স্কুল ছাত্রী সিপাকে হত্যা করেন তার গৃহশিক্ষক প্রেমিক।

0
327

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুর থেকে আশিকা জাহান সিপা (১৬) নামের এসএসসি পরীক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গাছের সঙ্গে তার মাথা থেঁতলে হত্যা করেন গৃহশিক্ষক ও প্রেমিক বাইজিদ সরকার (২৬)। সিপা জেলা শহরের গভর্নমেন্ট মডেল গার্লস হাই স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। সে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের শাহিন মিয়ার মেয়ে। তারা পরিবারসহ জেলা শহরের মুন্সেফপাড়ায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করতেন। গত ২৮ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে পৌর এলাকার মুন্সেফপাড়া বোডিং মাঠ পুকুর থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই হুমায়ুন কবির জানান, বাইজিদ সরকার আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক স্বাগত সৌম্যের কাছে তিনি এই জবানবন্দি দেন। বাইজিদের জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, বাইজিদ সরকার মুন্সেফপাড়ায় বিভিন্ন বাসাবাড়িতে টিউশনি করান। সিপাকেও তার বাসায় গিয়ে গত তিন বছর ধরে পড়াচ্ছিলেন বাইজিদ। এরই মধ্যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বাইজিদ পাশের একটি বাড়িতে টিউশন পড়াচ্ছিলেন। এ সময় সেই বাড়ি খালি থাকায় সিপাকে সেখানে আসতে বলেন। সিপা সেখানে যাওয়ার পর প্রতিবেশী একজন দেখে ফেলেন। এ নিয়ে আশপাশের বাড়িতে কানাঘুষা চলে। তাই সিপার আত্মসম্মানে লাগায় বিয়ের জন্যে বাইজিদকে চাপ দেয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। গত ২৭ আগস্ট দিনগত রাত ২টার দিকে সিপার সঙ্গে বাইজিদের ফোনে কথা হয়। এ সময় সিপা আবারও বাইজিদকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মধ্যরাতে সিপা কাউকে কিছু না বলে লুকিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বের হওয়ার পর বোডিং মাঠ পুকুর পাড়ে বাইজিদ ও সিপা মিলিত হয়। সেখানে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে বাইজিদ জানায়, সে সিপাকে বিয়ে করবে না। এ কথা শুনে সিপা ক্ষুব্ধ হলে বাইজিদ তার চুলের মুঠি ধরে পাশের গাছে মাথায় আঘাত করে। এতে সিপা অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান বাইজিদ। পরের দিন দুপুরে বোডিং মাঠ পুকুর থেকে সিপার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসআই হুমায়ুন কবির আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর বাইজিদকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়। পরে সিপার বাবা আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় তাকে আসামি করেন। এখন এই মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here