নার কাজ করেন তারা। আর অনেকেই তাদের শিক্ষার্থীসহ গোটা পরিবারের নাস্তার জন্য হোটেল নির্ভর হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ কনফেকশনারী আইটেম দিয়ে করছেন নাস্তা। কেউ খাচ্ছেন চিড়া মুড়ি কলা। সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্রাপড়া, সৈয়দটুলার একাংশ, ফকিরপাড়া, নিজসরাইল, আরিফাইল, সকাল বাজার, সাহাপাড়া, নতুনহাবলি, মোঘলটুলা, চানমুনি পাড়া, বড় দেওয়ানপাড়া, বড্ডাপাড়া ও উচালিয়া পাড়ার একাংশে চলছে গ্যাস স্বল্পতা। ফলে অনেক কিছু থাকার পরও খাবারের কষ্ট করছেন অগণিত পরিবার। মেহমান আসলে লজ্জায় পড়তে হচ্ছে গৃহিনীদের। বড় দেওয়ান পাড়ার বাসিন্ধা মো. আকবর ঠাকুর ও মো. দুলাল মিয়া বলেন, চুলায় গ্যাস স্বল্পতার কারণে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের কষ্ট হচ্ছে। সকালের নাস্তা বিকেলে আর দুপুরের খাবার রাতে খেতে হচ্ছে। যাদের ঘরে রোগী আছে তাদের দূর্ভোগ সীমাহীন। এভাবে আর কত? আমরা তো বিল কম দেয় না। এই দূর্ভোগ নিরসনে কর্তৃপক্ষ দ্রূত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি। উচালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্ধা ব্যবসায়ি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, গ্যাস স্বল্পতার সমস্যায় জনজীবন দূর্বীসহ হয়ে ওঠেছে। অনেক সময় গ্যাস থাকেও না। ফলে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। বিল তো কম নেন না। নিয়মিত বেড়েই চলেছে। কখন এই দূরাবস্থা থেকে রেহাই পাব আল্লাহই ভাল জানেন। মো. আনিছুর রহমান বলেন, আর পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে গত সপ্তাহে স্টুব চুলা ক্রয় করেছি। সরাইল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার নিজ ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়ির চুলায় দীর্ঘ সময় গ্যাস স্বল্পতা বা না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, লোকজন খুবই কষ্টে আছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরূত্ব দিয়ে দেখার অনুরোধ রাখছি। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর একাধিক ঠিকাদার বলেন, শীতকালে গ্যাস কিছুটা ঘণ হয়। ফলে স্লো গতিতে সাপ্লাই হয়। সাপ্লাইয়ের প্রধান জায়গায় এক ধরণের স্প্রে দেওয়া হয়। সমস্যাটি থাকবে না। এইবার মনে হয় এখনো স্প্রে দেয়া হয়নি। বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এর দায়িত্বে থাকা মো. শাহ আলম বলেন, সরাইলে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ অনেক বেশী। অবৈধ সংযোগ গুলো পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। তাই সাপ্লাইয়ে সমস্যা হচ্ছে। এজন্য চুলা গুলোতে মাঝে মধ্যে গ্যাসের স্বল্পতা দেখা দিচ্ছে। বিচ্ছিন্নের কাজ একেবারে শেষ হলে এই সমস্যা থাকবে না। তবে বিষয়টি জানতে ডিজিএম এর মুঠোফোনে (০১৭৩০-৭০৭৩৭১) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।