অভিযোগকারীর অনুরোধেও পুলিশ ছাড়ছেন না নিরপরাধ সিএনজি চালককে

0
287

অভিযোগকারীর অনুরোধেও ছাড়া হচ্ছেনা নিরপরাধ সিএনজি চালককে। প্রায় ২৪ ঘন্টা যাবত তাকে আটক করে রেখেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে শহরের কুমারশীল মোড় থেকে নাটাই গ্রামের সিএনজি চালক তোফাজ্জল হোসেনকে তার সিএনজিসহ পুরাতন জেলখানা মোড়ে অবস্থিত পুলিশ ফাড়ির সদস্যরা আটক করে, ফাড়ির সেকেন্ড ইনচার্জ হুমায়ুন এর তত্ত্বাবধানে থানায় পাঠানো হয়। জানা যায়, শহরের পুনিয়াউট এলাকার বাসিন্দা সৃষ্টি নামে এক মেয়ের মোবাইল এবং নগদ অর্থ হারানোর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তোফাজ্জল হোসেনসহ মোট দুজনকে আটক করে পুলিশ ফাড়িতে নিয়ে গেলে অভিযোগকারী সৃষ্টি সিএনজি চালক তোফাজ্জলকে বারবার নিরপরাধ বললেও পুলিশ তাকে আটক করে রাখে। অভিযোগকারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,আমি হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে সিএনজি যোগে আমার বাসা পুনিয়াউট যাই। সেখানে আমি এবং আমার সাথের অন্যজন রোগীকে ধরে নামিয়ে বাসায় নিয়ে যাই। বাসা থেকে বের হয়ে দেখি সিএনজি ড্রাইভার সিএনজির পেছন থেকে আমাদের থাকা ব্যাগ বের করছে আমাকে দেখে সে ব্যাগ আমার হাতে দিয়ে তার সিএনজি নিয়ে চলে যায়। আমি বাসায় গিয়ে ব্যাগ খুলে দেখি ব্যাগে থাকা আমার মোবাইল এবং নগদ টাকা নাই,তখন আমি দ্রুত মোবাইলের নাম্বারে কল করলে কলটি কেটে মোবাইলটি বন্ধ করে ফেলা হয়। তখন আমি দ্রুত বাসা থেকে বের হয়ে সিএনজি চালক(যার নাম সবুর বলে পরে জানতে পারি) এর কাছে কুমারশীলমোড় গিয়ে দেখি সে তার সিএনজিতে যাত্রী উঠাচ্ছে। তখন আমি তার কাছে যেয়ে আমার মোবাইলের কথা বললে সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং তর্কে জড়িয়ে পরে। তখন অন্য একজন সিএনজি ড্রাইভার (যার নাম তোফাজ্জল বলে পরে জানতে পারি) এসে আমাকে বলে “আপা আপনি যানতো আমাদের যাত্রী নিতে সমস্যা হচ্ছে।” তার সাথে তখন উপস্থিত অন্য সিএনজি ড্রাইভাররা এসেও আমাকে একথা বলে। তখন আমি তাদের আমার মোবাইল হারানোর কথা বললে সিএনজি ড্রাইভার সবুর আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে চাইলে তোফাজ্জল তাকে দুটি চড় মেরে মাফ চাইতে বলে। তখন ঘটনাস্থলে ফাড়ির পুলিশ এসে সবুর,তোফাজ্জল এবং আমাকে ফাড়িতে নিয়ে গেলে আমি তাদের পুরো ঘটনা বলি, এবং অনেকবার বলি যে তোফাজ্জলের কোন দোষ নেই তাকে ছেড়ে দেন। তখন পুলিশ অফিসার বলে তুমি বললেতো হবে না, এরা সংঘবদ্ধ চক্র। এবিষয়ে প্রতিবেদক থানার (ওসি) এমরানুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তোফাজ্জলের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর অভিযোগ না থাকলে আর সে ভাল হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। তোফাজ্জল এর ফ্যামিলির অনুরোধে অভিযোগকারী সৃষ্টি সন্ধ্যায় থানায় গেলে ফাড়ির সেকেন্ড ইনচার্জ হুমায়ুন তাকে এবং তার পিতাকে ঢেকে নিয়ে বলে কে দোষী কে নিরপরাধ সেটা আপনাদের বুঝার দরকার নেই,আপনাদের হারানো জিনিস উদ্ধার হওয়ার পর দেখা যাবে কে আপরাধী আর কে না। মঙ্গলবার রাত দশটায় অভিযোগকারী সৃষ্টি বলেন, আমি থানায় গিয়ে হুমায়ুন স্যারকে বলছি যে স্যার আমি চাইনা কোন নিরপরাধ লোক হয়রানির শিকার হোক,আপনি তোফাজ্জলকে ছেড়ে দেন, আমার তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই। কিন্তু তিনি আমার কথা মানতে নারাজ। প্রায় তিন ঘন্টা আমি নিজে থানায় থেকে তোফাজ্জলকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেও পারি নাই। হুমায়ুন স্যার খালি একেক সময় একেক রকম বলে। এব্যাপারে ফাড়ির সেকেন্ড ইনচার্জ এসআই হুমায়ুন এর সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাদের থানায় দিয়ে এসেছি,এটা তদন্ত স্যার দেখছেন। কিন্তু সদর থানার ওসি (তদন্ত) সোহরাব হোসেন জানান, তোফাজ্জলের ব্যাপারে অভিযোগকারীর কোন অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও কেন তাকে অযথা আটকে রাখা হয়েছে জানার জন্য তার নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বারবার ব্যস্ত দেখিয়েছে, ফলে তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএনজি মালিক সমিতির একজন বলেন, তোফাজ্জল প্রায় দশ বছর যাবত সিএনজি চালায়। সে একটু বদমেজাজি কিন্তু তার ব্যাপারে এরকম কোন ধরনের কোন অভিযোগের প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। পুলিশ অযথা হয়রানি করছে তাকে। তোফাজ্জলের পরিবার থেকে বলা হয়েছে যদি বিকেলের মধ্যে নিরপরাধ তোফাজ্জলকে ছাড়া না হয় তাহলে আমরা এসপি বরাবর অভিযোগ দেব,সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিকার চাইবো এবং প্রয়োজনে পুলিশ অফিসার হুমায়ূন এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here