ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে হারিয়ে যাওয়া ১০ লাখ ৩৫ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাত ১২টার পর উপজেলার জয়ধরকান্দি গ্রামের প্রবাসগামী ৪ যুবকের ওই টাকা পানিশ্বর ইউনিয়নের বড়ইবাড়ি গ্রামের সিএনজি চালক মো. বাবুল মিয়ার (৪৫) কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ১১ ঘন্টা পর সবগুলো টাকা একসাথে ফেরৎ পেয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে আল্লাহকে ডাকছেন ৪ যুবক ও তাদের স্বজনরা। আর চিৎকার করে দোয়া করছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের জন্য। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, জয়ধরকান্দি গ্রামের সুমন (২২), মমিন (২৩), সাইফুল (২২) শাহজাহান আলী (২৮) সৌদী আরব যাবেন। সকল কাজ সম্পন্ন। টাকা জমা দিতে নরসিংদী যাওয়ার উদ্যশ্যে একটি মাইক্রো বাস ভাড়া করেন। গত শনিবার সকালে মাইক্রোটি সরাইল-নাসিরনগর সড়কের কুন্ডা এলাকায় অপেক্ষা করছিল। ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকার ব্যাগটি লোকমান তার ভগ্নিপতি শাহজাহানের কাছে দেন। সকাল ১১টার দিকে জয়ধরকান্দি থেকে তারা ২টি সিএনজি করে কুন্ডায় আসেন। শাহজাহান টাকার ব্যাগটি সিএনজির পেছনে রেখেই মাইক্রোতে ওঠেন। সিএনজিটি যাত্রী নিয়ে বিশ্বরোডের দিকে চলে যায়। লোকমান টাকার ব্যাগ চাইলে শাহজাহান লাফিয়ে ওঠে বলেন সর্বনাশ হয়েছে। ব্যাগটি তো ভুলে সিএনজি’র পেছনে রেখে এসেছি। তারা নরসিংদী না গিয়ে মাইক্রো নিয়ে ওই সিএনজিটি খুঁজতে থাকেন। কোথাও না পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে বিষয়টি সরাইল থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ বিষয়টিকে গুরূত্ব দিয়ে এস আই মো. হোসনে মোবারকের নেতৃত্বে সন্ধানে নেমে পড়েন। পুলিশ প্রথমেই জয়ধরকান্দি গ্রামের ষ্ট্যান্ডের সিরিয়াল ম্যান থেকে ওই সময়ে ছেড়ে আসা সিএনজিটি ও মালিকের নাম ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে অভিযানে নেমে একের পর এক প্রযুক্তি, বুদ্ধিমত্তা ও কৌশল প্রয়োগ করতে থাকেন। দ্রূত অবস্থান সনাক্ত করে রাত ৭টার দিকে মালিক ও চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। চালক দুপুরের পর গাড়ি বন্ধ করে বাড়িতে চলে যাওয়ার ক্লোকে কাজে লাগিয়েই এগুতে থাকে পুলিশ। প্রথমে নানা তালবাহানা করলেও অনেক কৌশলী চেষ্টার পর রাত ১২টার দিকে ব্যাগটি তার বাড়িতে রাখার কথা স্বীকার করেন। চালকের বাড়ি থেকে ওই টাকার ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন ও জনপ্রতিনিধির উপসি’তিতে পুলিশের সহায়তায় ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লোকমানের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হয়। টাকা হাতে পেয়ে আবেগে আপ্লোত হয়ে পড়েন লোকমান। লোকমান বলেন, এমন ঘটনা বিরল। ১০০০/৫০০ টাকা হারালেই পাওয়া যায় না। আর এত গুলো টাকা হারানোর ১১ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করল সরাইল থানা পুলিশ। পুলিশ ৪ যুবকের জীবন রক্ষা করল। আমরা ওসি স্যারসহ সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, দরিদ্র পরিবারের লোকদের শেষ সম্বল টাকা গুলো হারানোর খবরে খুবই ব্যাথিত হয়েছিলাম। প্রযুক্তি ও বুদ্ধিমত্তাই সফল হতে সহযোগিতা করেছে। তাদের মুখের হাঁসি ও প্রশংসাই পুলিশদের প্রাপ্তি।
মাহবুব খান বাবুল