কর্মস্থলে নেই ৮ মাস ৪ শোকজ, ১টিরও জবাব দেননি ডা: ফৌজিয়া!

0
79
sarail pic(fowjia chember) 29.12==1
sarail pic(fowjia chember) 29.12==1

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

গাইনি কনসালটেন্ট ডা: ফৌজিয়া আখতার। লোক মারফত পত্র পাঠিয়ে ৮ মাস আগে যোগদান করেছিলেন সরাইল হাসপাতালে। এরপর কর্মস্থলে লাপাত্তা। জেলা শহরে বসবাস করলেও সরাইলের কর্মস্থলে আসেননি একদিনও। চিকিৎসা বঞ্চিত রোগীরা ঘুরছেন প্রতিদিন। আর হ্যাঁ হুঁতাশ করছেন। বন্ধ হয়ে আছে গর্ভবতি মহিলাদের ওটি টি। কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে দীর্ঘ সময় অনুপসি’তির কারণে এ পর্যন্ত ডা: ফৌজিয়াকে ৪ বার শোকজ করেছেন কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ শোকজ করেছেন গত ২২ ডিসেম্বর। এক মাস আগে সিভিল সার্জন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও এখনো নীরব তিনারা। চিকিৎসা বঞ্চিত ভুক্তভোগিদের আকুতি নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় কয়েকটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। জেলার বড় কর্তা ও জনৈক স্বাচিপ নেতাকে বাগে নিয়েই ডা: ফৌজিয়ার দাপুটের অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি চাউর হচ্ছে গোটা সরাইলে। তবে জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ে তিনি প্রাইভেট প্রাকটিস করছেন নিয়মিত। উনার বিরূদ্ধে আবারও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন। অনুসন্ধানে, হাসপাতাল ও ভুক্তভোগি সূত্র জানায়, গাইনি কনসালটেন্ট ও এনেসথেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় ৪/৫ বছর বন্ধ ছিল কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গর্ভবতি মহিলাদের ওটি। বছর দিন আগে সমস্যা সমাধান হলে আবার চালু হয় ওটি। স্থানীয় অসহায় দরিদ্র মহিলারা স্বস্থির নি:শ্বাস ফেলেন। কিন্তু দূর্ভাগ্য যে পিছু ছাড়ছে না সরাইলবাসীর। বছর দিন পর সেই হাঁসি হারিয়ে যায়। চিকিৎসক সমস্যায় আবারও বন্ধ হয়ে যায় ওটি। মাঝখানে একজন গাইনি কনসালটেন্ট আসলেও উনার ক্ষমতার দাপুটের কাছেও হেরে যায় সরাইল। অবশেষে গত ২৮ এপ্রিল লোক মারফত পত্র পাঠিয়ে সরাইল হাসপাতালে যোগদান করেন গাইনি কনসালটেন্ট ডা: ফৌজিয়া আখতার। এখানেই শেষ উনার সেবা। গত ৮ মাসে তিনি এক দিনও হাসপাতালে আসেননি। অফিসের হাজিরা খাতায় এখনো নাম ওঠেনি উনার। এখনো উনাকে চোখে দেখেননি হাসপাতালের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী। সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সরাইলের শতশত নারী রোগী। অনুমতি বা কারণ ছাড়া কর্মস্থলে লাগামহীন অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে সরাইল হাসপাতালের ইউএইচও ডা: ফৌজিয়াকে তিনবার শোকজ করেছেন। একটি শোকজেরও জবাব দেননি তিনি। উল্টো তিনি দাপুটে জেলা শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন প্রতিদিন। সিভিল সার্জন ও স্বাচিপ নেতাদের চোখের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও কোন সুরাহা বা ব্যবস্থা গ্রহণের রক্ষণ নেই ৮ মাস ধরে। পদটি শুন্য না হওয়া পর্যন্ত আরেকজন চিকিৎসকও পাচ্ছে না হাসপাতাল। সরাইল উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. জাকির খান ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন মিল্লাত বলেন, একাধিকবার নিজের স্ত্রী নিয়ে গিয়ে ফিরে এসেছি। নারীরা চিকিৎসক না পেয়ে সরকারকে গালমন্দ করছেন। উনার সমস্যা থাকলে পদটি ছেড়ে দিলেই পারেন। এভাবে সরাইলের মানুষকে বঞ্চিত করা ঠিক হচ্ছে না। এ বিষয়ে জানতে গতকাল বুধবার বিকাল ২টা ৩৮ মিনিটে ডা: ফৌজিয়া আখতারকে মুঠোফোন (০১৭২০-৯৯০৩৪৩) ফোন দিয়ে ছালাম দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া মাত্র কিছু না বলেই লাইন কেটে দেন। পরবর্তীতে আরো একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো. নোমান মিয়া বলেন, ডা: ফৌজিয়ার যোগদান পত্রটি জমা দিয়েছিলেন লোক মারফত। ৮ মাসের মধ্যে একদিনও তিনি হাসপাতালে আসেননি। ওটি টি বন্ধ হয়ে আছে। প্রতিদিনই মহিলা রোগীরা ঘুরে যাচ্ছে। ৪ বার শোকজ করেছি। একটিরও জবাব দেননি তিনি। জেলা সিভিল সার্জন ডা: মো. একরাম উল্লাহ ডা: ফৌজিয়ার লাগামহীন অনুপস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন, শোকজের পর এখন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়া চলছে। পদটি শুন্য না হলে কোন গাইনি চিকিৎসকও দেয়া যাচ্ছে না। সরাইলের মানুষের সেবার চিন্তা মাথায় রেখে বিধি মোতাবেক কাজ করছি। সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, এই বিষয়ে জেলার দুই সমন্বয় সভায় সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য দিয়েছি। আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন’ আজ পর্যন্ত কোন সুফল পাইনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here