ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশিষ্টজনদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে একুশের পদাবলী শীর্ষক আবৃত্তি অনুষ্ঠান
আবৃত্তিশিল্পীদের নান্দনিক পরিবেশনা আমাদের মুগ্ধ করেছে,আলোড়িত করেছে-এডিসি রুহুল আমিন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশিষ্টজনদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে একুশের পদাবলী শীর্ষক আবৃত্তি অনুষ্ঠান। গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিকালে শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের দিনব্যাপী নানা কর্মসূচীর অংশ হিসাবে তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পরিবেশনায় এসময় মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও ভাষা আন্দোলন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের বরেন্য কবিদের লেখা বিখ্যাত কবিতা উপস্থাপিত হয়েছে। কবিতাগুলোর লেখার প্রেক্ষাপট-কবির পরিচিতি উপস্থাপন,সমিল গানের খন্ডাংশ পরিবেশন এবং একক ও বৃন্দ আবৃত্তি পুরো আয়োজনকে ব্যতিক্রমী ধারায় এগিয়ে নেয়। এসময় মিলনায়তনে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার দর্শক-শ্রোতা মন্ত্রমুগ্ধের মতো অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। পিনপতন নীরবতার ভেতর দিয়ে শ্রোতারা আবৃত্তি-কথা ও গানের সাথে একাত্ম হয়ে উঠেন। অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে উপস্থিত জেলার বিশিষ্টজনেরা তুমুল প্রশংসা করেন একুশের পদাবলী শীর্ষক আবৃত্তি অনুষ্ঠানের। তারা উচ্ছসিত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আবৃত্তি নিয়ে ব্যাপক আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এএসএম শফিকুল্লাহর সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রুহুল আমিন। অনুভূতি ব্যক্ত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মো.শাহীন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি,সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা মুজিব,ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী,বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হোরায়রাহ,শিক্ষাবীদ-লেখক অধ্যক্ষ সোপানুল ইসলাম,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফম কাউসার এমরান,জেলা নাগরিক ফোরাম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত,আবরনি আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র নির্বাহী পরিচালক হাবিবুর রহমান পারভেজ,নদী ও পরিবেশ সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন নোঙর সাধারণ সম্পাদক খালেদা মুন্নী,মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী আনোয়ারা বেগম। ধন্যবাদ বক্তব্য দেন সংগঠনের সহকারি পরিচালক উত্তম কুমার দাস। অনুষ্ঠানে তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পরিচালক মো.মনির হোসেন এর নির্দেশনা,সঞ্চালনা ও ধারাবর্ণনায় একক আবৃত্তি করেন তিতাস সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদ সভাপতি রোকেয়া দস্তগীর,তিতাস আবৃত্তি সংগঠন সহকারি পরিচালক উত্তম কুমার দাস,সুজন সরকার,আবৃত্তিশিল্পী রেজা এ রাব্বী,ফারদিয়া আশরাফি নাওমী ও বীথি। সঙ্গীত পরিবেশন করেন সোহাগ রায়,রেজা এ রাব্বী,ফারদিয়া আশরাফি নাওমী ও স্নেহা বিশ্বাস। এসময় সংগঠনের বড়,মধ্যম ও ছোটদল তিনটি বৃন্দ পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে একুশের প্রথম কবিতা কবি মাহবুবুল আলম চৌধুরীর-কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী এসেছি,একুশের প্রভাত ফেরীর গান খ্যাত কবি আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী কবিতা-একুশে ফেব্রুয়ারি,কবি আলাউদ্দিন আল আজাদের-স্মৃতিস্তম্ভ,কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কবিতা-কোনো এক মাকে,কবি আসাদ চৌধুরীর কবিতা-জানা জানি,ত্রিপুরার কবি অনিল সরকারের কবিতা-একুশ আছে,পশ্চিমবঙ্গের কবি দীপ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা-আ মরি বাংলা ভাষা পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুহুল আমিন বলেন,একুশের পদাবলী আবৃত্তি অনুষ্ঠান আমাদেরকে কবিতার পংক্তিতে ব্যাপকভাবে আবিষ্ট করে রেখেছে। এমন নান্দনিক অনুষ্ঠান যে কোনো মানুষকে আলোড়িত করবে। আবৃত্তিশিল্পীরা তাদের কন্ঠ দিয়ে মহান ভাষা আন্দোলন ও এর নানা দিক আমাদের সামনে শিল্পীতভাবে চিত্রায়িত করেছেন। তাদের মুখস্তজ্ঞান,পরিমিত আবেগ,হৃদয়গ্রাহী পরিবেশনা এ অনুষ্ঠানকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন,কবিতা-কথা ও গানের মাধ্যমে একুশের পদাবলী অনুষ্ঠান আমাদের ব্যাপকভাবে মুগ্ধ করেছে।