ঢাকা ১২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রচারণা ধান ও চালের অবৈধ মজুদ ঠেকাতে আশুগঞ্জে খাদ্য অধিদপ্তরের অভিযান॥ মিল মালিককে জরিমানা॥ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোঃ ইসলাম, অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেফতার টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে ইউপিজি’র অগ্রণী ভূমিকা ২০২৫-এ গোল্ড প্রেসিডেন্ট’ সম্মাননা পেলেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন কারাগারে টাকা ছাড়া মেলেনা বন্দিদের সাক্ষাত পেশাগত অধিকার আদায়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কমিটির বিজয়নগরে নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ তানভীর জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে

সরাইলে ইউপি সচিবের দায়িত্বে অবহেলায় সীমাহীন দূর্ভোগে সুবিধাভোগিরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২০:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৬০ বার পড়া হয়েছে

upojela

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:

যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠেছে সরাইল সদরের ইউপি সচিব মোহাম্মদ রূবেল ভূঁঞার বিরূদ্ধে। নিজ ইচ্ছায় মন চাইলে অফিসে আসা। আবার ইচ্ছেমত চলে যাওয়া। একাধারে ২-৩ দিন না আসা। বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ও আটকে যাওয়ায় সীমাহীন দূর্ভোগে আছেন সেখানকার সুবিধাভোগিরা। সচিবের গাফিলতিতে পরিষদের মাসিক সভা বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান নিজে। তাদের কষ্টের হাজারো আহাজারি চিৎকার চেচামেচি প্রতিবাদেও মন গলছে না সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের। দায়িত্ব পালনে এত অবহেলা অনিয়মের পরও তার বিরূদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন? তার খুঁটির জোর কী খুব বেশী শক্তিশালী? এমন সব জিজ্ঞাসা ভুক্তভোগিদের। জেলা প্রশাসকের কাছে তার কর্তব্যকাজের অবহেলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন খোদ চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও কোন সুরাহা পায়নি। বরং আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠছে সচিব রূবেল। সরজমিন অনুসন্ধানে, ইউনিয়ন পরিষদ ও ভুক্তভোগি সূত্র জানায়, ৪-৫ মাস আগে সরাইল ইউনিয়নের ইউপি সচিব পদে যোগদান করেছেন মোহাম্মদ রূবেল ভূঁঞা। যোগদানের পর থেকেই এক দিন আসলে ৩ দিন অনুপস্থিত। সকাল ৯টার পর থেকে বেলা ২/৩ টা পর্যন্ত শতশত নারী পুরূষের অপেক্ষা। তিনি আসেননি। ফোনও রিসিভ করেননি। আর রিসিভ করলেও বলেন এই কতক্ষণের মধ্যে আসছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও সচিবের দেখা পাননি সুবিধাভোগিরা। প্রায়ই নারী পুরূষদের দেখা যায় পরিষদের বারান্দায় বসে চা রূটি খাচ্ছেন। আর প্রতি মিনিটে উকি দিয়ে সচিবের দরজার দিকে তাকাতে। যেন সোনার হরিণের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। এভাবেই চলতে থাকে রূবেলের দায়িত্বপালন। ছেলে মেয়েদের জন্মনিবন্ধন, জন্মনিবন্ধন সংশোধন, জাতীয়পত্র সংশোধনের প্রত্যয়ন, ট্রেডলাইসেন্স, মৃত্যুর প্রত্যয়ন এমন শতাধিক জনগুরূত্বপূর্ণ কাজ নিয়মিত অপেক্ষায় থাকেন লোকজন। হঠাৎ করে যদি আসেন শতাধিক নারী পুরূষ মিলে সচিবকে গালমন্দ করতে থাকে। অনেকে ক্ষুদ্ধ হয়ে তাকে মারধর করার চেষ্টা করেন। উনি শুধু শুনেন। টু শব্দটিও করেন না। চেয়ারে বসার পর চারিদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকেন লোকজন। কাজের পর কাগজটি হাতে পেলে লম্বা করে স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলেন। একটি জন্মনিবন্ধনের জন্য অনেককেই ঘুরতে হচ্ছে ২০-২৫ দিন। অনেককে পার করে দেন ২-৩ মাস। সাধারণ মানুষ চাপতে থাকেন জনপ্রতিনিধিদের। এরপরও দিনদিন বেড়েই চলেছে সচিবের দায়িত্বে অবহেলা। আর সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে আছেন এখন সরাইলের সুবিধাভোগিরা। তারা সচিব রূবেলের দ্রত অপনারণ দাবী করছেন। তার দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার কারণেই আটকে পড়ে ইউনিয়ন পরিষদের অনেক গুরূত্বপূর্ণ কাজ। এমন গত ৪-৫ মাস ধরে পরিষদের মাসিক সভা হচ্ছে না সচিবের কারণে। স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন বলেন, পাসপোর্ট করব। জন্মনিবন্ধনের জন্য আবেদন দিলাম। কাজ করছে না। এখন বলে পাচ্ছে না। মিথ্যা কথা বলে। সে কাজে মনযোগি না। শুধু ভুল করে মানুষকে হয়রানি করে। নিয়মিত নেশা করে। তাকে বদলি করে সরাইলের মানুষকে বাঁচানোর আবেদন করছি। অভিযুক্ত রূবেল ভূঁঞা বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বাহিরে সময় দিতে হয়। এ ছাড়া অনেক দূর থেকে আসি। সড়কে জ্যাঁম থাকে। তাই মাঝেমধ্যে বিলম্ব হয়। অফিসে সারাক্ষণ কাজ করি। সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, খুবই কষ্ট ও বিব্রতকর অবস্থায় আছি। সচিবের দায়িত্বহীনতার দায়ে মানুষ আমাদেরকে নিয়মিত গালমন্দ করছে। পরিষদের মাসিক সভা পর্যন্ত করতে পারছি না। আমরা তার এহেন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ। তাকে সরাইল থেকে বদলি করলে রক্ষা পাব। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, ইউপি সচিব রূবেল ভূঁঞার কর্তব্যকাজে অবহেলার দায়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় ১টি আমি (ইউএনও) ১টি শোকজ করেছি। উনার সকল বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কোন সমস্যা নেই। তার বিরূদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যা যা প্রয়োজন সবকিছু নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সরাইলে ইউপি সচিবের দায়িত্বে অবহেলায় সীমাহীন দূর্ভোগে সুবিধাভোগিরা

আপডেট সময় : ০৮:২০:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:

যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠেছে সরাইল সদরের ইউপি সচিব মোহাম্মদ রূবেল ভূঁঞার বিরূদ্ধে। নিজ ইচ্ছায় মন চাইলে অফিসে আসা। আবার ইচ্ছেমত চলে যাওয়া। একাধারে ২-৩ দিন না আসা। বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ও আটকে যাওয়ায় সীমাহীন দূর্ভোগে আছেন সেখানকার সুবিধাভোগিরা। সচিবের গাফিলতিতে পরিষদের মাসিক সভা বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান নিজে। তাদের কষ্টের হাজারো আহাজারি চিৎকার চেচামেচি প্রতিবাদেও মন গলছে না সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের। দায়িত্ব পালনে এত অবহেলা অনিয়মের পরও তার বিরূদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন? তার খুঁটির জোর কী খুব বেশী শক্তিশালী? এমন সব জিজ্ঞাসা ভুক্তভোগিদের। জেলা প্রশাসকের কাছে তার কর্তব্যকাজের অবহেলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন খোদ চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও কোন সুরাহা পায়নি। বরং আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠছে সচিব রূবেল। সরজমিন অনুসন্ধানে, ইউনিয়ন পরিষদ ও ভুক্তভোগি সূত্র জানায়, ৪-৫ মাস আগে সরাইল ইউনিয়নের ইউপি সচিব পদে যোগদান করেছেন মোহাম্মদ রূবেল ভূঁঞা। যোগদানের পর থেকেই এক দিন আসলে ৩ দিন অনুপস্থিত। সকাল ৯টার পর থেকে বেলা ২/৩ টা পর্যন্ত শতশত নারী পুরূষের অপেক্ষা। তিনি আসেননি। ফোনও রিসিভ করেননি। আর রিসিভ করলেও বলেন এই কতক্ষণের মধ্যে আসছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও সচিবের দেখা পাননি সুবিধাভোগিরা। প্রায়ই নারী পুরূষদের দেখা যায় পরিষদের বারান্দায় বসে চা রূটি খাচ্ছেন। আর প্রতি মিনিটে উকি দিয়ে সচিবের দরজার দিকে তাকাতে। যেন সোনার হরিণের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। এভাবেই চলতে থাকে রূবেলের দায়িত্বপালন। ছেলে মেয়েদের জন্মনিবন্ধন, জন্মনিবন্ধন সংশোধন, জাতীয়পত্র সংশোধনের প্রত্যয়ন, ট্রেডলাইসেন্স, মৃত্যুর প্রত্যয়ন এমন শতাধিক জনগুরূত্বপূর্ণ কাজ নিয়মিত অপেক্ষায় থাকেন লোকজন। হঠাৎ করে যদি আসেন শতাধিক নারী পুরূষ মিলে সচিবকে গালমন্দ করতে থাকে। অনেকে ক্ষুদ্ধ হয়ে তাকে মারধর করার চেষ্টা করেন। উনি শুধু শুনেন। টু শব্দটিও করেন না। চেয়ারে বসার পর চারিদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকেন লোকজন। কাজের পর কাগজটি হাতে পেলে লম্বা করে স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলেন। একটি জন্মনিবন্ধনের জন্য অনেককেই ঘুরতে হচ্ছে ২০-২৫ দিন। অনেককে পার করে দেন ২-৩ মাস। সাধারণ মানুষ চাপতে থাকেন জনপ্রতিনিধিদের। এরপরও দিনদিন বেড়েই চলেছে সচিবের দায়িত্বে অবহেলা। আর সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে আছেন এখন সরাইলের সুবিধাভোগিরা। তারা সচিব রূবেলের দ্রত অপনারণ দাবী করছেন। তার দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার কারণেই আটকে পড়ে ইউনিয়ন পরিষদের অনেক গুরূত্বপূর্ণ কাজ। এমন গত ৪-৫ মাস ধরে পরিষদের মাসিক সভা হচ্ছে না সচিবের কারণে। স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন বলেন, পাসপোর্ট করব। জন্মনিবন্ধনের জন্য আবেদন দিলাম। কাজ করছে না। এখন বলে পাচ্ছে না। মিথ্যা কথা বলে। সে কাজে মনযোগি না। শুধু ভুল করে মানুষকে হয়রানি করে। নিয়মিত নেশা করে। তাকে বদলি করে সরাইলের মানুষকে বাঁচানোর আবেদন করছি। অভিযুক্ত রূবেল ভূঁঞা বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বাহিরে সময় দিতে হয়। এ ছাড়া অনেক দূর থেকে আসি। সড়কে জ্যাঁম থাকে। তাই মাঝেমধ্যে বিলম্ব হয়। অফিসে সারাক্ষণ কাজ করি। সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, খুবই কষ্ট ও বিব্রতকর অবস্থায় আছি। সচিবের দায়িত্বহীনতার দায়ে মানুষ আমাদেরকে নিয়মিত গালমন্দ করছে। পরিষদের মাসিক সভা পর্যন্ত করতে পারছি না। আমরা তার এহেন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ। তাকে সরাইল থেকে বদলি করলে রক্ষা পাব। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, ইউপি সচিব রূবেল ভূঁঞার কর্তব্যকাজে অবহেলার দায়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় ১টি আমি (ইউএনও) ১টি শোকজ করেছি। উনার সকল বিষয়ে আমরা অবগত আছি। কোন সমস্যা নেই। তার বিরূদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যা যা প্রয়োজন সবকিছু নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছি।