Dhaka 5:34 am, Sunday, 8 September 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিপিএফ এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির বার্ষিক সাধারন সভা অনুষ্ঠিত বন্যার্তদের পাশে দাড়িয়েছে চাঁদপুর নৌ পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির বীমার মেয়াদপূর্তি চেক প্রদান ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলের আহ্বানে আখাউড়ায় ত্রাণ বিতরণ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে গুজব প্রতিরোধে সেমিনার ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়রকে অশ্রুসিক্ত বিদায় সতীর্থদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সভাপতি নির্বাচিত জাবেদ রহিম বিজন

ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন মামলার বাদী, ইউপি সদস্যসহ ৫ জন কারাগারে

  • Reporter Name
  • Update Time : 02:05:44 pm, Thursday, 20 June 2024
  • 141 Time View

ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন মামলার বাদী, ইউপি সদস্যসহ ৫ জন কারাগারে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন হত্যা মামলার বাদী মো. তোফায়েল মিয়া। থানায় হাজির হয়ে মিথ্যা বানোয়াট ও সাজানো অভিযোগ করায় তোফায়েলের সাথে মহিলা ইউপি সদস্য নাজমা বেগমসহ ৪ মহিলা এখন কারাগারে। তোফায়েল শাহজাদাপুর গ্রামের কামাল উদ্দিন হত্যা মামলার বাদী। পুলিশি তদন্তে দেড় মাস কারাবরণের পর হত্যা মামলার আসামী মারূফ মিয়াকে (৩৭) জামিনে আসার পরদিন শনিবারে বাড়িতে হামলা করে পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা বেরিয়ে আসে। নিজেদের অপরাধ আড়াল করে উল্টো বাদী হওয়ার চেষ্টার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুলিশ তড়িৎ থানা থেকেই তোফায়েল, নাজমা বেগমসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। এই ঘটনায় শাহজাদাপুর ইউনিয়নের তৎকালীন বিট অফিসার এস আই জসিম উদ্দিনের বিরূদ্ধে রহস্যজনক কারণে পক্ষ পাতিত্ব ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি। পুলিশ বলছেন, এস আই জসিমকে আগেই ওই বিট থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে।

পুলিশ, মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাহজাদাপুর গ্রামের কামাল উদ্দিন হত্যা মামলার ৪৫ নম্বর আসামী মারূফ। নামীয় ১১৯ জন আসামীর মধ্যে মারূফসহ ১১৪ জন জামিনে আছেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জামিনে আসেন মারূফ মিয়া। জামিনে আসা আসামীদের এলাকায় কোন ভাবেই সহ্য করতে পারছিলেন না বাদী পক্ষের লোকজন। আসামীদের কোথাও দেখলেই উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে আসছিলেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার দুপুরের দিকে তোফায়েল, জুয়েল ও শেখ মুন্নার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মারূফদের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়ি ঘর ভাংচুরের পাশাপাশি স্বর্ণালঙ্কার নগদ টাকাসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে। তারা মারূফের উপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে ডান পা ভেঙ্গে দেয়। পরে মারূফকে হত্যার চেষ্টা করে। মারূফকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে স্ত্রী মিনারা বেগমের উপর হামলা চালায় নাজমা বেগমসহ ৩-৪ জন মহিলা। মারূফের অবস্থা গুরূতর দেখে তোফায়েলরা নতুন পরিকল্পনা করে। মূল ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে তারা চলে যায় থানায়। সেখানে গিয়ে তারা বাদী হয়ে সাজানো মামলা দেওয়ার চেষ্টা করে।

শাহজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা টেনু মিয়া (৫৫), মন্নাফ মিয়া (৩৫), ইকবাল মিয়া (৩৮), লিটন মিয়া (৩২), আরজু মিয়া (৩৬), কামরূল মিয়া (৪৩), নাজমা বেগম (৪৫) ও খসরূ সরকার (৪২) সহ অনেকেই বলেন, এস আই জসিম উদ্দিন রহস্যজনক কারণে ঘটনার শুরূ থেকেই পক্ষপাতিত্ব করে আসছিলেন। উনার চোখের সামনে লুটপাট হলেও নীরব থাকতেন। আসামী পক্ষের কেউ নালিশ করলে তিনি ক্ষুদ্ধ হতেন। সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মো. মহসিন মিয়ার বাড়িতে রাতের বেলা আগুন দেয় বাদী পক্ষের লোকজন। এস আই জসিম ওই বাড়ির তিন মহিলাকে ধরে থানায় নিয়ে যান। আবার ওই মহিলাদের স্বজনদের কাছ থেকে মামলা হালকা ও গাড়ি ভাড়ার কথা বলে নিয়েছেন ১৩ হাজার পাঁচশত টাকা। শনিবারে মারূফের পা ভাঙ্গার ১০ মিনিট আগেও তিনি শাহজাদাপুর গ্রামে ছিলেন। তিনি মূল ঘটনাকে আড়াল করে বানোয়াট তথ্য দেন থানায়। পরে ওসি মহোদয়ের নির্দেশে পুলিশের আরেক কর্মকর্তা সরজমিন তদন্তে আসেন।

উনার তদন্তে তোফায়েল গংরা প্রকৃত সত্য আড়াল করে নিজেদেরকে সাজানো মামলার বাদী করার অপচেষ্টার বিষয়টি ধরা পরে। পুলিশ তড়িত থানা থেকেই তাদেরকে (৫ জনকে) গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। গ্রেপ্তারকৃত তিন মহিলা হলো- ইউপি সদস্য নাজমা বেগম (৪৫), ইউপি সদস্য মো. জুয়েল মিয়ার স্ত্রী মোছা. রেহেনা বেগম (৩০), মোছা. সাফিয়া বেগম (৩২) ও মোছা. হেনা বেগম (৪০)। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তোফায়েল গংরা হত্যা মামলার ৪৫ নম্বর আসামী মারূফের পা ভেঙ্গে ঘটনা অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। থানায় এসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাজানো মামলা দিয়ে গুরূতর আহত মারূফসহ অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল কামাল উদ্দিন হত্যা মামলার বাদী তোফায়েল গংরা। এস আই জসিমের বিরূদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ সত্য নয়। তাকে শাহজাদাপুর বিট থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। ওইদিন হয়ত পুরাতন কোন মামলার বিষয়ে শাহজাদাপুর গিয়েছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন মামলার বাদী, ইউপি সদস্যসহ ৫ জন কারাগারে

Update Time : 02:05:44 pm, Thursday, 20 June 2024

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন হত্যা মামলার বাদী মো. তোফায়েল মিয়া। থানায় হাজির হয়ে মিথ্যা বানোয়াট ও সাজানো অভিযোগ করায় তোফায়েলের সাথে মহিলা ইউপি সদস্য নাজমা বেগমসহ ৪ মহিলা এখন কারাগারে। তোফায়েল শাহজাদাপুর গ্রামের কামাল উদ্দিন হত্যা মামলার বাদী। পুলিশি তদন্তে দেড় মাস কারাবরণের পর হত্যা মামলার আসামী মারূফ মিয়াকে (৩৭) জামিনে আসার পরদিন শনিবারে বাড়িতে হামলা করে পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা বেরিয়ে আসে। নিজেদের অপরাধ আড়াল করে উল্টো বাদী হওয়ার চেষ্টার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পুলিশ তড়িৎ থানা থেকেই তোফায়েল, নাজমা বেগমসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। এই ঘটনায় শাহজাদাপুর ইউনিয়নের তৎকালীন বিট অফিসার এস আই জসিম উদ্দিনের বিরূদ্ধে রহস্যজনক কারণে পক্ষ পাতিত্ব ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ করছেন স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি। পুলিশ বলছেন, এস আই জসিমকে আগেই ওই বিট থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে।

পুলিশ, মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাহজাদাপুর গ্রামের কামাল উদ্দিন হত্যা মামলার ৪৫ নম্বর আসামী মারূফ। নামীয় ১১৯ জন আসামীর মধ্যে মারূফসহ ১১৪ জন জামিনে আছেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জামিনে আসেন মারূফ মিয়া। জামিনে আসা আসামীদের এলাকায় কোন ভাবেই সহ্য করতে পারছিলেন না বাদী পক্ষের লোকজন। আসামীদের কোথাও দেখলেই উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে আসছিলেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার দুপুরের দিকে তোফায়েল, জুয়েল ও শেখ মুন্নার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মারূফদের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়ি ঘর ভাংচুরের পাশাপাশি স্বর্ণালঙ্কার নগদ টাকাসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে। তারা মারূফের উপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে ডান পা ভেঙ্গে দেয়। পরে মারূফকে হত্যার চেষ্টা করে। মারূফকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে স্ত্রী মিনারা বেগমের উপর হামলা চালায় নাজমা বেগমসহ ৩-৪ জন মহিলা। মারূফের অবস্থা গুরূতর দেখে তোফায়েলরা নতুন পরিকল্পনা করে। মূল ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে তারা চলে যায় থানায়। সেখানে গিয়ে তারা বাদী হয়ে সাজানো মামলা দেওয়ার চেষ্টা করে।

শাহজাদাপুর গ্রামের বাসিন্দা টেনু মিয়া (৫৫), মন্নাফ মিয়া (৩৫), ইকবাল মিয়া (৩৮), লিটন মিয়া (৩২), আরজু মিয়া (৩৬), কামরূল মিয়া (৪৩), নাজমা বেগম (৪৫) ও খসরূ সরকার (৪২) সহ অনেকেই বলেন, এস আই জসিম উদ্দিন রহস্যজনক কারণে ঘটনার শুরূ থেকেই পক্ষপাতিত্ব করে আসছিলেন। উনার চোখের সামনে লুটপাট হলেও নীরব থাকতেন। আসামী পক্ষের কেউ নালিশ করলে তিনি ক্ষুদ্ধ হতেন। সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মো. মহসিন মিয়ার বাড়িতে রাতের বেলা আগুন দেয় বাদী পক্ষের লোকজন। এস আই জসিম ওই বাড়ির তিন মহিলাকে ধরে থানায় নিয়ে যান। আবার ওই মহিলাদের স্বজনদের কাছ থেকে মামলা হালকা ও গাড়ি ভাড়ার কথা বলে নিয়েছেন ১৩ হাজার পাঁচশত টাকা। শনিবারে মারূফের পা ভাঙ্গার ১০ মিনিট আগেও তিনি শাহজাদাপুর গ্রামে ছিলেন। তিনি মূল ঘটনাকে আড়াল করে বানোয়াট তথ্য দেন থানায়। পরে ওসি মহোদয়ের নির্দেশে পুলিশের আরেক কর্মকর্তা সরজমিন তদন্তে আসেন।

উনার তদন্তে তোফায়েল গংরা প্রকৃত সত্য আড়াল করে নিজেদেরকে সাজানো মামলার বাদী করার অপচেষ্টার বিষয়টি ধরা পরে। পুলিশ তড়িত থানা থেকেই তাদেরকে (৫ জনকে) গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। গ্রেপ্তারকৃত তিন মহিলা হলো- ইউপি সদস্য নাজমা বেগম (৪৫), ইউপি সদস্য মো. জুয়েল মিয়ার স্ত্রী মোছা. রেহেনা বেগম (৩০), মোছা. সাফিয়া বেগম (৩২) ও মোছা. হেনা বেগম (৪০)। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তোফায়েল গংরা হত্যা মামলার ৪৫ নম্বর আসামী মারূফের পা ভেঙ্গে ঘটনা অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। থানায় এসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাজানো মামলা দিয়ে গুরূতর আহত মারূফসহ অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল কামাল উদ্দিন হত্যা মামলার বাদী তোফায়েল গংরা। এস আই জসিমের বিরূদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ সত্য নয়। তাকে শাহজাদাপুর বিট থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। ওইদিন হয়ত পুরাতন কোন মামলার বিষয়ে শাহজাদাপুর গিয়েছিলেন।