Dhaka 5:38 pm, Saturday, 4 May 2024
News Title :
সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল মা-বাবার নিয়মিত ঝগড়া বিরক্ত হয়ে থানায় শিশু সন্তান সিয়াম পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩

বৃষ্টি হলেই বন্দি ৩ গ্রামের মানুষ মেহমানদের ঠেলতে হয় অটোরিকশা!

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:51:55 pm, Saturday, 10 June 2023
  • 198 Time View

সরাইলের শাহবাজপুর-শাহ্‌জাদাপুর সড়ক

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহবাজপুর-শাহ্‌জাদাপুর সড়কের মাত্র ২.৬৫ কিলোমিটার (মলাইশ-শাহজাদাপুর) কাঁচা সড়ক। এই সড়কটির জন্য সীমাহীন দূর্ভোগে আছেন ২০-২৫ হাজার লোক। গত ৫৩ বছরেরও অধিক সময় ধরে তারা শুনছেন শুধু আশ্বাসের বাণী। ভেলকি দিয়ে স্বার্থ উদ্ধারের পর সকলেই লাপাত্তা। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূতির পরও এই সড়ক নির্মাণের কোন নমুনা চোখে পড়ছে না। অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে আন্তরিকতার সড়কটির জন্য উর্দ্ধতন মহলে কড়া নাড়ছেন না কোন জনপ্রতিনিধি। ধূঁলার দুর্ভোগের পর পিছু নেই কাঁদা। এখন বৃষ্টি হলেই বন্দি হয়ে পড়ে ৩ গ্রামের মানুষ। না জেনে স্বজনদের বাড়িতে রওনা দিয়ে এই সড়কে মেহমানদের নিয়মিত ঠেলতে হচ্ছে অটোরিকশা। দীর্ঘ সময় বৃষ্টি হলে থেকে যায় গ্রাম গুলোর জীবনযাত্রা। এসডিজি আর স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের এই সময়ে সড়কটির বেহাল দশা যেন দেশের সকল উন্নয়ন ম্লান করে দেয়। আর কয় প্রজন্মকে ভোগ করতে হবে এই গ্লানি? এই জিজ্ঞাসা এখন ওই জনপদের লোকদের?
সরজমিনে গেলে স্থানীয় ভুক্তভোগিরা জানায়, স্বপ্ন আর আশ্বাসে পার করেছি প্রায় ৫৩টি বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর? জাপা, বিএনপি ও আওয়ামীলীগ ৩ দলের সরকারই দেখলেন তারা। সকলেই শুধু ভোট নিলেন। বিনিময়ে তাদের একমাত্র দাবীটি পূরণ করলেন না কেউই। দিন যত যাচ্ছে। সড়কটি ঘিরে ততই দূর্ভোগ বাড়ছে তাদের। শুস্ক মৌসমে ধোলা ও বৃষ্টির সময়ে কাঁদায় লুটুপুটি খাচ্ছে ওই জনপদের মানুষ। কিছু জায়গায় থাকে হাঁটু সমান কাঁদা। আটকে যাচ্ছে অটোরিকশা। চালকের সাথে ধাক্কায় যুক্ত হচ্ছে যাত্রীরা। সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন বৃদ্ধ গর্ভবতী মহিলা ও গুরূতর অসুস্থ্য রোগীরা । এ দূর্ভোগ শতাধিক বছরের। মন্ত্রী এমপি’র প্রতিশ্রূতি, আশ্বাস ও বিশ্বাসেইর পাড় করছেন ৫০-৬০টি বছর। মানুষ বাঁচে কত বছর? জাপা, বিএনপি ও আওয়ামীলীগ কেউই কথা রাখেননি। তিন দলই সরকার গঠন করেছেন। দেশ পরিচালনা করেছেন ও করছেন। কিন্তু মাত্র ২.৬৫ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করেননি কেউই। সম্প্রতি সময়ে বৃষ্টি হলেই বন্দি হয়ে যান শাহজাদাপুর, নিয়ামতপুর ও ধাউরিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। জরূরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে যান না তারা। বের হলে যুদ্ধ করে সড়কটি পাড়ি দেয় তারা। বৃদ্ধ ও রোগীদের দূর্ভোগ সীমাহীন। না জেনে বাহির থেকে ওইসব গ্রামে রওনা দিয়ে সড়কে মেহমানদের ঠেলতে হয় সিএনজি চালিত অটোরিকশা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলের মোষলধারে বৃষ্টির পর সড়কটিতে অটেরিকশা ঠেলার চিত্র ছিল কমন বিষয়। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা-আর কত দূর্ভোগে মন গলবে কর্তৃপক্ষের? প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূত এ সড়কটি আদৌ হবে কি? তবে এ প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন অভিভাবকহীন সরাইল। তাই সরাইলের ৩টি (শাহবাজপুর-শাহজাদাপুর, সরাইল-পানিশ্বর ও রসুলপুর-আজবপুর) সড়ক নির্মাণের কাজ বারবার পিছিয়ে গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো.আব্দুর রশীদ খান প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূতির (অগ্রাধিকার ক্রমিক নং-১৬,১৭ ও ১৮) প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয়ও নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্যে শাহবাজপুর-শাহজাদাপুর সড়কের প্রাক্কলিত ব্যয় ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৬ টাকা। রসুলপুর-আজবপুর সড়কে ১৭ কোটি ৬৭ লাখ ৭ হাজার ৭৩৩ টাকা। সরাইল-পানিশ্বর সড়কের ব্যয় ৮ কোটি ৬১ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৭ টাকা। আর বাস্তবায়নকাল হচ্ছে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন। এই প্রকল্পটির ডিপিপি অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে ওই বছরের ৬ এপ্রিল পত্র দিয়েছিলেন এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী। অভিভাবকহীন সরাইলের উচ্চ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দের সজাগ দৃষ্টি না থাকায় কাজটি নিয়ে কিছুটা সমস্যার কথা জানিয়েছেন ওই দপ্তরের একাধিক সূত্র। তবে সরাইল উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূত এই সড়কটি নির্মাণের অনুমোদন পক্রিয়াধীন। এটি একনেকের সভায় ওঠার অপেক্ষায় আছে। একনেকের সভায় অনুমোদন হলেই কাজটি হয়ে যাবে। আমি সার্বক্ষণিক বিষয়টির খুঁজ খবর রাখছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল

বৃষ্টি হলেই বন্দি ৩ গ্রামের মানুষ মেহমানদের ঠেলতে হয় অটোরিকশা!

Update Time : 08:51:55 pm, Saturday, 10 June 2023

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহবাজপুর-শাহ্‌জাদাপুর সড়কের মাত্র ২.৬৫ কিলোমিটার (মলাইশ-শাহজাদাপুর) কাঁচা সড়ক। এই সড়কটির জন্য সীমাহীন দূর্ভোগে আছেন ২০-২৫ হাজার লোক। গত ৫৩ বছরেরও অধিক সময় ধরে তারা শুনছেন শুধু আশ্বাসের বাণী। ভেলকি দিয়ে স্বার্থ উদ্ধারের পর সকলেই লাপাত্তা। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূতির পরও এই সড়ক নির্মাণের কোন নমুনা চোখে পড়ছে না। অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে আন্তরিকতার সড়কটির জন্য উর্দ্ধতন মহলে কড়া নাড়ছেন না কোন জনপ্রতিনিধি। ধূঁলার দুর্ভোগের পর পিছু নেই কাঁদা। এখন বৃষ্টি হলেই বন্দি হয়ে পড়ে ৩ গ্রামের মানুষ। না জেনে স্বজনদের বাড়িতে রওনা দিয়ে এই সড়কে মেহমানদের নিয়মিত ঠেলতে হচ্ছে অটোরিকশা। দীর্ঘ সময় বৃষ্টি হলে থেকে যায় গ্রাম গুলোর জীবনযাত্রা। এসডিজি আর স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের এই সময়ে সড়কটির বেহাল দশা যেন দেশের সকল উন্নয়ন ম্লান করে দেয়। আর কয় প্রজন্মকে ভোগ করতে হবে এই গ্লানি? এই জিজ্ঞাসা এখন ওই জনপদের লোকদের?
সরজমিনে গেলে স্থানীয় ভুক্তভোগিরা জানায়, স্বপ্ন আর আশ্বাসে পার করেছি প্রায় ৫৩টি বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর? জাপা, বিএনপি ও আওয়ামীলীগ ৩ দলের সরকারই দেখলেন তারা। সকলেই শুধু ভোট নিলেন। বিনিময়ে তাদের একমাত্র দাবীটি পূরণ করলেন না কেউই। দিন যত যাচ্ছে। সড়কটি ঘিরে ততই দূর্ভোগ বাড়ছে তাদের। শুস্ক মৌসমে ধোলা ও বৃষ্টির সময়ে কাঁদায় লুটুপুটি খাচ্ছে ওই জনপদের মানুষ। কিছু জায়গায় থাকে হাঁটু সমান কাঁদা। আটকে যাচ্ছে অটোরিকশা। চালকের সাথে ধাক্কায় যুক্ত হচ্ছে যাত্রীরা। সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন বৃদ্ধ গর্ভবতী মহিলা ও গুরূতর অসুস্থ্য রোগীরা । এ দূর্ভোগ শতাধিক বছরের। মন্ত্রী এমপি’র প্রতিশ্রূতি, আশ্বাস ও বিশ্বাসেইর পাড় করছেন ৫০-৬০টি বছর। মানুষ বাঁচে কত বছর? জাপা, বিএনপি ও আওয়ামীলীগ কেউই কথা রাখেননি। তিন দলই সরকার গঠন করেছেন। দেশ পরিচালনা করেছেন ও করছেন। কিন্তু মাত্র ২.৬৫ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করেননি কেউই। সম্প্রতি সময়ে বৃষ্টি হলেই বন্দি হয়ে যান শাহজাদাপুর, নিয়ামতপুর ও ধাউরিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। জরূরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে যান না তারা। বের হলে যুদ্ধ করে সড়কটি পাড়ি দেয় তারা। বৃদ্ধ ও রোগীদের দূর্ভোগ সীমাহীন। না জেনে বাহির থেকে ওইসব গ্রামে রওনা দিয়ে সড়কে মেহমানদের ঠেলতে হয় সিএনজি চালিত অটোরিকশা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলের মোষলধারে বৃষ্টির পর সড়কটিতে অটেরিকশা ঠেলার চিত্র ছিল কমন বিষয়। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা-আর কত দূর্ভোগে মন গলবে কর্তৃপক্ষের? প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূত এ সড়কটি আদৌ হবে কি? তবে এ প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন অভিভাবকহীন সরাইল। তাই সরাইলের ৩টি (শাহবাজপুর-শাহজাদাপুর, সরাইল-পানিশ্বর ও রসুলপুর-আজবপুর) সড়ক নির্মাণের কাজ বারবার পিছিয়ে গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো.আব্দুর রশীদ খান প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূতির (অগ্রাধিকার ক্রমিক নং-১৬,১৭ ও ১৮) প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয়ও নির্ধারণ করেছেন। এর মধ্যে শাহবাজপুর-শাহজাদাপুর সড়কের প্রাক্কলিত ব্যয় ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৭২ হাজার ৮৬ টাকা। রসুলপুর-আজবপুর সড়কে ১৭ কোটি ৬৭ লাখ ৭ হাজার ৭৩৩ টাকা। সরাইল-পানিশ্বর সড়কের ব্যয় ৮ কোটি ৬১ লাখ ৯২ হাজার ৮৯৭ টাকা। আর বাস্তবায়নকাল হচ্ছে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন। এই প্রকল্পটির ডিপিপি অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে ওই বছরের ৬ এপ্রিল পত্র দিয়েছিলেন এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী। অভিভাবকহীন সরাইলের উচ্চ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দের সজাগ দৃষ্টি না থাকায় কাজটি নিয়ে কিছুটা সমস্যার কথা জানিয়েছেন ওই দপ্তরের একাধিক সূত্র। তবে সরাইল উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রূত এই সড়কটি নির্মাণের অনুমোদন পক্রিয়াধীন। এটি একনেকের সভায় ওঠার অপেক্ষায় আছে। একনেকের সভায় অনুমোদন হলেই কাজটি হয়ে যাবে। আমি সার্বক্ষণিক বিষয়টির খুঁজ খবর রাখছি।