সরকারি প্রজ্ঞাপনে অফিস সময় সকাল ৯টা। এই প্রজ্ঞাপন মানছেন না সরাইল উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার-এর কার্যালয়। নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘন্টা পরও অফিস কক্ষ একেবারে ফাঁকা। আর অফিসারের কক্ষের দরজা বাহিরে হাতল বা হ্যান্ডেল দিয়ে আটকানো। মুঠোফোনে চেষ্টা করেও অডিটর আব্দুল হান্নানের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। লোকজন আসছেন। জনমানব শুন্য অফিস কক্ষ দেখে নিরাশ হয়ে চলে যাচ্ছেন। অনেকে কাছাকাছি এলাকায় ঘুরছেন। এই দফতরের বিরূদ্ধে রয়েছে ইচ্ছে করে বিভিন্ন বিল পাশে কালক্ষেপণের অভিযোগ। আজ বুধবার সকালে ওই দফতরে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। সরজমিনে দেখা যায়, সরাইল সদরের সকাল বাজার এলাকায় টুইন কোয়াটারের সরাইল উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার-এর অস্থায়ী কার্যালয়। নীচতলায় বসেন অডিটর আব্দুল হান্নান সহ আরেকজন। আর দ্বিতীয়তলায় বসেন অফিসার ওয়াহিদুর রহমান। ১৫ জুন বুধবার ঘড়ির কাটায় ঠিক সাড়ে ১১টা। জনমানব শুন্য ওই কক্ষ। জ্বলছে বৈদ্যুতিক বাল্ব। ঘুরছে বৈদ্যুতিক সিলিং ফ্যানও। খাঁ খাঁ করছে চেয়ার দুটি। নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘন্টা পরও কেউ অফিসে আসেননি। বিশ্বাস হচ্ছিল না। এদিক ওদিক তাকাতেই সামনে পড়ে অফিস সহায়ক দেলোয়ার। বিষয়টি জানা ছিল দেলোয়ারের। কিছু বলার আগেই দেলোয়ার ৪ দিন আগে জমা দেওয়া বিলটি ‘পাশকৃত’ নথির স’পে খুঁজতে থাকেন। দুই টেবিলে খুঁজে পাননি। শেষমেষ একটি রেজিষ্ট্রারের ভেতরে পান বিলটি। হাতে নিয়ে বিব্রত দেলোয়ার। হতকচিত চোখে চেয়ে থাকেন সুবিধা ভোগীর দিকে। কিছুক্ষণ পর আস্তে করে বলেন, ভাই আপনার বিলটি পাশ হয়নি। আধা ঘন্টা পরে আসেন। তখনো ফাঁকা পুরো অফিস। এরমধ্যে অনেকেই আসছেন। ফাঁকা অফিস দেখে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ জানতে চাচ্ছেন স্যাররা কখন আসবেন? অডিটর আব্দুল হান্নানের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। বিষয়টির সুরাহা জানতে ১১টা ৪০ মিনিটে দ্বিতীয়তলায় অবস্থানরত অফিসার ওয়াহিদ রহমানের সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা গ্রাহকের। কয়েকটি সিঁড়ি ওঠার পরই দেখা যায় দরজার বাহিরের দিক হাতুলে বা হ্যান্ডেলে আটকানো। হতাশ হয়ে ফিরে গেলেন গ্রাহক। এর আগে গত ১৩ জুন সোমবার সকাল ১১টার দিকে একটি বিল পাশের জন্য জমা দিয়েছিলেন গ্রাহক। আধা ঘন্টা পর অডিটর আব্দুল হান্নান জানালেন আজ হবে না। আগামীকাল অর্থাৎ ১৪ জুন মঙ্গলবারে যেতে বললেন। গ্রাহক চলে গেল। ওই গ্রাহক গতকাল ১৫ জুন গিয়েও দেখেন অফিসে কেউ নেই। তার বিলটিও পাশ হয়নি। আক্ষেপ করে বললেন, ডিজিটাইলেজেশনের যুগে এ কেমন সেবা? সরাইল উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার (চ:দা:) ওয়াহিদুর রহমান বলেন, সরকারি নিয়মানুসারে অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত। আসলে পত্রিকার বিজ্ঞাপনের বিল পাশে আগের নিয়ম নেই। বর্তমানে আমুল পরিবর্তন এসেছে। কাজের প্রয়োজনে আমরা অনেক সময় ২-৩ ঘন্টা অতিরিক্ত সময় কাজ করে থাকি। সেইটা কিন’ কাউন্ট হয় না।
মাহবুব খান বাবুল