মাহবুব খান বাবুল; সরাইল থেকে:
সরাইলের পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউছার হোসেনের বিরূদ্ধে একই পরিষদের ১২ জন নির্বাচিত ইউপি সদস্য লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। অভিযোগে তারা চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে ১২টি অনিয়ম ও দূর্নীতির উল্লেখ করেছেন। অভিযোগকারীরা এটাকে অনাস্থা বললেও নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন এটি চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে অভিযোগ। অনাস্থা দেওয়ার বিধি রয়েছে। আর চেয়ারম্যান বলছেন, সব মিথ্যা। এটা আমার বিরূদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। লিখিত অভিযোগপত্র ও পরিষদের সদস্যদের সূত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার হোসেনের ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, দূর্নীতি, অসদাচরণ, ব্যক্তিগত দূর্ব্যবহার ও জনস্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপে তারা অতিষ্ঠ। উল্লেখযোগ্য অনিয়ম গুলোর মধ্যে রয়েছে-সেবার বিনিময়ে বিনা রশিদে অর্থ উত্তোলন ও আত্মসাৎ। জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদানকালে ৫০ টাকার স্থলে ৩০০-৫০০ টাকা আদায়। সরকারী সাম্বারছিবল নলকূঁপের ফি ১৮ হাজার টাকা আদায়। জন স্বাস্থ্য প্রকল্প প্রদত্ত ‘ইমপ্রোভমেন্ট টয়লেট’ বিতরণে আগ্রহী গ্রাহকের নিকট থেকে বিধি বহির্ভূত ভাবে ১৮ হাজার টাকা আদায় করছেন। মৃত ব্যক্তির সনদ প্রদানে বিনা রশিদে ১২০-৫০০ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ। পরিষদ কার্যালয়ে অপ্রয়োজনীয় আড্ডা ও পরিষদের সদস্যদের সাথে অশোভন আচরণ। করোনা মহামারীর গণ টিকা বাস্তবায়নের অর্থ আত্মসাৎ। নির্বাচিত সংখ্যা গরিষ্ট সদস্যদের মতামতকে উপেক্ষা করে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা। ট্রেড লাইসেন্স প্রদান ও অন্যান আর্থিক কাজে অনিয়ম। এসব কারণে তারা ১২ জন ইউপি সদস্য সম্মিলিত ভাবে চেয়ারম্যান কাউছরের বিরূদ্ধে লিখিত অনাস্থা দিয়েছেন। ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্য জুরবানু বলেন, ৮ শত টাকা ছাড়া চেয়ারম্যান সাহেব জন্মনিবন্ধন সনদে সই করেন না। বলেন, টাকা ছাড়া আমি সাইন করি না। নানা ভয়ভীতিও দেখান আমাদের। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাসান ভূঁইয়া বলেন, আমি নিজে জন্মনিবন্ধন সনদের জন্য ৭ শত টাকা দেওয়ায় চেয়ারম্যানের ভাতিজা আমাকে গালিগালাজ করে। চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালে তিনি আমাকে পরিষদ থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে বলেন, এই পরিষদে তোরে যেন আর না দেখি। চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন বলেন, সব গুলো অভিযোগই সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। বিষয়টি হচ্ছে দূর্বলের উপর সবলের অত্যাচার। আমি দূর্বল তাই চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই জুনাইদ নামের এক ব্যক্তিসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। অন্যায় অপকর্ম দূর্নীতি চুরির সুযোগ দেয় না বলে একটি মহলের সহায়তায় আমার বিরূদ্ধে এই অভিযোগ। জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান কেন হলাম? এটাই আমার মূল অপরাধ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। এটি অনাস্থা নয়। কারণ অনাস্থার বিধি হচ্ছে চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইউপি সদস্যরা সভা করে অনিয়ম ও অনাস্থার কথা গুলো উল্লেখ করে রেজুলেশন করবেন। রেজুলেশনে ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষর থাকবে। এই রেজুলেন সহ অনাস্থার আবেদন জমা দিবেন। আমরা চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।