ঢাকা ০৫:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‌উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাফওয়ান হোসেন(শাওন) নিখোঁজ নদী রক্ষায় কার্যকর সংস্কারের আহবান তরী বাংলাদেশের বিল্ডিং কোড আইন অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ নবীনগরে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত তারাবী নামাজের টাকা নিয়ে সংর্ঘষ, আহত ১৫ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আ.লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদ উপলক্ষ্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পেল ঈদ-পোশাক সরাইলে শহীদ পরিবারের পাশে এনসিপি’র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ উদ্দিন মাহদি

সরাইলে তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজে অনিয়মের অভিযোগ মেঘনা গিলছে বাড়িঘর, সর্বত্রই আতঙ্ক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০২২ ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের রাজাপুর এলাকায় মেঘনার তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। ৪০ কোটি টাকার এই কাজে এন্তার অনিয়মের অভিযোগ এলাকাবাসীর। কাজটি উপজেলার শেষ প্রান্তে নদীর তীরবর্তী স্থানে হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের কথায় পাত্তা দিচ্ছেন না ঠিকাদার। মুখ বন্ধ রাখতে উল্টো তাদেরকে দিচ্ছেন হুমকি। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রি আর যেনতেন ভাবে কাজের নামে লুটপাটের অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। মাটির জন্য ড্রেজারে নদীর বদলে কাটছেন গ্রাম। দুই বছরের কাজ অর্ধেক হয়নি তিন বছরেও। ভরা বর্ষার আগেই তলিয়ে যাচ্ছে প্রটেকশন দেওয়াল। হাঁটু পানিতেই আন্দাজ করে বসানো হচ্ছে ব্লক। তদারকি কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে নালিশ করেও বন্ধ হচ্ছে না অনিয়ম ও দূর্নীতি। মাঝে মধ্যে ক্ষুদ্ধ কাজের জায়গায় জড়ো হচ্ছেন সহস্রাধিক নারী পুরূষ। অনিয়মের বিরূদ্ধে মানববন্ধন করার হুমকিও দিচ্ছেন তারা। কোথায় গেলে অনিয়ম বন্ধ হবে জানতে চিৎকার করছেন নদী পাড়ের সহস্রাধিক বাসিন্ধা। গত দুইদিন ধরে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে প্রকল্প সংলগ্ন ওই গ্রামের বসতবাড়ি ও ঘর। আত্ম রক্ষায় অন্যত্র সরতে ব্যাকুল গ্রামবাসী। ভাঙ্গন আতঙ্কে ভুগছে এখন পুরো গ্রামের মানুষ। সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, অরূয়াইল ইউনিয়নের এই গ্রামটির নাম রাজাপুর। শতাধিক বছরেরও অধিক সময় ধরে নদী ভাঙ্গনের দূর্ভোগের শিকার গ্রামটি। শত চেষ্টায় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিমসহ অনেকের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরে এসেছে। একাধিকবার পরিদর্শন করে নদী পানি ও গ্রামটির উচ্চতা পরিমাপ করেছেন। করেছেন ইষ্টিমিট। ৪০ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার হয়েছে। কাজ পেয়েছেন ‘ডলি কন্সট্রাকশন’ নামের একটি ফার্ম। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ অক্টোবর কাজটির উদ্বোধন হয়েছে। দ্রূতগতিতে মোটামুটি মানে কাজটি চলছিল। কিছুদিন পরই ‘ডলি কন্সট্রাকশন’ কাজ বন্ধ করে চলে যায়। কারন জানতে পারেননি স্থানীয়রা। আবার টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পান চারজন ঠিকাদার। এরা হলেন- প্যাকেজ-২ ‘মেসার্স মোস্তফা কামাল’, প্যাকেজ-৩ ‘মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজ’, প্যাকেজ-৪ ‘মেসার্স এম আর কন্সট্রাকশন ও মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজ’ ও প্যাকেজ-৭ ‘খাইরূল হাসান।’ শুরূ হয় বিপত্তি, অনিয়ম ও দূর্নীতি। কাজের ডিজাইনসহ প্লানিকের ম্যাপটি ডলি কন্সট্রাকশন নদীর পাড়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। লোকজন দেখেছেন। তারা ম্যাপটি না ঝুলিয়ে গোপন করে রেখেছেন। বর্ষায় গ্রামের যে অংশে আঘাত করবে নদী। সেখানে এখনো কাজ শুরূই করেননি। ফসলি মাঠ এলাকায় কাজ শুরূ করেন। ব্লক ও দেওয়াল নির্মাণে ব্যবহার করছেন নিম্নমানের পাথর বালু ও ইটা। সিমেন্ট ব্যবহার করছেন মনগড়া মত। ডিজাইনের পরিমাপের সাথে কোন মিল নেই কাজের। গ্রামের উচ্চতার চেয়ে ৪-৫ ফুট নীচে করছেন দেওয়াল। বর্ষা না আসতেই তলিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের প্রটেকশন দেওয়াল। গত ৩-৪ দিনের বৃষ্টিতে গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অনেক বসতবাড়ি ও ঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে মেঘনায়। এতে গোটা গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে ভাঙ্গন আতঙ্ক। অনেকে তাড়াহুড়া করে অন্যত্র সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজাপুর গ্রামের বাসিন্ধা ফরিদ মিয়া, আবু কাশেম ও রূবেলসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, তারা কাজে অনিয়ম করতেই নদীর পাড়ে কাজের ডিজাইনটি ঝুলাননি। কাজে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের বালু। এলসি পাথর না দিয়ে রিজেক্ট (গুড়া) পাথর দিয়ে কাজ করছেন। এ পাথরে বালু ও কাঁদা মিশ্রিত। নদীতে জুয়ার আসলে ব্লক বসায়। ভাটার সময় ব্লক বসানো বন্ধ রাখেন। গ্রামের সাথে নদীর তীরের নির্মিত দেওয়ালের উচ্চতা ঠিক নেই। ড্রেজারে নদী থেকে মাটি আনার কথা। তারা গ্রাম কেটে খাল করে মাটি আনছেন নদীতে। বৃষ্টির কারণে নদীতে টেউয়ের তোড়ে গ্রামের এক পাশের বাড়িঘর নদীতে চলে যাচ্ছে। লোকজন চিৎকার করছে। ঠিকাদাররা ওই এলাকায় কাজ করছেন না। খালি মাঠ ও ফসলি মাঠের এলাকায় কাজ করছেন। এটাও বুঝলাম না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারকি কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার কাজের অনিয়মের নালিশ করেছি। তারা ঠিকাদারের লোকজন ধমক দিয়ে চলে যান। আবার তারা তাদের মত করেই কাজ করছেন। এত কষ্টের সরকারি ৪০ কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। আমাদের কষ্ট ও দূর্ভোগ আগের জায়গায়ই থাকবে। কারণ এত নিম্নমানের সামগ্রির নিম্নমানের কাজ বেশী দিন ঠিকবে না। কোথায় গেলে যে সমাধান পাব বুঝতে পারছি না। আল্লাহ যদি আমাদেরকে সহায়তা করেন। ‘মেসার্স মোস্তফা কামাল’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. কবির উদ্দিন ডিজাইন ও প্ল্যানের ম্যাপ নদীর পাড়ে না ঝুলানোর কথা স্বীকার করে বলেন, সামনের জুনে প্রকল্পের সময় শেষ হয়ে যাবে। ডিজাইন ও ম্যাপ ঝুলাব। কাজের মান ভাল। আমরা নিস্নমানের কোন সামগ্রি ব্যবহার করছি না। ডিজাইন প্ল্যান অনুসারেই কাজ হচ্ছে। প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী সুপ্রজিত বলেন, নিম্নমানের সামগ্রি ও অনিয়মের অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ আমাদের নিজস্ব টীম মালামালের মান নিরীক্ষা করে থাকে। ব্লক তৈরীর পর টেষ্টের জন্য বুয়েটে পাঠানো হয়। মান নিশ্চিত হয়ে কাজ করা হয়। সেখানকার মানুষের দাবী দেওয়াল আরো উচু হউক। মোট ১২শত মিটার কাজের মধ্যে ৭শত-৮শত মিটার হয়ে গেছে। ৪শত মিটার বাকী। রি-টেন্ডার হয়েছে ২ মাস আগে। কাজ দ্রূতই শুরূ হবে। সেখানকার বাড়িঘরই নদীতে বিলীন হচ্ছে। দ্রূততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলব। প্রকল্পের মেয়াদ আগামী জুন মাস পর্যন্ত। এরমধ্যে যদি কাজ বাকী থাকে পরে করব। তবে প্রকল্প ক্লোজ হলে অবশিষ্ট টাকা ফেরৎ যাবে।

মাহবুব খান বাবুল

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সরাইলে তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজে অনিয়মের অভিযোগ মেঘনা গিলছে বাড়িঘর, সর্বত্রই আতঙ্ক

আপডেট সময় : ০৮:৪০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ মে ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের রাজাপুর এলাকায় মেঘনার তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। ৪০ কোটি টাকার এই কাজে এন্তার অনিয়মের অভিযোগ এলাকাবাসীর। কাজটি উপজেলার শেষ প্রান্তে নদীর তীরবর্তী স্থানে হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের কথায় পাত্তা দিচ্ছেন না ঠিকাদার। মুখ বন্ধ রাখতে উল্টো তাদেরকে দিচ্ছেন হুমকি। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রি আর যেনতেন ভাবে কাজের নামে লুটপাটের অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। মাটির জন্য ড্রেজারে নদীর বদলে কাটছেন গ্রাম। দুই বছরের কাজ অর্ধেক হয়নি তিন বছরেও। ভরা বর্ষার আগেই তলিয়ে যাচ্ছে প্রটেকশন দেওয়াল। হাঁটু পানিতেই আন্দাজ করে বসানো হচ্ছে ব্লক। তদারকি কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে নালিশ করেও বন্ধ হচ্ছে না অনিয়ম ও দূর্নীতি। মাঝে মধ্যে ক্ষুদ্ধ কাজের জায়গায় জড়ো হচ্ছেন সহস্রাধিক নারী পুরূষ। অনিয়মের বিরূদ্ধে মানববন্ধন করার হুমকিও দিচ্ছেন তারা। কোথায় গেলে অনিয়ম বন্ধ হবে জানতে চিৎকার করছেন নদী পাড়ের সহস্রাধিক বাসিন্ধা। গত দুইদিন ধরে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে প্রকল্প সংলগ্ন ওই গ্রামের বসতবাড়ি ও ঘর। আত্ম রক্ষায় অন্যত্র সরতে ব্যাকুল গ্রামবাসী। ভাঙ্গন আতঙ্কে ভুগছে এখন পুরো গ্রামের মানুষ। সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, অরূয়াইল ইউনিয়নের এই গ্রামটির নাম রাজাপুর। শতাধিক বছরেরও অধিক সময় ধরে নদী ভাঙ্গনের দূর্ভোগের শিকার গ্রামটি। শত চেষ্টায় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিমসহ অনেকের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরে এসেছে। একাধিকবার পরিদর্শন করে নদী পানি ও গ্রামটির উচ্চতা পরিমাপ করেছেন। করেছেন ইষ্টিমিট। ৪০ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার হয়েছে। কাজ পেয়েছেন ‘ডলি কন্সট্রাকশন’ নামের একটি ফার্ম। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ অক্টোবর কাজটির উদ্বোধন হয়েছে। দ্রূতগতিতে মোটামুটি মানে কাজটি চলছিল। কিছুদিন পরই ‘ডলি কন্সট্রাকশন’ কাজ বন্ধ করে চলে যায়। কারন জানতে পারেননি স্থানীয়রা। আবার টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পান চারজন ঠিকাদার। এরা হলেন- প্যাকেজ-২ ‘মেসার্স মোস্তফা কামাল’, প্যাকেজ-৩ ‘মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজ’, প্যাকেজ-৪ ‘মেসার্স এম আর কন্সট্রাকশন ও মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজ’ ও প্যাকেজ-৭ ‘খাইরূল হাসান।’ শুরূ হয় বিপত্তি, অনিয়ম ও দূর্নীতি। কাজের ডিজাইনসহ প্লানিকের ম্যাপটি ডলি কন্সট্রাকশন নদীর পাড়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। লোকজন দেখেছেন। তারা ম্যাপটি না ঝুলিয়ে গোপন করে রেখেছেন। বর্ষায় গ্রামের যে অংশে আঘাত করবে নদী। সেখানে এখনো কাজ শুরূই করেননি। ফসলি মাঠ এলাকায় কাজ শুরূ করেন। ব্লক ও দেওয়াল নির্মাণে ব্যবহার করছেন নিম্নমানের পাথর বালু ও ইটা। সিমেন্ট ব্যবহার করছেন মনগড়া মত। ডিজাইনের পরিমাপের সাথে কোন মিল নেই কাজের। গ্রামের উচ্চতার চেয়ে ৪-৫ ফুট নীচে করছেন দেওয়াল। বর্ষা না আসতেই তলিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের প্রটেকশন দেওয়াল। গত ৩-৪ দিনের বৃষ্টিতে গ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অনেক বসতবাড়ি ও ঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে মেঘনায়। এতে গোটা গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে ভাঙ্গন আতঙ্ক। অনেকে তাড়াহুড়া করে অন্যত্র সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। রাজাপুর গ্রামের বাসিন্ধা ফরিদ মিয়া, আবু কাশেম ও রূবেলসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, তারা কাজে অনিয়ম করতেই নদীর পাড়ে কাজের ডিজাইনটি ঝুলাননি। কাজে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের বালু। এলসি পাথর না দিয়ে রিজেক্ট (গুড়া) পাথর দিয়ে কাজ করছেন। এ পাথরে বালু ও কাঁদা মিশ্রিত। নদীতে জুয়ার আসলে ব্লক বসায়। ভাটার সময় ব্লক বসানো বন্ধ রাখেন। গ্রামের সাথে নদীর তীরের নির্মিত দেওয়ালের উচ্চতা ঠিক নেই। ড্রেজারে নদী থেকে মাটি আনার কথা। তারা গ্রাম কেটে খাল করে মাটি আনছেন নদীতে। বৃষ্টির কারণে নদীতে টেউয়ের তোড়ে গ্রামের এক পাশের বাড়িঘর নদীতে চলে যাচ্ছে। লোকজন চিৎকার করছে। ঠিকাদাররা ওই এলাকায় কাজ করছেন না। খালি মাঠ ও ফসলি মাঠের এলাকায় কাজ করছেন। এটাও বুঝলাম না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারকি কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার কাজের অনিয়মের নালিশ করেছি। তারা ঠিকাদারের লোকজন ধমক দিয়ে চলে যান। আবার তারা তাদের মত করেই কাজ করছেন। এত কষ্টের সরকারি ৪০ কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে। আমাদের কষ্ট ও দূর্ভোগ আগের জায়গায়ই থাকবে। কারণ এত নিম্নমানের সামগ্রির নিম্নমানের কাজ বেশী দিন ঠিকবে না। কোথায় গেলে যে সমাধান পাব বুঝতে পারছি না। আল্লাহ যদি আমাদেরকে সহায়তা করেন। ‘মেসার্স মোস্তফা কামাল’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. কবির উদ্দিন ডিজাইন ও প্ল্যানের ম্যাপ নদীর পাড়ে না ঝুলানোর কথা স্বীকার করে বলেন, সামনের জুনে প্রকল্পের সময় শেষ হয়ে যাবে। ডিজাইন ও ম্যাপ ঝুলাব। কাজের মান ভাল। আমরা নিস্নমানের কোন সামগ্রি ব্যবহার করছি না। ডিজাইন প্ল্যান অনুসারেই কাজ হচ্ছে। প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী সুপ্রজিত বলেন, নিম্নমানের সামগ্রি ও অনিয়মের অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ আমাদের নিজস্ব টীম মালামালের মান নিরীক্ষা করে থাকে। ব্লক তৈরীর পর টেষ্টের জন্য বুয়েটে পাঠানো হয়। মান নিশ্চিত হয়ে কাজ করা হয়। সেখানকার মানুষের দাবী দেওয়াল আরো উচু হউক। মোট ১২শত মিটার কাজের মধ্যে ৭শত-৮শত মিটার হয়ে গেছে। ৪শত মিটার বাকী। রি-টেন্ডার হয়েছে ২ মাস আগে। কাজ দ্রূতই শুরূ হবে। সেখানকার বাড়িঘরই নদীতে বিলীন হচ্ছে। দ্রূততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলব। প্রকল্পের মেয়াদ আগামী জুন মাস পর্যন্ত। এরমধ্যে যদি কাজ বাকী থাকে পরে করব। তবে প্রকল্প ক্লোজ হলে অবশিষ্ট টাকা ফেরৎ যাবে।

মাহবুব খান বাবুল