ঢাকা ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরো ৩ দিন বাড়ানো হলো আদালত বর্জন কর্মসূচী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩ ১৯৫ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরো ৩ দিন বাড়ানো হলো আদালত বর্জন কর্মসূচী

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারকসহ নাজিরের অপসারণের দাবী আদায় না হওয়ায় আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচী আরো ৩ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে প্রথম দফায় ডাকা ৩ দিনের আদালত বর্জন কর্মসূচীর শেষ দিনে বিকেলে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে সাধারণ সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। নতুন ঘোষিত কর্মসূচীর আওতায় চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার কোন আদালতের এজলাসে যাবেন না আইনজীবীরা। এর আগে সোমবার প্রথম দফায় ডাকা কর্মসূচীর শেষ দিনে সকাল থেকেই কোন আদালইে যাননি তারা। আইনজীবী সমিতির কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়ে তারা তাদের কর্মসূচী পালন করে। এতে করে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

এদিকে টানা আদালত বর্জন কর্মসূচীর কারণে বিচারপ্রাথীরা দূর দূরান্ত থেকে আসলেও আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম না থাকায় তাদের ফিরে যেতে হয়েছে। এতে তারা চরম দুর্ভোগের শিকার। ভূক্তভোগী বিচারপ্রার্থীরা জানান, স্বাভাবিক বিচারিক কার্যক্রম না থাকায় তাদের সমস্যা হচ্ছে। মামলার শুনানি, হাজিরাসহ কোন মামলারই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। কেবল নতুন তারিখ নিয়েই সন্তোষ্ট থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও নতুন করে কর্মসূচীর সময় বাড়ানোর ফলে বিচারিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট তানভীর ভুইয়া বলেন, তৃতীয় দিনের মত আমাদের কোর্ট বর্জন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ৩ কার্য দিবসের কর্মসূচী চলাকালে আমাদের দাবী আদায় না হওয়ায় আমরা আমাদের আদালত বর্জন কর্মসূচী আরো ৩ দিন বৃদ্ধি করেছি। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, বিচারকরা এজলাসে নিয়মিত আসলেও আইনজীবীরা আদালতে না আসায় আদালতের কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিচার প্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গেল ১ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে নারী ও শিশু-১ আদালাতরে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সাথে বিতন্ডা হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুসারে বিচারক মামলাটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। এছাড়াও তারা জাল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে জাড়িত আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণে জেলা জজের কাছে দাবী জানান। আইনজীবীদের অভিযোগ জেলা জজ ওই নাজিরকে রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন এবং জেলা জজের ইন্ধনেই বিচার বিভাগীয় কর্মচারি অ্যাসোসিয়েশন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে কর্মবিরতি ও মানববন্ধ কর্মসূচী পালন করে। সেজন্য তারা জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবী জানিয়ে বৃহস্পতি, রবি ও সোমবার পর্যন্ত ৩ দিনের জন্য সকল কোর্ট বর্জন কর্মসূচী পালন করে জেলা আইনজীবী সমিতি। এদিকে নারী ও শিশু-১ আদালাতরে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সাথে আদালত চলাকালে কতিপয় আইনজীবী অশোভন আচরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩ আইনজীবীকে আগামী ১৭ জানুয়ারী সশরীরে আদালতে হাজির থাকার আদেশ দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরো ৩ দিন বাড়ানো হলো আদালত বর্জন কর্মসূচী

আপডেট সময় : ০৯:২৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারকসহ নাজিরের অপসারণের দাবী আদায় না হওয়ায় আইনজীবীদের আদালত বর্জন কর্মসূচী আরো ৩ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে প্রথম দফায় ডাকা ৩ দিনের আদালত বর্জন কর্মসূচীর শেষ দিনে বিকেলে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে সাধারণ সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ। নতুন ঘোষিত কর্মসূচীর আওতায় চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার কোন আদালতের এজলাসে যাবেন না আইনজীবীরা। এর আগে সোমবার প্রথম দফায় ডাকা কর্মসূচীর শেষ দিনে সকাল থেকেই কোন আদালইে যাননি তারা। আইনজীবী সমিতির কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়ে তারা তাদের কর্মসূচী পালন করে। এতে করে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়।

এদিকে টানা আদালত বর্জন কর্মসূচীর কারণে বিচারপ্রাথীরা দূর দূরান্ত থেকে আসলেও আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম না থাকায় তাদের ফিরে যেতে হয়েছে। এতে তারা চরম দুর্ভোগের শিকার। ভূক্তভোগী বিচারপ্রার্থীরা জানান, স্বাভাবিক বিচারিক কার্যক্রম না থাকায় তাদের সমস্যা হচ্ছে। মামলার শুনানি, হাজিরাসহ কোন মামলারই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। কেবল নতুন তারিখ নিয়েই সন্তোষ্ট থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও নতুন করে কর্মসূচীর সময় বাড়ানোর ফলে বিচারিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট তানভীর ভুইয়া বলেন, তৃতীয় দিনের মত আমাদের কোর্ট বর্জন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ৩ কার্য দিবসের কর্মসূচী চলাকালে আমাদের দাবী আদায় না হওয়ায় আমরা আমাদের আদালত বর্জন কর্মসূচী আরো ৩ দিন বৃদ্ধি করেছি। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, বিচারকরা এজলাসে নিয়মিত আসলেও আইনজীবীরা আদালতে না আসায় আদালতের কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিচার প্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গেল ১ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী সমিতির নেতাসহ একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে নারী ও শিশু-১ আদালাতরে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সাথে বিতন্ডা হয়। সময় পার হয়ে যাওয়ায় নিয়ম অনুসারে বিচারক মামলাটি নিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। এছাড়াও তারা জাল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে জাড়িত আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণে জেলা জজের কাছে দাবী জানান। আইনজীবীদের অভিযোগ জেলা জজ ওই নাজিরকে রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন এবং জেলা জজের ইন্ধনেই বিচার বিভাগীয় কর্মচারি অ্যাসোসিয়েশন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে কর্মবিরতি ও মানববন্ধ কর্মসূচী পালন করে। সেজন্য তারা জেলা জজ শারমিন নিগার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণের দাবী জানিয়ে বৃহস্পতি, রবি ও সোমবার পর্যন্ত ৩ দিনের জন্য সকল কোর্ট বর্জন কর্মসূচী পালন করে জেলা আইনজীবী সমিতি। এদিকে নারী ও শিশু-১ আদালাতরে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সাথে আদালত চলাকালে কতিপয় আইনজীবী অশোভন আচরণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩ আইনজীবীকে আগামী ১৭ জানুয়ারী সশরীরে আদালতে হাজির থাকার আদেশ দেন।