এক সম্মেলনে ৩ কমিটি অনুমোদন! আওয়ামীলীগের সম্পাদক পদ পেলেন বিএনপি নেতা
- আপডেট সময় : ০১:৩৯:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জুন ২০২২ ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
সরাইলে ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা দীপচান সরকার এখন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। ইউনিয়ন বিএনপির এই নেতাকে পদ দিয়েছেন কমিটি গঠনের দায়িত্বে থাকা ইউনিয়ন উপজেলা ও জেলা আ’লীগের নেতৃস্থানীয় লোকজন। বিষয়টি দারূন কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে সমগ্র উপজেলায়। গত ৩ জুন শাহজাদাপুর ইউনিয়নের মলাইশ গ্রামে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে গঠন করা হয়েছে ওয়ার্ড আ’লীগের ৩ কমিটি। এ সম্মেলনে একই দিনে ও সময়ে অনুমোদন দিয়েছেন ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি। সেই সম্মেলনেই ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সম্পাদক হয়েছেন বিএনপি নেতা দীপচান সরকার। ওই ওয়ার্ডের একাধিক আ’লীগ নেতা বলছেন টাকায় অনেক কিছুই সম্ভব। বিএনপি’র পদধারী দীপচানের আ’লীগের পদ প্রাপ্তিই এর প্রমাণ । দায়িত্বশীলদের অনেকেই বলছেন ভুলক্রুটি হতেই পারে। দেখে সংশোধন করে নিব। আবার কেউ বলছেন দীপচান আওয়ামীলীগের লোক। তবে কাগজপত্র ও সরাইল বিএনপি’র তৎকালীন দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলছেন দীপচান ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত শাহজাদাপুর ইউনিয়ন বিএনপি কমিটির ৬৭ নম্বর সদস্য। অনুসন্ধানে ও স্থানীয় আ’লীগ সমর্থিত লোকজন সূত্র জানায়, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের এত লোক থাকতে কেন বিএনপি নেতা দীপচানকে ওয়ার্ড আ’লীগের দায়িত্বশীল পদ দেওয়া হল বুঝলাম না। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরাইল উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেনের স্বাক্ষরে অনুমোদন পায় শাহজাদাপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র কমিটি। এই কমিটির সভাপতি ছিলেন দেওড়া গ্রামের এডভোকেট মো. আজাদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শাহজাদাপুর গ্রামের মো. নূর মিয়া (নুরূল হক)। ৮৩ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটির ৬৭ নম্বর সদস্য ছিলেন দীপচান সরকার। খোলস পাল্টে তিনি এখন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা। নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্ধা দুইবারের সাবেক ইউপি সদস্য অমরেশ সরকার, ধাউরিয়া গ্রামের বাসিন্ধা সতিশ সরকার, অনিল সরকার ও রঞ্জিত সরকারসহ অনেকেই বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই দেখছি দীপচান বিএনপি করে। হঠাৎ করে কিভাবে? কি করে? আ’লীগ হয়ে গেল বুঝলাম না। বিএনপির কমিটিতে তার নামযুক্ত কাগজ দেখানোর পর জেলার নেতা মজিবুর রহমান দীপচানকে দায়িত্বশীল পদ দিতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু উনার কথা শুনেননি ইউনিয়নের নেতারা। উনারা দীপচানকে সেক্রেটারী বানাবেনই। স্বার্থ ছাড়া তো আর এমনটা হওয়ার কথা না। দীপচানকে পদ দিতে চাইলে স্থানীয় লোকজন সভাস্থলেই মানি না, মানি না বলে স্লোগান দিয়েছেন। এখনো কেউ তাকে মানছেন না। আ’লীগ দলীয় একনিষ্ঠ ও ত্যাগী লোকজন থাকার পরও কেন বিএনপি নেতাকে পদ দিলেন? এই প্রশ্ন আজ প্রতিটি আ’লীগ নেতা কর্মীর। আমরা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কমিটি আবার নতুন ভাবে গণতান্ত্রিক পক্রিয়ায় গঠনের দাবী জানাচ্ছি। সরাইল উপজেলা বিএনপি’র তৎকালীন সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রহমান বলেন, দীপচান ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত শাহজাদাপুর ইউনিয়ন কমিটির সদস্য। সে বিএনপি সমর্থিত লোকও। শাহজাদাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. শহিদুজ্জামান বলেন, উপজেলা ও জেলার নেতৃবৃন্দের নির্দেশে একই দিনে একই সভায় ৩ ওয়ার্ডের সম্মেলন করছি। ২২ বছর ধরে দল পরিচালনা করছি। কে বিএনপি’র সদস্য আছিল? এটা কোন বিষয় না। সবকিছু ক্লিয়ার করে দীপচানকে এনেছি। ৭৬ সালে ছিল ১ ভোট। এখনো ১ ভোট। এই লোককে পদ দিয়ে কি হবে? ভোটের দরকার। দলের লাভের জন্য দীপচানকে পদ দেয়া হয়েছে। টাকার বিষয়টি সত্য ও নয়। মিথ্যাও নয়।
মাহবুব খান বাবুল