পুরস্কার, সম্মান বা সম্মাননা পেতে কার না ভাল লাগে। আর সেটা যদি হয় শ্রেষ্ঠত্বের। তাহলে তো পোয়াবারো। খেলার মাঠে নয়। নিজ কর্মক্ষেত্রে ২০২১-২২ সেশনে স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে তাক লাগিয়েছেন ঝুমা আক্তার। বাড়ি উপজেলার অরূয়াইল ইউনিয়নের অরূয়াইল গ্রামে। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ এপ্রিল তিনি অরূয়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা পদে যোগদান করেছেন। যোগদানের পরই কর্ম নিয়ে গ্রামে গ্রামে অবিরাম ছুটে চলা। রোদ বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। এর প্রভাবও পড়েছে কর্ম এলাকায়। অর্জনও হয়েছে উল্লেখযোগ্য। ঝুমার শ্রম, কর্মদক্ষতা, সততা ও নিয়মানুবর্তিতাকে মূল্যায়ন করেছেন কর্তৃপক্ষ। পঞ্চমবারের মত সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের বিচারে উপজেলায় শ্রেষ্ঠ ‘পরিদর্শিকা’ নির্বাচিত হয়েছেন ঝুমা। সম্প্রতি ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এক ভার্চুয়ালি সভায় শ্রেষ্ঠ পরিদর্শিকা হিসাবে ঝুমার নাম ঘোষণা করা হয়। এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন মিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন সহকারি পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন আহমেদ, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আইয়ুব খান, সাধারণ সম্পাদক ও মহিলা কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মাহবুব খান, দৈনিক আজকের কাগজ পত্রিকার সরাইল প্রতিনিধি এম মনসুর আলী, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ঝুমা আক্তার, পরিদর্শক মো. আনিছ মিয়া ও পরিবার কল্যাণ সহকারি হামিম বেগম। এর আগেও ঝুমা আরো ৪ বার শ্রেষ্ঠ হয়েছিলেন। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দফতর সূত্র জানায়, মহিলাদের প্রসবপূর্ব সেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা, শিশু কিশোর প্রজনন সেবা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির উপর কাজের সফলতার ভিত্তিতেই শ্রেষ্ঠ পরিদর্শিকা নির্বাচন করে থাকে জুরিবোর্ড। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩.৩০ মিনিট পর্যন্ত অফিসিয়াল দায়িত্ব। কিন্তু ঝুমা এলাকার মহিলাদের প্রয়োজনে সপ্তাহে ২৪ ঘন্টাই দায়িত্ব পালনে প্রস’ত। অফিসের বাহিরেও যখন ইউনিয়নের যে প্রান্ত থেকে ডাক আসে ছুটে যান তিনি। সপ্তাহের একদিন বরাদ্ধ রেখেছেন জয়ধরকান্দির জন্য। তবে ডেলিভারি না থাকলে যান না। গত এক মাসে ঝুমার হাতে সন্তান নরমাল ভাবে সন্তান প্রসব করেছেন ১০ জন মহিলা। সকলেই এখন ভাল আছেন। ঝুমা আক্তার বলেন, শ্রেষ্ঠত্বের উপহার পেতে কার না ভাল লাগে। তবে মানুষকে সেবা প্রদানের লক্ষ নিয়েই কাজ করছি। যতদিন সুস্থ্যে আছি এই সেবা করেই যাব। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তা চাই। আমার এ সাফল্য ও সম্মান যেন আল্লাহ অটুট রাখেন। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, ঝুমার অর্জনে আমি আনন্দিত। আমার প্রতিটা কর্মী যেন ঝুমার মত কর্ম ক্ষেত্রে সফলতার স্বাক্ষর রাখেন এই প্রত্যাশা করি। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে সরাইলের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। ভবিষ্যতেও এগিয়ে যাওয়ার এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
মাহবুব খান বাবুল