সরাইল পিডিবি’র অভিযান পাঁচ গ্যারেজের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ২৯ মেশিন জব্দ

0
378

অবৈধ উপায়ে অনৈতিক পন্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য করে আসছে একটি সিন্ডিকেট। জব্দ করা হয়েছে চার্জের কাজে ব্যবহৃত ২৯ টি মেশিন। অবৈধ ব্যবহারকারীদের পেছনে স্থানীয় পিডিবি’র এক শ্রেণির কর্মকর্তা কর্মচারির যোগ সাজসের বিষয়টিও এখন চাওর হচ্ছে। তাদের চুরির বোঝা টানতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের। এদেরকে ধরতে গতকাল শনিবার ভোরে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে সরাইল পিডিবি। অভিযানকালে তারা ৫টি গ্যারেজের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। হাতেনাতে ধৃত অবৈধ পন্থায় ব্যবহার কারীরা হলো- সরাইল সদরের প্রাত:বাজার এলাকার রনি, ঈশা খা মার্কেটের আওয়াল, শাহবাজপুর আতকা বাজার এলাকার খোকন, দিঘীরপাড়ের জনৈক মহিলা ও কালিকচ্ছের ইমাম হোসেন। সরজমিনে গ্রাহক, স্থানীয় লোকজন ও পিডিবি অফিস সূত্র জানায়, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা সড়কে আসার পর ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে গ্যারেজ। সরাইল সদর ইউনিয়নসহ অন্যান্য বেশ ইউনিয়নে গড়ে ওঠেছে গ্যারেজ। গ্যারেজ মালিকরা ব্যবসা করছেন চার্জের। অটোরিকশা গুলো গ্যারেজে রেখে মেশিনে চার্জে লাগায়। পরিপূর্ণ চার্জ হওয়ার পর নিয়ে যায় অটোরিকশা। এ জন্য গ্যারেজ মালিককে রিকশার ভাড়াসহ দিতে হচ্ছে ১২০ টাকা। প্রত্যেকটি গ্যারেজে প্রতি রাতে ৩০-৩৫টি অটোরিকশা চার্জ দেয়। চার্জ দিয়ে মালিকরা প্রতি মাসে আমদানি করে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। বৈধভাবে বিল প্রদান করলে গ্যারেজ মালিকরা মাসে খরচ বৈদ্যুতিক বিল মিটিয়েও ৪০-৪৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারেন। কিন্তু তারা অধিক মুনাফার আশায় অবৈধপন্থা অবলম্বন করছেন। মিটার নেয়ার সময় করেন আরেক আকাম। বাণিজ্য করবেন অথচ মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবাসিক সংযোগ নিচ্ছেন। কিলো ওয়াটেও করছেন চুরি। দিনে সব ঠিকঠাক থাকলেও রাতে পাল্টে যায় ব্যবহারের চিত্র। সাধারণত: সন্ধ্যার পরই শুরূ হয় রিকশায় চার্জ দেয়া। প্রত্যেকটি গাড়ির জন্য তারা ব্যবহার করেন একটি চার্জার মেশিন। মিটারের বাহিরের অংশে ক্যাবল যুক্ত করে দেদারছে দিচ্ছেন চার্জ। বিদ্যু খরচ হচ্ছে পিডিবি’র। ফাঁকে ব্যবসা করছেন গ্যারেজ মালিক সিন্ডিকেটের সদস্যরা। মাস শেষে ব্যবহৃত রিডিং এর হিসাব মিলাতে হিমশিম খায় পিডিবি কর্তৃপক্ষ। তখন উদুর পিন্ডি চাপিয়ে দেয়া হয় বুদুর গাঢ়ে। ডিজিটাল মিটারের সাধারণ গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয় ভৌতিক বিলের বোঝা। বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন পিডিবি’র একাধিক কর্মচারী। অন্য একটি সূত্র জানায়, গত ২-৩ বছর আগে এখানকার সড়কে নেমেছে অটোরিকশা। ফলে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ টি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নামছেই। সুযোগ বুঝে গ্যারেজ খোলার হিড়িক পড়েছে। কোন রকমে একটি সংযোগ নিতে পারলেই হলো। শুধু ব্যবসা আর ব্যবসা। সমগ্র উপজেলায় এখন পর্যন্ত দেড়/দুই শত গ্যারেজ তৈরী হয়েছে। এরা প্রত্যেকেই চার্জের ব্যবসা করে আসছেন। তারা দিনে রাতে দুই ভাবে সংযোগ ব্যবহার করে আসছেন। সমাজ কর্মী মো. রওশন আলী বলেন, গ্যারেজের নামে অনেকেই চুরাই পথের সংযোগ ব্যবহার করে অটোরিকশায় চার্জ দিয়ে ব্যবসা করছেন। এমনসব অমকর্মের পেছনে পিডিবি’র লোকজনের সহায়তা না থাকলে ৩ বছরেরও অধিক সময় কিভাবে পাড়েন। আর বিদ্যুতের বিলের ঘানিটা টানতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের। অনেক গ্রাহককেই পিডিবি ধরিয়ে দিচ্ছেন ব্যবহারের অতিরিক্ত বিল। সমাধানের জন্য গেলে ‘পরের মাসে ঠিক করে দিব’ এমন কমন বাক্য ব্যবহার করে বিদায় করেন। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আব্দুর রউফ চুরাই পথে বিদ্যুৎ ব্যবহার কালে ৫ গ্যারেজকে হাতেনাতে ধরার কথা স্বীকার করে বলেন, আজ আমি জরূরী কাজে বাহিরে আছি। আগামীকাল (আজ রোববার) অফিসে এসে জরিমানা অথবা আইনগত ব্যবস্থা নিব। সমগ্র উপজেলায় এ জাতীয় গ্যারেজ কতটি আছে আমি রেকর্ড না দেখে বলতে পারছি না।

মাহবুব খান বাবুল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here