Dhaka 2:03 pm, Tuesday, 7 May 2024
News Title :
সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল মা-বাবার নিয়মিত ঝগড়া বিরক্ত হয়ে থানায় শিশু সন্তান সিয়াম পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩

সিএনজি যাত্রী বেশে ডাকাতি’ ছুরিকাঘাতে সেনা সদস্য আহত

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:27:48 pm, Friday, 7 April 2023
  • 82 Time View

সিএনজি যাত্রী বেশে ডাকাতি' ছুরিকাঘাতে সেনা সদস্য আহত

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে মো. আজি মাহমুদ (২৩) নামের এক সেনা সদস্য আহত হয়েছেন। দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সেনা সদস্যের কাছ থেকে নগদ টাকা মুঠোফোনসেট, স্বর্ণালঙ্কারসহ ডাকাতরা লুটে নিয়েছে ৪১ হাজার টাকার মালামাল। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের ইসলামাবাদ নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরই মহাসড়কের বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ পয়েন্টে অভিযানে নেমে পড়ে সরাইল থানা পুলিশ। এক ঘন্টার মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করেন দুই সিএনজি চালককে। মহাসড়কে চলাচলকারী ৪০টি সিএনজি চালিত অটোরিকশাও আটক করে থানায় আসেন পুলিশ। এ ঘটনায় সেনা সদস্য নিজে বাদী হয়ে সরাইল থানায় আজ শুক্রবার ভোরে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ, ভুক্তভোগি ও মামলা সূত্র জানায়, ঢাকার সাভার ক্যান্টনমেন্টে সাধারণ সেনা সদস্য পদে চাকরি করেন আজি মাহমুদ। তিনি বিজয়নগর উপজেলার আদমপুর গ্রামের আবুল কালাম ভূইয়ার ছেলে। দুই মাসের ছুটি নিয়ে কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন ওই সেনা সদস্য। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে সরাইলের বিশ্বরোড মোড় থেকে চান্দুরা যাওয়ার উদ্যেশ্যে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ওঠেন। ওই সিএনজিতে আগেই আরো দুইজন যাত্রী বসা ছিল। তিনি বসেন একেবারে বাম পাশে। চালকসহ ৪ জন নিয়েই রওনা দেয় সিএনজিটি। মহাসড়কের ইসলামাবাদ ও বাড়িউড়ার মাঝামাঝি স্থানে যাওয়ার পর ডান পাশে যাত্রীর কথায় সিএনজিটি থামান চালক। তখন ডান পাশের ওই যাত্রী ঘুরে গিয়ে বাম পাশে বসেন। ওই দুই যাত্রীর মাঝখানে পড়েন সেনা সদস্য আজি মাহমুদ। মূহুর্তের মধ্যে যাত্রীবেশে ডান পাশে বসা ডাকাত মাহমুদকে ছুরি ধরেন। বাম পাশের ডাকাতও সেনা সদস্যের উপর হামলা চালায়। ডাকাতদের সাথে সেনা সদস্যের ধস্তাধস্তি চলে। এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে সেনা সদস্যের বাম হাতের ৪টি আঙ্গুলের অংশ বিশেষ কেটে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় দূর্বল হয়ে পড়েন সেনা সদস্য। ডাকাতরা তাঁর কাছ থেকে নগদ ৭০০ টাকা, আইডি কার্ড নং-১৬২০৮৬২, হাওয়াই ৬ প্রাইম মুঠোফোন সেট, নতুন কাপড় ভর্তি ২টি ব্যাগ ও একটি স্বর্ণের আংটিসহ প্রায় ৪১ হাজারেরও অধিক টাকার মালামাল লুটে নেয়। আহত সেনা সদস্য বাড়িউড়া বাজারে একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। ঘটনার পরই মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান শুরূ করেন সরাইল থানা পুলিশের একাধিক দল। অভিযানকালে পুলিশ মহাসড়কে চলাচলকারী প্রায় ৪০ টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। ঘন্টা খানেক পর ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সিএনজি চালক সেন্টু লাল দাসকে (২৫) ও রিপন মিয়া নামের দুই সিএনজি চালককে আটক করেন পুলিশ বাদীর সনাক্ত মতে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে সেন্টু লালকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন। সেন্টু লাল বিজয়নগর উপজেলার বেকীনগর গ্রামের জহর লাল দাসের ছেলে। তার বিরূদ্ধে মাদকের দুটি মামলা রয়েছে। আর রিপনের বাড়ি সরাইল উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামে। ভুক্তভোগি সেনা সদস্য আজি মাহমুদ বলেন, ওরা যাত্রী বেশে ডাকাত। কৌশলে আমাকে ওরা মাঝখানে ফেলে ছুরিকাঘাত করেছে। লুটে নিয়েছে আমার সবকিছু। আমি মামলা করেছি। আটক দু’জনই ঘটনায় জড়িত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই জয়নাল আবেদীন-১ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাদীর সনাক্ত অনুযায়ী সেন্টু লাল গ্রেপ্তার। অপর একজন আটক আছে। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। একটু সময় লাগতে পারে। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, আমরা রাতেই অভিযান করে আসামী গ্রেপ্তার করেছি। থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের পক্রিয়া চলছে।

প্রসঙ্গত: সরকার ও উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও সরাইল-মাধবপুর মহাসড়কে দিব্বি চলছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। এক শ্রেণির দালাল চক্র মাসিক মাসোয়ারায় হাইওয়ে পুলিশের সাথে চুক্তি করে দেদারছে মহাসড়কে দাবরিয়ে চালাচ্ছে সিএনজি। মাঝেমধ্যে দালালদেরও সিএনজি’র পেছনে চলতে দেখা যায়। এ কাজে পরিচিতির জন্য সিএনজি গুলোতে বিশেষ চিহ্ন ও ষ্টিকার ব্যবহার করা হয়। অনেক দালাল চালকদের হাতে দিয়ে রেখেছেন চাবির রিং। ওই রিং দেখালেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর এসব সিএনজি গুলোতে বিশ্বরোডের মোড়ে ও আশেপাশে প্রায়ই এমন যাত্রীবেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটে থাকে। সিএনজির মহিলা যাত্রীদেরকে আরেকটি চক্র কৌশলে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে ধরিয়ে দেয় পিতল। এমন সব অপকর্ম নিয়মিতই হচ্ছে বিশ্বরোড মোড়ে, সরাইল-চান্দুরা-মাধবপুর মহাড়কে ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কে। বিশেষ করে ঈদ বা পুঁজার সময় ওই চক্র গুলো মহাসড়কে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল

সিএনজি যাত্রী বেশে ডাকাতি’ ছুরিকাঘাতে সেনা সদস্য আহত

Update Time : 03:27:48 pm, Friday, 7 April 2023

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে মো. আজি মাহমুদ (২৩) নামের এক সেনা সদস্য আহত হয়েছেন। দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সেনা সদস্যের কাছ থেকে নগদ টাকা মুঠোফোনসেট, স্বর্ণালঙ্কারসহ ডাকাতরা লুটে নিয়েছে ৪১ হাজার টাকার মালামাল। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের ইসলামাবাদ নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরই মহাসড়কের বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ পয়েন্টে অভিযানে নেমে পড়ে সরাইল থানা পুলিশ। এক ঘন্টার মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করেন দুই সিএনজি চালককে। মহাসড়কে চলাচলকারী ৪০টি সিএনজি চালিত অটোরিকশাও আটক করে থানায় আসেন পুলিশ। এ ঘটনায় সেনা সদস্য নিজে বাদী হয়ে সরাইল থানায় আজ শুক্রবার ভোরে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ, ভুক্তভোগি ও মামলা সূত্র জানায়, ঢাকার সাভার ক্যান্টনমেন্টে সাধারণ সেনা সদস্য পদে চাকরি করেন আজি মাহমুদ। তিনি বিজয়নগর উপজেলার আদমপুর গ্রামের আবুল কালাম ভূইয়ার ছেলে। দুই মাসের ছুটি নিয়ে কর্মস্থল থেকে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন ওই সেনা সদস্য। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে সরাইলের বিশ্বরোড মোড় থেকে চান্দুরা যাওয়ার উদ্যেশ্যে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ওঠেন। ওই সিএনজিতে আগেই আরো দুইজন যাত্রী বসা ছিল। তিনি বসেন একেবারে বাম পাশে। চালকসহ ৪ জন নিয়েই রওনা দেয় সিএনজিটি। মহাসড়কের ইসলামাবাদ ও বাড়িউড়ার মাঝামাঝি স্থানে যাওয়ার পর ডান পাশে যাত্রীর কথায় সিএনজিটি থামান চালক। তখন ডান পাশের ওই যাত্রী ঘুরে গিয়ে বাম পাশে বসেন। ওই দুই যাত্রীর মাঝখানে পড়েন সেনা সদস্য আজি মাহমুদ। মূহুর্তের মধ্যে যাত্রীবেশে ডান পাশে বসা ডাকাত মাহমুদকে ছুরি ধরেন। বাম পাশের ডাকাতও সেনা সদস্যের উপর হামলা চালায়। ডাকাতদের সাথে সেনা সদস্যের ধস্তাধস্তি চলে। এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে সেনা সদস্যের বাম হাতের ৪টি আঙ্গুলের অংশ বিশেষ কেটে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় দূর্বল হয়ে পড়েন সেনা সদস্য। ডাকাতরা তাঁর কাছ থেকে নগদ ৭০০ টাকা, আইডি কার্ড নং-১৬২০৮৬২, হাওয়াই ৬ প্রাইম মুঠোফোন সেট, নতুন কাপড় ভর্তি ২টি ব্যাগ ও একটি স্বর্ণের আংটিসহ প্রায় ৪১ হাজারেরও অধিক টাকার মালামাল লুটে নেয়। আহত সেনা সদস্য বাড়িউড়া বাজারে একটি ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন। ঘটনার পরই মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান শুরূ করেন সরাইল থানা পুলিশের একাধিক দল। অভিযানকালে পুলিশ মহাসড়কে চলাচলকারী প্রায় ৪০ টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। ঘন্টা খানেক পর ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে সিএনজি চালক সেন্টু লাল দাসকে (২৫) ও রিপন মিয়া নামের দুই সিএনজি চালককে আটক করেন পুলিশ বাদীর সনাক্ত মতে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে সেন্টু লালকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন। সেন্টু লাল বিজয়নগর উপজেলার বেকীনগর গ্রামের জহর লাল দাসের ছেলে। তার বিরূদ্ধে মাদকের দুটি মামলা রয়েছে। আর রিপনের বাড়ি সরাইল উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামে। ভুক্তভোগি সেনা সদস্য আজি মাহমুদ বলেন, ওরা যাত্রী বেশে ডাকাত। কৌশলে আমাকে ওরা মাঝখানে ফেলে ছুরিকাঘাত করেছে। লুটে নিয়েছে আমার সবকিছু। আমি মামলা করেছি। আটক দু’জনই ঘটনায় জড়িত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই জয়নাল আবেদীন-১ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাদীর সনাক্ত অনুযায়ী সেন্টু লাল গ্রেপ্তার। অপর একজন আটক আছে। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। একটু সময় লাগতে পারে। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, আমরা রাতেই অভিযান করে আসামী গ্রেপ্তার করেছি। থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের পক্রিয়া চলছে।

প্রসঙ্গত: সরকার ও উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও সরাইল-মাধবপুর মহাসড়কে দিব্বি চলছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা। এক শ্রেণির দালাল চক্র মাসিক মাসোয়ারায় হাইওয়ে পুলিশের সাথে চুক্তি করে দেদারছে মহাসড়কে দাবরিয়ে চালাচ্ছে সিএনজি। মাঝেমধ্যে দালালদেরও সিএনজি’র পেছনে চলতে দেখা যায়। এ কাজে পরিচিতির জন্য সিএনজি গুলোতে বিশেষ চিহ্ন ও ষ্টিকার ব্যবহার করা হয়। অনেক দালাল চালকদের হাতে দিয়ে রেখেছেন চাবির রিং। ওই রিং দেখালেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর এসব সিএনজি গুলোতে বিশ্বরোডের মোড়ে ও আশেপাশে প্রায়ই এমন যাত্রীবেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটে থাকে। সিএনজির মহিলা যাত্রীদেরকে আরেকটি চক্র কৌশলে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে ধরিয়ে দেয় পিতল। এমন সব অপকর্ম নিয়মিতই হচ্ছে বিশ্বরোড মোড়ে, সরাইল-চান্দুরা-মাধবপুর মহাড়কে ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কে। বিশেষ করে ঈদ বা পুঁজার সময় ওই চক্র গুলো মহাসড়কে সক্রিয় হয়ে ওঠে।