মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বশীল লোকদের ডেকে এনে দিনভর নির্বাচনী সভা করেছেন জেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকার দলীয় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আল মামুন সরকার। যদিও ব্যানারে লেখা ছিল মতবিনিময় সভা। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। গতকাল সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সরাইলের জেলা পরিষদের সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই সভা। প্রায় ৩০ মিনিটের বক্তব্যে তিনি ১২০ জন প্রতিনিধির কাছে চাইলেন ভোট। তাদেরকে করিয়েছেন ভূরিভোজ। সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে অথর্ব অযোগ্য ও মোনাফেকও বলেছেন। বক্তব্যে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার অঙ্গিকার করেছেন অনেক ভোটার। অনেকে করেছেন কৌশল। সরজমিনে দেখা যায়, গতকাল রবিবার সকালে টেবিল, চেয়ার, ফ্যান, লাইট ও ব্যানারসহ প্রস্তুত ওই অডিটরিয়াম। ১০টার পর আসতে থাকেন ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্যরা। মঞ্চে আসন গ্রহন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আ’লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আল মামুন সরকার। সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় উপস্থিত হন জেলা আ’লীগের সহ সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান বাবুল, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এডভোকেট মুহাম্মদ নাজমুল হোসেন, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফ, জেলা স্বেচ্চাসেবক লীগের সভাপতি এড. লোকমান হোসেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন আ’লীগের নেতৃবৃন্দ ও ৯ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। সরাইল আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রাব্বির সঞ্চালনায় শুরূতেই বক্তব্য রাখেন আল মামুন সরকার। তিনি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম এমএসসি’র গত পাঁচ বছরের কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, শফিকুল ইসলাম এবার দলের সাথে ওয়াদা ভঙ্গ করে প্রার্থী হয়েছেন। ওয়াদা ভঙ্গকারীরা মোনাফেক। আপনারা কিন্তু ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের কোন রেজুলেশন ছাড়াই গত পাঁচ বছর প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর আজ পর্যন্ত তিনি একটি পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিদর্শন করতে যাননি। করোনা মহামারীর সময় কোন সেক্টরের লোক বসে থাকেনি। সাধ্যমত সকলেই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন’ শফিকুল ইসলাম জেলার কোথাও সহযোগিতা করেননি। জেলায় সরকারি সকল কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ১৯টি কমিটি রয়েছে। তিনি প্রত্যেকটি কমিটির ১ নম্বর সদস্য। গত ৫ বছরে অথর্ব অযোগ্য চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম একটি মির্টিং-এ ও উপস্থিত হননি। দলীয় জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় গুরূত্বপূর্ণ কোন দিবসের কর্মসূচিতেও উনাকে পাওয়া যায়নি। তিনি জেলা পরিষদকে শুধু কূড়ে কূড়ে খেয়েছেন। প্রতি মাসে ৬০ টাকা ভাতা নিয়েছেন। সরকারি গাড়ি বাড়ি ভোগ করেছেন। কিন্তু ১টি দিনের জন্য, ১টি ঘন্টার জন্যও জনগণের পাশে যাননি। আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পত্র মনোনয়ন দিয়েছেন। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। আমি চেয়ারম্যান হতে পারলে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হব না। আমি হব সকলের চেয়ারম্যান। এমপি স্লিপ দিলেও চেয়ারম্যান মেম্বারকে না জানিয়ে কোন কাজ হবে না। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনের মাধ্যমেই সকল প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। সভায় সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও কয়েকজন ইউপি সদস্য (পুরূষ নারী) বক্তব্য রাখেন। অনেকেই বক্তব্যে প্রকাশ্যে আল মামুন সরকারকে ভোট দেয়ার অঙ্গিকার করেন। কেউ কেউ কৌশলে ইঙ্গিত করে যান। এ বিষয়ে জানতে জেলা নির্বাচন অফিসার ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারি রিটার্নিং অফিসার মো. জিল্লুর রহমানের মুঠোফোনে (০১৭১৫-৮৮২২০৪) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।