ঢাকা ০৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোঃ ইসলাম, অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেফতার টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে ইউপিজি’র অগ্রণী ভূমিকা ২০২৫-এ গোল্ড প্রেসিডেন্ট’ সম্মাননা পেলেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন কারাগারে টাকা ছাড়া মেলেনা বন্দিদের সাক্ষাত পেশাগত অধিকার আদায়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কমিটির বিজয়নগরে নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ তানভীর জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‌উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাফওয়ান হোসেন(শাওন) নিখোঁজ বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার শ্যামলকে ফুলেল শুভেচ্ছা

বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য নেই সরাইলের তিন কর্মকর্তার কাছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:২০:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২ ১৪৯ বার পড়া হয়েছে
আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও সঠিক কোন তথ্য দিতে পারছেন না সরাইলের তিন দফতরের কর্মকর্তা। দুই সপ্তাহের অধিক সময় পরও তারা বলছেন আমরা তথ্য সংগ্রহ করে দিব। কিছু বিষয় আন্দাজের উপর দিলেও বাস্তবের সাথে বিরাট রয়েছে ফারাক। দফতর গুলো হলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দফতর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তর। এ বছর সবুজ প্রকল্পের পানি না আসায় সরাইলে বোরো চাষে ক্ষতির তথ্য এখনো অজানা কৃষি কর্মকর্তার। সরজমিনে ঘুরে ও দফতর প্রধানদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জুন মাসের শুরূতে প্রথমে সরাইলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এরপর আরো দ্রূত বৃদ্ধি পেতে থাকে পানি। উপজেলার অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ সরাইল-অরূয়াইল ও মলাইশ-শাহজাদাপুর সড়ক দুটি পানিতে তলিয়ে যায়। পরে পানির ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙ্গন শুরূ হয়। এ ছাড়াও সরাইল-তেরকান্দা,বড্ডাপাড়া-তেরকান্দা-কাটানিশার সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা সদর ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক পানিতে নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিছু কালভার্ট, ড্রেইন ও ব্রীজের অংশ বিশেষ। অথচ এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মোট কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোছা: নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, সঠিক করে বলতে পারছি না। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে ক্ষতির পরিমান বলব। তবে আজ বিকেলে গদবাধা একটি তথ্য দিয়েছেন। এতে বলেছেন সমগ্র উপজেলায় সবমিলিয়ে ৪৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। টাকায় যার পরিমাণ সাড়ে ১৮ কোটি টাকা। কোন তথ্যই দিতে পারছেন না কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন। টেবিলে বসে তথ্য চাইলে তিনি তার সহকর্মীর মুঠোফোনে ফোন দিয়ে তথ্য জানার চেষ্টা করেন। তারপর আমতা আমতা করে বলেন। কিন্তু সঠিক তথ্য দিতে পারেননি তিনি। স্থানীয় পর্যায়ে কৃষকদের দেয়া তথ্যনুযায়ী এ বছর উপজেলায় ১০০০ থেকে ১১০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। বন্যায় সবগুলোই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর কৃষি কর্মকর্তা বলছেন এক হাজার হেক্টরের মধ্যে ৮০০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২০০ হেক্টর জমি ঠিক হয়ে যাবে। ক্ষতির পরিমাণ রাউন্ড ফিগার হওয়ায় সন্দেহ আরো শক্তিশালী করেছে। পাট ১২০ হেক্টরের মধ্যে ২০ হেক্টর ও শাকশব্জি ৫০ হেক্টরের মধ্যে ৫ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কোনটিরই মিল নেই মাঠের তথ্যের সাথে। সবুজের পানির সমস্যায় অনাবাদী বোরো চাষের জমির পরিমাণ বলতে পারেননি তিনি। সঠিক তথ্য নেই মৎস্য কর্মকর্তার দফতরেও। কালিকচ্ছ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সরাফত আলীর ১৫ টি পুকুর (৫০ বিঘা) তলিয়ে গেছে। শুধু সরাফতের ক্ষতির পরিমাণই ৩০-৪০ লাখ টাকা। এ ছাড়া পানিশ্বর, শাহজাদাপুর, নোয়াগাঁও, শাহবাজপুর, চুন্টা, অরূয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের অনেক পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরপর প্রত্যেক ইউনিয়নে ড্রেজারে মাটি কেটে নিচু জায়গায় করা পুকুর তলিয়ে গেছে অর্ধশতাধিক। সেখানে মৎস্য অফিস বলছেন, গোটা উপজেলায় ৩০ টি পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর বেশী তথ্য তাদের কাছে নেই। মৎস্য চাষী সরাফত আলী বলেন, আমার ক্ষতির তথ্য নেয়ার কথা বলে মৎস্য অফিসের আর কোন সাড়া শব্দ নেই। এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত উপজেলায় কমপক্ষে শতাধিক পুকুর পানির নিচে চলে গেছে। এ বিষয়ে আবারও কথা বলতে মৎস্য কর্মকর্তা মায়মুনা জাহানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মাহবুব খান বাবুল

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য নেই সরাইলের তিন কর্মকর্তার কাছে

আপডেট সময় : ০৫:২০:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুন ২০২২

আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও সঠিক কোন তথ্য দিতে পারছেন না সরাইলের তিন দফতরের কর্মকর্তা। দুই সপ্তাহের অধিক সময় পরও তারা বলছেন আমরা তথ্য সংগ্রহ করে দিব। কিছু বিষয় আন্দাজের উপর দিলেও বাস্তবের সাথে বিরাট রয়েছে ফারাক। দফতর গুলো হলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দফতর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তর। এ বছর সবুজ প্রকল্পের পানি না আসায় সরাইলে বোরো চাষে ক্ষতির তথ্য এখনো অজানা কৃষি কর্মকর্তার। সরজমিনে ঘুরে ও দফতর প্রধানদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জুন মাসের শুরূতে প্রথমে সরাইলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এরপর আরো দ্রূত বৃদ্ধি পেতে থাকে পানি। উপজেলার অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ সরাইল-অরূয়াইল ও মলাইশ-শাহজাদাপুর সড়ক দুটি পানিতে তলিয়ে যায়। পরে পানির ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙ্গন শুরূ হয়। এ ছাড়াও সরাইল-তেরকান্দা,বড্ডাপাড়া-তেরকান্দা-কাটানিশার সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলা সদর ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক পানিতে নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিছু কালভার্ট, ড্রেইন ও ব্রীজের অংশ বিশেষ। অথচ এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মোট কত টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোছা: নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, সঠিক করে বলতে পারছি না। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে ক্ষতির পরিমান বলব। তবে আজ বিকেলে গদবাধা একটি তথ্য দিয়েছেন। এতে বলেছেন সমগ্র উপজেলায় সবমিলিয়ে ৪৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। টাকায় যার পরিমাণ সাড়ে ১৮ কোটি টাকা। কোন তথ্যই দিতে পারছেন না কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন। টেবিলে বসে তথ্য চাইলে তিনি তার সহকর্মীর মুঠোফোনে ফোন দিয়ে তথ্য জানার চেষ্টা করেন। তারপর আমতা আমতা করে বলেন। কিন্তু সঠিক তথ্য দিতে পারেননি তিনি। স্থানীয় পর্যায়ে কৃষকদের দেয়া তথ্যনুযায়ী এ বছর উপজেলায় ১০০০ থেকে ১১০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। বন্যায় সবগুলোই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর কৃষি কর্মকর্তা বলছেন এক হাজার হেক্টরের মধ্যে ৮০০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২০০ হেক্টর জমি ঠিক হয়ে যাবে। ক্ষতির পরিমাণ রাউন্ড ফিগার হওয়ায় সন্দেহ আরো শক্তিশালী করেছে। পাট ১২০ হেক্টরের মধ্যে ২০ হেক্টর ও শাকশব্জি ৫০ হেক্টরের মধ্যে ৫ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কোনটিরই মিল নেই মাঠের তথ্যের সাথে। সবুজের পানির সমস্যায় অনাবাদী বোরো চাষের জমির পরিমাণ বলতে পারেননি তিনি। সঠিক তথ্য নেই মৎস্য কর্মকর্তার দফতরেও। কালিকচ্ছ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সরাফত আলীর ১৫ টি পুকুর (৫০ বিঘা) তলিয়ে গেছে। শুধু সরাফতের ক্ষতির পরিমাণই ৩০-৪০ লাখ টাকা। এ ছাড়া পানিশ্বর, শাহজাদাপুর, নোয়াগাঁও, শাহবাজপুর, চুন্টা, অরূয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের অনেক পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরপর প্রত্যেক ইউনিয়নে ড্রেজারে মাটি কেটে নিচু জায়গায় করা পুকুর তলিয়ে গেছে অর্ধশতাধিক। সেখানে মৎস্য অফিস বলছেন, গোটা উপজেলায় ৩০ টি পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর বেশী তথ্য তাদের কাছে নেই। মৎস্য চাষী সরাফত আলী বলেন, আমার ক্ষতির তথ্য নেয়ার কথা বলে মৎস্য অফিসের আর কোন সাড়া শব্দ নেই। এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত উপজেলায় কমপক্ষে শতাধিক পুকুর পানির নিচে চলে গেছে। এ বিষয়ে আবারও কথা বলতে মৎস্য কর্মকর্তা মায়মুনা জাহানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মাহবুব খান বাবুল