আশুগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু
- আপডেট সময় : ০৯:২৩:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩ ১৪৭ বার পড়া হয়েছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় আকলিমা আক্তার (১৯) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার (৩ জুলাই) সকালে স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করলে স্থানীয় মাতব্বরদের মধ্যস্থতায় ২ লাখ টাকায় বিষয়টি রফাদফা করা হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে আশুগঞ্জ উপজেলার স্টেশন রোড এলাকার নূর মেডিকেল সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আকলিমা আক্তার উপজেলার চরচারতলা গ্রামের আল আমিন সরকারের স্ত্রী।
নিহত প্রসূতি আকলিমার বড় বোন তাছলিমা জানান, তার বোনের প্রসবব্যথা উঠলে রোববার বিকেল ৫টার দিকে তাকে নূর মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসেন। এসময় তার বোনের শ্বশুর শওকত সরকার সাথে ছিলেন। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার শাহনা বেগম তাদের জানান, সিজার ছাড়াই নরমালি বাচ্চা প্রসব করানো সম্ভব। এরপর সন্ধ্যা সাতটার দিকে আকলিমা একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে কর্মরত সিস্টাররা নবজাতককে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করলেও প্রসূতি মাকে ওটি ভিতরেই রাখা হয়। এতে বাইরে থাকা স্বজনদের সন্ধ্যেহ হয়। পরে তারা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানতে পারে নরমালি প্রসব করাতে গিয়ে তার গোপ্তাঙ্গে অস্ত্র পাচার করা হয়। এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে -যা কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নিহতের বোন তাছলিমা আরো জানান, বোনের অবস্থা জানতে তিনি ওটিতে প্রবেশ করতে চাইলে ডাক্তার শাহানা তাকে দুর্ব্যবহার করে বের করে দেন এবং তিন ব্যাগ রক্ত জোগার করতে বলেন। পরে রাতেই দুইজন ডোনারকে এনে রক্ত দেয়া হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (বেসরকারি) রেফার্ড করে। পরে রাত ১২টার দিকে অ্যাম্বুল্যান্স এনে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নিহতের শ্বশুর শওকত সরকার বলেন, আমাদেরকে না জানিয়েই ডাক্তার সিজার না করে গোপ্তাঙ্গে অস্ত্র পাচার করা হয়েছে। ডাক্তারের ভুল চিকৎসার জন্য তার বউমার মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবস্থা বেগতিক দেখে নূর মেডেকেল সেন্টার থেকে মৃত লাশ দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে করে আমাদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর পর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করলে স্থানীয় মাতব্বরদের মধ্যস্থতায় ২ লাখ টাকায় বিষয়টি রফাদফা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নূর মেডিকেল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ নজরুল বলেন, আমরা রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলেই নরমাল ডেলি়ভারির চেষ্টা করি। চিকিৎসায় কোন গাফলিতি হয়নি। তবে রক্তক্ষরণ থামানো না গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়। টাকার বিনিময়ে রফাদফার বিষয়ে তিনি বলেন, একটি অসহায় পরিবার হিসেবে আমি তাদের ডোনেট করেছি।