সরাইলে দিনে দুপুরে অজ্ঞান পার্টির অভিনব কৌশলে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়েছেন নেকজান বেগম (৫০) নামের এক প্রবাসীর স্ত্রী। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের পর নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ১টি স্বর্ণের চেইন ও মুঠোফোন সেট ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টার মধ্যে উপজেলা সদরের বিকাল বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নেকজান বেগম নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের মহিষবেড় গ্রামের পাগলা পাড়ার প্রবাসী লাফু মিয়ার স্ত্রী। ভুক্তভোগী সূত্র জানায়, জনতা ব্যাংক সরাইল শাখায় নেকজানের একাউন্ট। ওই একাউন্টে নেকজানের প্রবাসী স্বামী টাকা পাঠান। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নিজের ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন নেকজান। ব্যাংকের ভেতরেই নেকজানের এক স্বজনকে পাওনা বাবদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে দেন। অবশিষ্ট টাকা নিজের ভ্যানেটি ব্যাগে রেখে সরাইল বিকাল বাজারের দিকে যেতে থাকেন নেকজান। বিসমিল্লাহ ওয়েল ভান্ডারের কাছে যাওয়ার পরই নেকজানকে পেছন থেকে কে বা কাহারা চাচী চাচী বলে ডাকতে থাকেন। পেছনে থাকানোর পরই নেকজানের কাছে আসেন অজ্ঞাতনামা ৫০ বয়সের একজন লোক ও ১৮ বছর বয়সের দুই যুবক। তাদের হাতে কাগজে মোড়ানো প্যাকেট। তারা নেকজানকে প্যাকেটটি দেখিয়ে বলেন, চাচী আমরা বিপদে পড়েছি। একটা মাল নিয়ে মিষ্টির দোকানে বিক্রি করতে এসেছিলাম। বিক্রি করতে পারিনি। এ কথা শুনে হতবিহবল হয়ে নেকজান বলেন আমি এখন কি করব। পরক্ষণেই স্বাভাবিক বোধ শক্তি হারিয়ে ফেলেন নেকজান। পরে ওই দুইজন লোক নেকজানের পেছনে হাঁটতে থাকে। এক সময় নেকজান অল্প সময়ের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। নেকজানের বোধ শক্তি ফিরে আসার আগেই ব্যাগের ভেতর থেকে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, গলায় থাকা আধা ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও মুঠোফোন সেটটি তারা ছিনিয়ে নেয়। আস্তে আস্তে জ্ঞান ফিরে স্বাভাবিক হয়ে নেকজান দেখেন তিনি বড়দেওয়ান পাড়া কবরস্থানের কাছে আছেন। কাগজে মোড়ানো প্যাকেটটি নেকজানের হাতে থাকলেও টাকাসহ ব্যাগ, গলার চেইন ও মুঠোফোন সেটটি নেই। হতভম্ভ হয়ে পড়েন নেকজান। হাতে থাকা কাগজে মোড়ানো প্যাকেটটি খুলে দেখেন ভেতরে আধা কেজি ওজনের একটি হুইল পাউডারের প্যাকেট। মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন তিনি। নিজের আত্মীয় স্বজনকে খোঁজার চেষ্টা করেন। সংসারের বেহাল দশায় এতগুলি টাকা খুঁইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন নেকজান। নেকজান বলেন, আমার সবশেষ। আইনের আশ্রয় নিব। এ ঘটনায় বিকাল বাজারের ব্যবসায়িদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেস পয়েন্ট দোকানের মালিক মো. পাবেল মিয়া বলেন, সরাইল বাজারে এ ধরণের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। গত ৪/৫ দিন আগে কবুতর হাট থেকে দুইজন লোক সাঘরদীঘির পাড়ের জীবন মিয়ার আম্মাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে স্থানীয় মডেল স্কুলের ভেতরে নিয়ে গলা থেকে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে গেছে। সিসি ক্যামেরায় চিহ্নিত করে এই চক্রকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তিনি। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, এ বিষয়ে লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি কেউ। তবে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশ তদন্ত করেছেন। ভুক্তভোগী ওই মহিলাকে ছিনিয়ে নেওয়া মুঠোফোন সেটটির কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছি। কিন্তু আজও ( শুক্রবার) আসেনি।
মাহবুব খান বাবুল