ঢাকা ০৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোঃ ইসলাম, অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেফতার টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে ইউপিজি’র অগ্রণী ভূমিকা ২০২৫-এ গোল্ড প্রেসিডেন্ট’ সম্মাননা পেলেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন কারাগারে টাকা ছাড়া মেলেনা বন্দিদের সাক্ষাত পেশাগত অধিকার আদায়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কমিটির বিজয়নগরে নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ তানভীর জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‌উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাফওয়ান হোসেন(শাওন) নিখোঁজ বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার শ্যামলকে ফুলেল শুভেচ্ছা

আশুগঞ্জে প্রেমিকার আত্মহত্যা ও হৃদয় সাহা হত্যা মামলার প্রধান আসামী ফাহিম আত্বগোপনে॥ পুলিশের অভিযান অব্যাহত॥

আশুগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০১:১৮:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ৩৫২৬ বার পড়া হয়েছে

আশুগঞ্জে প্রেমিকার আত্মহত্যা ও হৃদয় সাহা হত্যা মামলার প্রধান আসামী ফাহিম আত্বগোপনে॥ পুলিশের অভিযান অব্যাহত॥

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রেমিকের সাথে বিয়ে না দেয়ায় আত্বহত্যা করেছে প্রেমিকা। আর এই আত্বহত্যার ঘটনায় প্রেমিকের বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ ও প্রেমিকের ভাই-বাবাকে মারধর করেছে প্রেমিকার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ৩১ মে ২০২৪ জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সোনারামপুর গ্রামে। এই ঘটনার জেরে প্রেমিকের বন্ধু হৃদয় সাহাকে মারধর করে মেরে ফেলেছে। এই ঘটনায় প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রেমিক বদরুজ্জামান ফাহিম। সে পশ্চিম সোনারামপুর গ্রামের রকিবুল হাসান মাসুম ও খোদেজা বেগম পপি দম্পত্বির বড় ছেলে। এ ঘটনায় প্রেমিক ফাহিমের মামা ইমরান আহমেদ মুন্নাকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ ৪ বৎসর যাবত একই গ্রাম ও ইউনিয়নের বাসিন্দা মোসাঃ তাহমিনা শেখ এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বদরুজ্জামান ফাহিমের । হঠাৎ করে প্রেমিকা তাহমিনা শেখ এর বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। তখন তাহমিনা শেখ বিষয়টি প্রেমিক বদরুজ্জামান ফাহিমকে জানান। এবং জানার পর তাহমিনা শেখ তাকে বিবাহ করার জন্য ফাহিমকে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু ফাহিম ছাত্র এবং বেকার কোনো কাজকর্ম না করায় এই মুহুর্তে তাহমিনা শেখকে বিবাহ করা সম্ভব নয় জানান। পরে গত ৩১ মে সকালে বিয়ের করার জন্য জোরপূর্বক ফাহিমের বাড়িতে চলে তাহমিনা শেখ। এবং বাড়িতে এসে অনশন করিতে থাকে এবং আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি ফাহিমের পিতা-মাতা প্রেমিকা তাহমিনা শেখের পিতা-মাতাকে জানান। এবং ফাহিমের সাথে তাহমিনা শেখের বিবাহের প্রস্তাব দিলে তাহমিনার পিতা-মাতা তাহাদের আত্মীয়-স্বজন নিয়ে বাড়িতে এসে তাহমিনাকে জোড়পূর্বকভাবে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় ফাহিমের পিতা-মাতাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তখন ফাহিমকে বাড়িতে না পেয়ে তার ছোট ভাইকে প্রচন্ড মারধর করে এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন। এবং তাহমিনার সাথে যোগাযোগ রাখিলে ফাহিমদকে গুম করিয়া ফেলবে বলে জানান। ফাহিমের পরিবার থেকে তাহমিনার পরিবার খুবই প্রভাবশালী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় ক্যাডার প্রকৃতির লোক বটে। পরবর্তীতে তাহমিনা শেখকে তার পরিবার অন্যত্র বিবাহ দেয়ার জন্য গতকাল ৩ জুন বিবাহের তারিখ নির্ধান করেন। কিন্তু বিবাহের আগেই গত ১ জুন দুপুর ১টার দিকে তাহমিনা শেখ পরিবারের অগোচরে নিজ ঘরের দরজা লাগিয়ে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে। তখন তাহমিনা শেখের পিতা মেয়ের আত্মহত্যার পর রাগান্বিত এই অত্মহত্যার জন্য ফাহিমের উপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে দেয়। এবং আত্মহত্যার জন্য ফাহিমকে দায়ি করেন। পরে তাহমিনার পিতা ও পিতার বংশের লোকজন নিয়ে দাড়ালো দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অতর্কিত আক্রমণ করে ফাহিমের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং পিতা ও ভাইকে মারাত্মক জখম করে। তার পিতাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। তার প্রেমিকা তাহমিনা শেখ আত্মহত্যার বিষয়টি ফাহিম জানায় পর ভয়ে আত্মগোপনে আছেন। যাওয়ার সময় ফাহিমের ছোট বেলার সংখ্যালঘু বন্ধু হৃদয় সাহার সহিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ফাহিমের কাপড় চুপর ও স্টুডেন্ট আইডি আনতে বলে। ফাহিমের কথা মতো হৃদয় সাহার কাপড় চুপর নিয়ে ফাহিমের কাছে যাওয়ার জন্য রওনা হয়ে পথে হৃদয়ের কাছে ফাহিমের কাপড় চুপর দেখতে পান তাহমিনা শেখের বাবা ও পরিবারের লোকজন। এ সময় তারা উত্তেজিত হয়ে হৃদয় সাহাকে দেশীয় অস্ত্র-স্বস্ত্র দিয়ে ব্যাপক মারধর করেন তাহমিনার পরিবার। একপর্যায়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে হৃদয় সাহা। কিন্তু হৃদয় সাহাকে তাহমিনা শেখের পরিবার মারধর করে মেড়ে ফেলে উল্টো ফাহিমের উপর দোষ চাপিয়ে দেয় তাহমিনার পরিবার। পরে হৃদয়ের বাবা ক্ষুদ্ধ হয়ে ফাহিমকে প্রধান আসামী করে আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর থেকে ফাহিম ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে। পুলিশ ও তাহমিনা শেখের পরিবার ও হৃদয় সাহার পরিবার ফাহিমকে আটকের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় প্রেমিক ফাহিমের মামা ইমরান আহমেদ মুন্নাকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানানা, ফাহিমকে গ্রেফতার করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে। তবে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহর রয়েছে। আশাকরি দ্রুত ফাহিমকে গ্রেফতার করতে পারবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আশুগঞ্জে প্রেমিকার আত্মহত্যা ও হৃদয় সাহা হত্যা মামলার প্রধান আসামী ফাহিম আত্বগোপনে॥ পুলিশের অভিযান অব্যাহত॥

আপডেট সময় : ০১:১৮:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রেমিকের সাথে বিয়ে না দেয়ায় আত্বহত্যা করেছে প্রেমিকা। আর এই আত্বহত্যার ঘটনায় প্রেমিকের বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ ও প্রেমিকের ভাই-বাবাকে মারধর করেছে প্রেমিকার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ৩১ মে ২০২৪ জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সোনারামপুর গ্রামে। এই ঘটনার জেরে প্রেমিকের বন্ধু হৃদয় সাহাকে মারধর করে মেরে ফেলেছে। এই ঘটনায় প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রেমিক বদরুজ্জামান ফাহিম। সে পশ্চিম সোনারামপুর গ্রামের রকিবুল হাসান মাসুম ও খোদেজা বেগম পপি দম্পত্বির বড় ছেলে। এ ঘটনায় প্রেমিক ফাহিমের মামা ইমরান আহমেদ মুন্নাকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ ৪ বৎসর যাবত একই গ্রাম ও ইউনিয়নের বাসিন্দা মোসাঃ তাহমিনা শেখ এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বদরুজ্জামান ফাহিমের । হঠাৎ করে প্রেমিকা তাহমিনা শেখ এর বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। তখন তাহমিনা শেখ বিষয়টি প্রেমিক বদরুজ্জামান ফাহিমকে জানান। এবং জানার পর তাহমিনা শেখ তাকে বিবাহ করার জন্য ফাহিমকে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু ফাহিম ছাত্র এবং বেকার কোনো কাজকর্ম না করায় এই মুহুর্তে তাহমিনা শেখকে বিবাহ করা সম্ভব নয় জানান। পরে গত ৩১ মে সকালে বিয়ের করার জন্য জোরপূর্বক ফাহিমের বাড়িতে চলে তাহমিনা শেখ। এবং বাড়িতে এসে অনশন করিতে থাকে এবং আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি ফাহিমের পিতা-মাতা প্রেমিকা তাহমিনা শেখের পিতা-মাতাকে জানান। এবং ফাহিমের সাথে তাহমিনা শেখের বিবাহের প্রস্তাব দিলে তাহমিনার পিতা-মাতা তাহাদের আত্মীয়-স্বজন নিয়ে বাড়িতে এসে তাহমিনাকে জোড়পূর্বকভাবে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় ফাহিমের পিতা-মাতাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তখন ফাহিমকে বাড়িতে না পেয়ে তার ছোট ভাইকে প্রচন্ড মারধর করে এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন। এবং তাহমিনার সাথে যোগাযোগ রাখিলে ফাহিমদকে গুম করিয়া ফেলবে বলে জানান। ফাহিমের পরিবার থেকে তাহমিনার পরিবার খুবই প্রভাবশালী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় ক্যাডার প্রকৃতির লোক বটে। পরবর্তীতে তাহমিনা শেখকে তার পরিবার অন্যত্র বিবাহ দেয়ার জন্য গতকাল ৩ জুন বিবাহের তারিখ নির্ধান করেন। কিন্তু বিবাহের আগেই গত ১ জুন দুপুর ১টার দিকে তাহমিনা শেখ পরিবারের অগোচরে নিজ ঘরের দরজা লাগিয়ে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে। তখন তাহমিনা শেখের পিতা মেয়ের আত্মহত্যার পর রাগান্বিত এই অত্মহত্যার জন্য ফাহিমের উপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে দেয়। এবং আত্মহত্যার জন্য ফাহিমকে দায়ি করেন। পরে তাহমিনার পিতা ও পিতার বংশের লোকজন নিয়ে দাড়ালো দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অতর্কিত আক্রমণ করে ফাহিমের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং পিতা ও ভাইকে মারাত্মক জখম করে। তার পিতাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। তার প্রেমিকা তাহমিনা শেখ আত্মহত্যার বিষয়টি ফাহিম জানায় পর ভয়ে আত্মগোপনে আছেন। যাওয়ার সময় ফাহিমের ছোট বেলার সংখ্যালঘু বন্ধু হৃদয় সাহার সহিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ফাহিমের কাপড় চুপর ও স্টুডেন্ট আইডি আনতে বলে। ফাহিমের কথা মতো হৃদয় সাহার কাপড় চুপর নিয়ে ফাহিমের কাছে যাওয়ার জন্য রওনা হয়ে পথে হৃদয়ের কাছে ফাহিমের কাপড় চুপর দেখতে পান তাহমিনা শেখের বাবা ও পরিবারের লোকজন। এ সময় তারা উত্তেজিত হয়ে হৃদয় সাহাকে দেশীয় অস্ত্র-স্বস্ত্র দিয়ে ব্যাপক মারধর করেন তাহমিনার পরিবার। একপর্যায়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে হৃদয় সাহা। কিন্তু হৃদয় সাহাকে তাহমিনা শেখের পরিবার মারধর করে মেড়ে ফেলে উল্টো ফাহিমের উপর দোষ চাপিয়ে দেয় তাহমিনার পরিবার। পরে হৃদয়ের বাবা ক্ষুদ্ধ হয়ে ফাহিমকে প্রধান আসামী করে আরো একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর থেকে ফাহিম ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে। পুলিশ ও তাহমিনা শেখের পরিবার ও হৃদয় সাহার পরিবার ফাহিমকে আটকের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় প্রেমিক ফাহিমের মামা ইমরান আহমেদ মুন্নাকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানানা, ফাহিমকে গ্রেফতার করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে। তবে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহর রয়েছে। আশাকরি দ্রুত ফাহিমকে গ্রেফতার করতে পারবো।