Dhaka ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
News Title :
পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩ সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত

শেখ হাসিনা সড়ক’-এ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মানুষ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:১৬:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩
  • ৩১০ Time View

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘শেখ হাসিনা সড়ক’ জেলা সদর থেকে বিজয়নগর উপজেলার সীমনা পর্যন্ত সোয়া ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক বিজয়নগর উপজেলার মানুষের যাতায়ত দূর্ভোগ গুচিয়েছে। এখন আর ৩৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছেনা তাদের। যানবাহন চলাচলের জন্যে এরইমধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে সড়কটি। এ সড়ক শুধু যে শহরের সাথে দূরত্বই কমাবে তা নয়; ভূমিকা রাখবে স্থানীয় কৃষি, শিক্ষা ও অর্থনীতিতে।

এদিকে নদী আর বিলের বুকে নির্মিত এই সড়ক আর সেতু ভ্রমন পিপাসু মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছে। খাল-বিল,নদী-হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেখানে ভীড় করছেন শতশত মানুষ। আগে হাইওয়ে সড়ক ধরে সরাইল বা আখাউড়া ঘুরে যেতে হতো ওই উপজেলায়। সময়ও লাগতো দেড়-দু’ঘন্টা। যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় পত্তন, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। বর্ষাকালে হাওর পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে আসতে তাদের একমাত্র ভরসা ছিলো নৌকা, আর শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হাঁটা।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিরাইলকান্দি থেকে বিজয়নগরের পত্তন ইউনিয়নের সীমনা পর্যন্ত প্রায় ৯ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হলেও এখন কাজ প্রায় শেষ। সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা। মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর প্রচেষ্টাতেই হয়েছে হাওরের বুকে পিচঢালা এই পথ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর
(এলজিইডি) সুত্র জানিয়েছে,শহর সংলগ্ন তিতাস নদীতে ৩১৫ মিটার এবং লইসকা খালে ৩০৮ মিটার দীর্ঘ দুটি সেতু এবং এর সাথে প্রায় ১২’শ মিটার এপ্রোচ সড়ক নির্মান কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। সড়ক রক্ষায় পাশে দেয়া হয়েছে ব্লক। এই কাজটি করেছে মেসার্স মোস্তফা কামাল নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর স্বত্বাধিকারী মোস্তফা কামাল বলেন- এই এলাকার মানুষের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি সড়ক। সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর প্রচেষ্টায় নির্মিত এই সড়ক সর্বক্ষেত্রে এই উপজেলার মানুষের আমুল পরিবর্তন ঘটাবে। ব্যবসায়িক চিন্তা না করে কাজটির স্থায়ীত্ব এবং গুনগত মান কিভাবে ভালো হয় সেদিকেই লক্ষ্য ছিলো আমাদের। কারন ভালো কাজের জন্যে এলাকার মানুষের কাছে আমরাও যাতে স্মরনীয় হয়ে থাকি।
সড়ক চালু হওয়ায় উচ্ছসিত বিজয়নগরের মানুষ। আনন্দ আর ধরছেনা তাদের। চোখের পলকে শহরে পৌছতে পারছেন।

পত্তন ইউনিয়নের লক্ষ্মীমোড়া গ্রামের কৃষক মো. শাহজাহান বলেন-আগে উৎপাদিত শাকসবজি শহরের হাটে তুলতে কষ্ট হতো। হাওর এলাকা হওয়ায় নৌকায় করে শহরে আসতে আসতে বেলা হয়ে যেতো। ফলে সবজির ভালো দাম পাওয়া যেতনা। না। এখন মাত্র আধা ঘণ্টাতেই পৌঁছাতে পারছেন শহরের হাটে। শাহজাহানের মতো পুরো বিজয়নগর উপজেলাবাসীর ভাগ্য বদলে দেবে ‘শেখ হাসিনা সড়ক’।

মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা বিলকিস বেগম জানান, আগে গ্রামের আশাপাশে কলেজ না থাকায় মেয়েদের শিক্ষা স্কুল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ ছেলেরা শহরে গিয়ে পড়তে পারলেও দূরের পথ হওয়ায় নিরাপত্তার কারণে শহরে পড়তে দেওয়া হতো না মেয়েদের। এখন সড়ক চালু হলে মেয়েরাও শহরে গিয়ে ভালো কলেজে পড়তে পারবে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি বছর বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের আম, লিচু, মাল্টা ও কাঁঠালসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল উৎপাদিত হয়। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় কৃষকরা যথাসময়ে এসব ফল জেলা শহরে নিয়ে যেতে পারতেন না। এতে করে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতেন তারা। এখন শেখ হাসিনা সড়ক ব্যবহার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে উৎপাদিত ফল শহরে নিয়ে যেতে পারবেন কৃষকরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আবদুল মান্নান জানান-সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলের জন্যে উন্মুক্ত। দুটি ব্রীজের এপ্রোচের কার্পেটিং শেষ। সড়কের প্রথম অংশের ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটারের কার্পেটিংয়ের কাজ এখন চলছে। বাকী ৪ কিলোমিটারের উন্নয়নের জন্যে প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া সড়কটিতে কিছু পুরনো ব্রীজ-কালভার্ট রয়েছে। সেগুলো মেরামত ও পুন:নির্মানের জন্যেও প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন

Ev depolama Ucuz nakliyat teensexonline.com

শেখ হাসিনা সড়ক’-এ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মানুষ

Update Time : ০৮:১৬:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘শেখ হাসিনা সড়ক’ জেলা সদর থেকে বিজয়নগর উপজেলার সীমনা পর্যন্ত সোয়া ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক বিজয়নগর উপজেলার মানুষের যাতায়ত দূর্ভোগ গুচিয়েছে। এখন আর ৩৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছেনা তাদের। যানবাহন চলাচলের জন্যে এরইমধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে সড়কটি। এ সড়ক শুধু যে শহরের সাথে দূরত্বই কমাবে তা নয়; ভূমিকা রাখবে স্থানীয় কৃষি, শিক্ষা ও অর্থনীতিতে।

এদিকে নদী আর বিলের বুকে নির্মিত এই সড়ক আর সেতু ভ্রমন পিপাসু মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছে। খাল-বিল,নদী-হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেখানে ভীড় করছেন শতশত মানুষ। আগে হাইওয়ে সড়ক ধরে সরাইল বা আখাউড়া ঘুরে যেতে হতো ওই উপজেলায়। সময়ও লাগতো দেড়-দু’ঘন্টা। যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় পত্তন, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। বর্ষাকালে হাওর পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে আসতে তাদের একমাত্র ভরসা ছিলো নৌকা, আর শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হাঁটা।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিরাইলকান্দি থেকে বিজয়নগরের পত্তন ইউনিয়নের সীমনা পর্যন্ত প্রায় ৯ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হলেও এখন কাজ প্রায় শেষ। সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা। মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর প্রচেষ্টাতেই হয়েছে হাওরের বুকে পিচঢালা এই পথ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর
(এলজিইডি) সুত্র জানিয়েছে,শহর সংলগ্ন তিতাস নদীতে ৩১৫ মিটার এবং লইসকা খালে ৩০৮ মিটার দীর্ঘ দুটি সেতু এবং এর সাথে প্রায় ১২’শ মিটার এপ্রোচ সড়ক নির্মান কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। সড়ক রক্ষায় পাশে দেয়া হয়েছে ব্লক। এই কাজটি করেছে মেসার্স মোস্তফা কামাল নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর স্বত্বাধিকারী মোস্তফা কামাল বলেন- এই এলাকার মানুষের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি সড়ক। সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর প্রচেষ্টায় নির্মিত এই সড়ক সর্বক্ষেত্রে এই উপজেলার মানুষের আমুল পরিবর্তন ঘটাবে। ব্যবসায়িক চিন্তা না করে কাজটির স্থায়ীত্ব এবং গুনগত মান কিভাবে ভালো হয় সেদিকেই লক্ষ্য ছিলো আমাদের। কারন ভালো কাজের জন্যে এলাকার মানুষের কাছে আমরাও যাতে স্মরনীয় হয়ে থাকি।
সড়ক চালু হওয়ায় উচ্ছসিত বিজয়নগরের মানুষ। আনন্দ আর ধরছেনা তাদের। চোখের পলকে শহরে পৌছতে পারছেন।

পত্তন ইউনিয়নের লক্ষ্মীমোড়া গ্রামের কৃষক মো. শাহজাহান বলেন-আগে উৎপাদিত শাকসবজি শহরের হাটে তুলতে কষ্ট হতো। হাওর এলাকা হওয়ায় নৌকায় করে শহরে আসতে আসতে বেলা হয়ে যেতো। ফলে সবজির ভালো দাম পাওয়া যেতনা। না। এখন মাত্র আধা ঘণ্টাতেই পৌঁছাতে পারছেন শহরের হাটে। শাহজাহানের মতো পুরো বিজয়নগর উপজেলাবাসীর ভাগ্য বদলে দেবে ‘শেখ হাসিনা সড়ক’।

মনিপুর গ্রামের বাসিন্দা বিলকিস বেগম জানান, আগে গ্রামের আশাপাশে কলেজ না থাকায় মেয়েদের শিক্ষা স্কুল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ ছেলেরা শহরে গিয়ে পড়তে পারলেও দূরের পথ হওয়ায় নিরাপত্তার কারণে শহরে পড়তে দেওয়া হতো না মেয়েদের। এখন সড়ক চালু হলে মেয়েরাও শহরে গিয়ে ভালো কলেজে পড়তে পারবে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি বছর বিজয়নগর উপজেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের আম, লিচু, মাল্টা ও কাঁঠালসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল উৎপাদিত হয়। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় কৃষকরা যথাসময়ে এসব ফল জেলা শহরে নিয়ে যেতে পারতেন না। এতে করে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতেন তারা। এখন শেখ হাসিনা সড়ক ব্যবহার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে উৎপাদিত ফল শহরে নিয়ে যেতে পারবেন কৃষকরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আবদুল মান্নান জানান-সড়কটি এখন যানবাহন চলাচলের জন্যে উন্মুক্ত। দুটি ব্রীজের এপ্রোচের কার্পেটিং শেষ। সড়কের প্রথম অংশের ৫ দশমিক ৪৬ কিলোমিটারের কার্পেটিংয়ের কাজ এখন চলছে। বাকী ৪ কিলোমিটারের উন্নয়নের জন্যে প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া সড়কটিতে কিছু পুরনো ব্রীজ-কালভার্ট রয়েছে। সেগুলো মেরামত ও পুন:নির্মানের জন্যেও প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে।