ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার বিশিষ্ট আবৃত্তি সংস্থা শ্রুতি’র নান্দনিক আবৃত্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। গত রোববার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে তিতাস আবৃত্তি সংগঠন আয়োজিত ‘আমরা ভাষায় এক,আমরা ভালোবাসায় এক’ পর্ব-৩ অনুষ্ঠানে শ্রুতির ১০ সদস্যের আবৃত্তিদল “আমরা অল্পে খুশী” শীর্ষক দলীয় আবৃত্তি উপস্থাপন করেন। এসময় তাদের বাদ্য ও ছন্দের তালে পরিবেশিত কবিতার পংক্তির সাথে শ্রোতারাও তাল মিলিয়ে উ”ছাস প্রকাশ করেন। দলীয় পরিবেশনা শেষে শ্রুতির কর্ণধার বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী স্মীতা ভট্টাচার্য পরপর কয়েকটি একক আবৃত্তি করে মুগ্ধ করেন সকলকে। আমন্ত্রিত দল শ্রুতির সাথে অনুষ্ঠানে দলীয় আবৃত্তি করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের অভিভাবকদল,বড়োদল,মধ্যমদল,ছোটদল ও সোনালী সকাল। স্থানীয় এসকল সংগঠনের আবৃত্তি পরিবেশনাও ছিলো উপভোগ্য। একক আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী রোকেয়া দস্তগীর,উত্তম কুমার দাস। স্বরচিত কবিতাপাঠ করেন কবি শৌমিক ছাত্তার,কবি রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস ও কবি হেলাল উদ্দিন হৃদয়।
আবৃত্তিশিল্পী রেজা এ রাব্বী ও ফারদিয়া আশরাফি নাওমীর সঞ্চালনায় কবিকন্ঠে কবিতাপাঠের মধ্য দিয়ে আবৃত্তিসন্ধ্যার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব সাধারণ সম্পাদক কবি শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক,কবি আবদুল মান্নান সরকার ও কবি আবদুর রহিম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো.রুহুল আমিন। বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতিভূষণ দেবনাথ,প্রফেসর অমৃত লাল সাহা, জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি সোমেশ রঞ্জন রায়,রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ সভাপতি অধ্যাপক মানবর্দ্ধন পাল,জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড.মফিজুর রহমান বাবুল,উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী,নারী মুক্তি সংসদ সভাপতি ফজিলাতুন্নাহার,গুণীজন সংবর্ধনা পরিষদ সভাপতি আবদুল বাসেদ,সংস্কৃতিকর্মী ওয়াহিদ শামীম,নেলী আক্তার,জামিনুর রহমান,খেলাঘর আসর সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার,তরী বাংলাদেশ আহবায়ক শামীম আহমেদ,বঙ্গবন্ধু পরিষদ সভাপতি ফজলুর রহমান মুকুল,পূঁজা উদযাপন পরিষদ সাধারণ সম্পাদক সুজন দত্ত,আবৃত্তিশিল্পী আবদুস সাকির ছোটন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পরিচালক মো.মনির হোসেন।
তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের সহকারি পরিচালক সুজন সরকার বলেন,গত কয়েকবছর ধরেই তিতাস আবৃত্তি সংগঠন ও ত্রিপুরা রাজ্যের সংগঠন শ্রুতি যৌথভাবে “আমরা ভাষায় এক,ভালোবাসায় এক” শীর্ষক অনুষ্ঠান করে আসছি। আমরা কবিতা উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতে চাই মানুষের কাছে। এবারে শ্রুতির শিল্পিদের একক ও দলীয় পরিবেশনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে।
শ্রুতির কর্ণধার স্মীতা ভট্টাচার্য বলেন,আমরা বিশ্বাস করি সবার উপরে মানুষ সত্য। এই সত্য ও সম্প্রীতির বানী দুই দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই আমরা ও তিতাস আবৃত্তি সংগঠন মিলে দুই দেশেই আবৃত্তি অনুষ্ঠান করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ আবৃত্তি ভালোবাসে। আমাদের পরিবেশনা তারা উচ্ছাসের সাথে গ্রহণ করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেন, কবিতা ও গানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা সহজেই বলা যায়। আজ আবৃত্তির মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা বারবার উচ্চারিত হয়েছে। আমরা চাই এভাবে কথা ও কবিতার মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। কবিতার আবৃত্তির মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বানী খুব সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়।