সরাইল উপজেলা ‘উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী’র উদ্যোগে আয়োজন করা হয় আনন্দ ভ্রমণের। ভ্রমণের স্থান সিলেটের জাফলং। ২০ সদস্যের ভ্রমণ দল। দলে রয়েছেন ৬০-৭০ বছর বয়সের সদস্যও। গত ১২ ফেব্রূয়ারি শনিবার সরাইল অন্নদা স্কুলের মোড় থেকে সকাল ৭টায় দুটি মাইক্রো বাসে শুরূ হয় যাত্রা। পথিমধ্যে একাধিক জায়গায় নামাজ ও চা পানের বিরতি। সকলের চোখে মুখে আনন্দের ছায়া। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশের নয়নাভিরাম দৃশ্য। মূহুর্তে সকলেই হারিয়ে যায় ভ্রমণ স্থানের স্বপ্নে। হঠাৎ সড়কের গাড়ির শব্দে আবার ফিরে আসে যাত্রা পথে। ঘড়ির কাটায় সকাল সাড়ে ৮টা। শায়েস্তা গঞ্জের মোড়ে পৌঁছে শুরূ হয় নাস্তা। রূটি কলা ডিম আর মিনারেল ওয়াটারে নাস্তা শেষ। চলতে চলতে আসে তন্ত্রা। প্রায় দেড় ঘন্টার ঘুম। ঘুম ভাঙ্গার পরও শেষ হয়নি পথ। আরো অনেক বাকী। এভাবে মাইক্রোতেই কেটে যায় ৫ ঘন্টা। দুপুর ১২টা ৭ মিনিটে পৌঁছে যায় কাংখিত জাফলং পর্যটন এলাকায়। চমৎকার রোদ্রজ্জোল আবহাওয়া। সকলে দল বেঁধে ছুটে চলেন। পাহাড়,পাথর, ঝুলন্ত ব্রীজ, চা বাগান, রাজবাড়ি, খাসিয়া পল্লী বালু আর স্বচ্ছ পানি দ্রূত কাছে টেনে নেয় ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের। বেলা ১টা ২৫ মিনিট। পেটে প্রচন্ড ক্ষিধা। পাথর আর ঠান্ডা পানি পেরিয়ে বালুর উপরে রঙ্গিণ কাগড় ঝুলিয়ে সাজানো তাবুতে হাজির সরাইল উদীচীর সদস্যরা। এখানে ভর্তা ভাজি ছোট দেশী মাছের তরকারি। পেট ভরে খেয়ে নিলেন সকলেই। পাথরের উপরে বসে যোহরের নামাজ আদায় করলেন ৫-৬ জন। খাওয়া শেষে ইচ্ছেমত ঘুরাফেরা। ফাঁকে কিছু কেনাকাটাও করলেন সকলেই। পরে সবাই চলে গেলেন জিরো পয়েন্টে। সেখানে দীর্ঘ ১ ঘন্টা পাথর ও পানির খেলা দেখে চলে আসলেন মাইক্রোতে। তবে সিঁড়ির ১৮৬ টি স্তবক বেয়ে উপরে ওঠার অভিজ্ঞতা সকলেরই মনে থাকবে আজীবন। কারণ এ কাজটি ছিল ভ্রমণ বিনোদনের মধ্যে সবচেয়ে কষ্টকর। বিকেল তখন ৪টা ২০ মিনিট। উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সুমন পারভেজের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় লটারীর ড্র। লটারীতে প্রথম পুরস্কার জিতে নেন সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আইয়ুব খান। দ্বিতীয় হন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান ও তৃতীয় পুরস্কার পান জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রহমান। পুরস্কার প্রদান করেন জেলা উদীচীর সভাপতি জহিরূল ইসলাম স্বপন। এ সময় উপসি’ত ছিলেন সরাইল উদীচীর উপদেষ্টা সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, দেবদাস সিংহ রায়, মো. মাসুদ ও সভাপতি মো. মোজাম্মেল পাঠান। জাফলং থেকে উদীচীর যাত্রা পথে সকলেই হযরত শাহ ফরান (র.) ও হযরত শাহ জালাল (র)-এর মাজার জিয়ারত করেন। রাত ১১টার পর উদীচীর সকল সদস্য নিরাপদে নিজেদের জন্মস্থানে পৌঁছে। ভ্রমণ আনন্দের এই দিনটি প্রত্যেকের জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মাহবুব খান বাবুল