ঢাকা ০১:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিল্ডিং কোড আইন অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ নবীনগরে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত তারাবী নামাজের টাকা নিয়ে সংর্ঘষ, আহত ১৫ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আ.লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদ উপলক্ষ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পেল ঈদ-পোশাক সরাইলে শহীদ পরিবারের পাশে এনসিপি’র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ উদ্দিন মাহদি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিপিএফ’র মাসিক সভা অনুষ্ঠিত শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট, এসিল্যান্ডকে অব্যাহতি বন্দিদের ইফতারে ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারা কর্তৃপক্ষ

সরাইলে পুলিশ হেফাজতে এক ব্যবসায়ির মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্য

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৬:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০২২ ২৭৫ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সরাইলে পুলিশ হেফাজতে নজির আহমেদ শাফু (৪০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শাফু উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের হাফেজ ওবায়দুল্লাহর ছেলে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। শাফু নিহতের ঘটনায় পরিবার ও পুলিশের বক্তব্যে রয়েছে ভিন্নতা। এ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিহতের বড় ভাই মো. জাফর আহমেদ বাদী হয়ে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। কিন্তু বাদীর বড় ভাই হোসাইন আহমেদ তফসির বলছেন এই মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, একটি বসতবাড়ির মালিকানা নিয়ে শাফুদের সাথে মমতাজ বেগম গংদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। আদালতে চলমান আছে মামলা মোকদ্দমাও। গত বৃহস্পতিবার রাতে শাফুদের বাড়িতে প্রবেশ করে চুরি করার চেষ্টাকালে হেলাল মিয়ার জুম্মানকে আটক করে মারধর করে শাফু। কিছুক্ষণ পরই পুলিশ এসে জুম্মান ও শাফুকে থানায় নিয়ে যায়। এক সময় গুরূতর অসুস্থ্যতার কথা বললে রাতেই শাফুকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্যেশ্যে রওনা দেয় পুলিশ। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শাফুকে মৃত ঘোষণা করেন। সুরতহাল রিপোর্ট করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ময়না তদন্তের জন্য শাফুর লাশ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শাফুর মুত্যুর খবরে নানা ধরণের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। কেউ বলেন পুলিশের নির্যাতনের কারণে শাফু মারা গেছে। আবার অনেকেই বলেন, জায়গার বিরোধের প্রতিপক্ষের লোকজন দিনভর শাফুকে মানসিক নির্যাতন করেছে। নানা ধরণের হুমকিও দিয়েছে। এ জন্যই শাফু মারা গেছে। তবে শাফুর বড় ভাই হোসাইন আহমেদ তফসিরসহ স্বজনদের অভিযোগের তীর প্রতিপক্ষের পাশাপাশি পুলিশের দিকে। তিনি বলেন, জায়গার ঝামেলার শুরূ থেকেই পুলিশ শাফুকে হেনস্তা করে আসছে। বৃহস্পতিবার শাফুর বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ল জুম্মান। এত দ্রূত পুলিশ ঘটনাস্থলে কিভাবে আসল? জুম্মানের সাথে পুলিশ শাফুকে কেন থানায় নিয়ে যাবে? পুলিশের ভূমিকা সন্দেহজনক ও বিতর্কিত। এ ছাড়া দিনের বেলা প্রকাশ্যে শাফুর প্রতিপক্ষ দল বেঁধে বাড়ির পাশে মহড়া দিয়েছে। কেউ কেউ শাফুকে হুমকিও দিয়েছে। ওদিকে পুলিশ বলছেন মামলা করতে থানায় আসার পরই বুকে ব্যাথা বলে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন শাফু। দ্রূত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামলার বাদী জাফর আহমেদ বলেন, আমার ভাই সুস্থ্য অবস্থায় গেছেন। ফিরছে লাশ হয়ে। এর মধ্যে অবশ্যই কোন ঘটনা আছে। আর মামলা পুলিশ লিখেছে। আমার স্বাক্ষর নিয়েছে। কি লিখেছেন আমি দেখিনি। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, নজির আহমেদ শাফু কোন ভাবেই পুলিশ হেফাজতে মারা যায়নি। পুলিশের পক্ষপাতিত্বের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার ঘরে চুর প্রবেশ করেছে। চুরকে ধরে থানায় নিয়ে আসি। মামলা দেওয়ার জন্য শাফুকেও আনা হয়। কিছুক্ষণ পরই শাফু বুকে ব্যাথা অনুভব করেন। চিকিৎসার জন্য হাসাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাফুকে মৃত ঘোষণা করেন। শাফুকে দিনভর প্রতিপক্ষের লোকজন শাররীক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। রাতেই শাফুর পরিবারের লোকজন মিলে জাফর আহমেদকে বাদী ১৩ জনের বিরূদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

মাহবুব খান বাবুল

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সরাইলে পুলিশ হেফাজতে এক ব্যবসায়ির মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্য

আপডেট সময় : ১০:৪৬:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০২২

সরাইলে পুলিশ হেফাজতে নজির আহমেদ শাফু (৪০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শাফু উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের হাফেজ ওবায়দুল্লাহর ছেলে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। শাফু নিহতের ঘটনায় পরিবার ও পুলিশের বক্তব্যে রয়েছে ভিন্নতা। এ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিহতের বড় ভাই মো. জাফর আহমেদ বাদী হয়ে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। কিন্তু বাদীর বড় ভাই হোসাইন আহমেদ তফসির বলছেন এই মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, একটি বসতবাড়ির মালিকানা নিয়ে শাফুদের সাথে মমতাজ বেগম গংদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। আদালতে চলমান আছে মামলা মোকদ্দমাও। গত বৃহস্পতিবার রাতে শাফুদের বাড়িতে প্রবেশ করে চুরি করার চেষ্টাকালে হেলাল মিয়ার জুম্মানকে আটক করে মারধর করে শাফু। কিছুক্ষণ পরই পুলিশ এসে জুম্মান ও শাফুকে থানায় নিয়ে যায়। এক সময় গুরূতর অসুস্থ্যতার কথা বললে রাতেই শাফুকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্যেশ্যে রওনা দেয় পুলিশ। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শাফুকে মৃত ঘোষণা করেন। সুরতহাল রিপোর্ট করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ময়না তদন্তের জন্য শাফুর লাশ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শাফুর মুত্যুর খবরে নানা ধরণের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। কেউ বলেন পুলিশের নির্যাতনের কারণে শাফু মারা গেছে। আবার অনেকেই বলেন, জায়গার বিরোধের প্রতিপক্ষের লোকজন দিনভর শাফুকে মানসিক নির্যাতন করেছে। নানা ধরণের হুমকিও দিয়েছে। এ জন্যই শাফু মারা গেছে। তবে শাফুর বড় ভাই হোসাইন আহমেদ তফসিরসহ স্বজনদের অভিযোগের তীর প্রতিপক্ষের পাশাপাশি পুলিশের দিকে। তিনি বলেন, জায়গার ঝামেলার শুরূ থেকেই পুলিশ শাফুকে হেনস্তা করে আসছে। বৃহস্পতিবার শাফুর বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ল জুম্মান। এত দ্রূত পুলিশ ঘটনাস্থলে কিভাবে আসল? জুম্মানের সাথে পুলিশ শাফুকে কেন থানায় নিয়ে যাবে? পুলিশের ভূমিকা সন্দেহজনক ও বিতর্কিত। এ ছাড়া দিনের বেলা প্রকাশ্যে শাফুর প্রতিপক্ষ দল বেঁধে বাড়ির পাশে মহড়া দিয়েছে। কেউ কেউ শাফুকে হুমকিও দিয়েছে। ওদিকে পুলিশ বলছেন মামলা করতে থানায় আসার পরই বুকে ব্যাথা বলে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন শাফু। দ্রূত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামলার বাদী জাফর আহমেদ বলেন, আমার ভাই সুস্থ্য অবস্থায় গেছেন। ফিরছে লাশ হয়ে। এর মধ্যে অবশ্যই কোন ঘটনা আছে। আর মামলা পুলিশ লিখেছে। আমার স্বাক্ষর নিয়েছে। কি লিখেছেন আমি দেখিনি। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, নজির আহমেদ শাফু কোন ভাবেই পুলিশ হেফাজতে মারা যায়নি। পুলিশের পক্ষপাতিত্বের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার ঘরে চুর প্রবেশ করেছে। চুরকে ধরে থানায় নিয়ে আসি। মামলা দেওয়ার জন্য শাফুকেও আনা হয়। কিছুক্ষণ পরই শাফু বুকে ব্যাথা অনুভব করেন। চিকিৎসার জন্য হাসাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাফুকে মৃত ঘোষণা করেন। শাফুকে দিনভর প্রতিপক্ষের লোকজন শাররীক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। রাতেই শাফুর পরিবারের লোকজন মিলে জাফর আহমেদকে বাদী ১৩ জনের বিরূদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

মাহবুব খান বাবুল