কামাল হত্যার ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা || পুলিশের ধরা-ছোয়ার বাহিরে আসামীরা
সরাইলে খাসজমির ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে পুরুষশূন্য হয়ে আছে শাহজাদাপুর গ্রাম। এ ঘটনায় সরাইল থানায় দায়ের হয়েছে হত্যা মামলা। আর এই মামলায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকসহ ১১৯ জনকে দেয়া হয়েছে আসামী। তার মধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি মাসে গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুরে দু’দল গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত হয় কামাল মিয়া। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কামাল মিয়াকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে কামাল মিয়ার লাশ দাফন করা হয়েছে সোমবার বাদ আছর। এদিন থেকে পুলিশের ধর-পাকরে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে অনেকেই। শাহজাদাপুর গ্রামের রিমা বেগম বলেন, কাইজ্জার পর থেইকা আমার ভাই, আব্বা ও স্বামী বাড়িত নাই৷ পুলিশের ডরে তারা অন্য জায়গাতে গেসেগা। এমনই কইরা গ্রামের অনেক বেডা মানুষ (পুরুষ) ভাইগ্গা গেসে।
এদিকে নিহত কামাল মিয়ার ছেলে তোফায়েল বাদী হয়ে সরাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে শাহজাদাপুর খাঁ বাড়ির বাসিন্দা ব্যবসায়ী ও সংবাদকর্মী মো. মামুন খানকে। দ্বিতীয় আসামি শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা. আছমা আক্তার। তাছাড়া রিপন মিয়া (৪২), মোশারফ (৩৮), ইকবাল ৩৬), এস এম মনোয়ার (৩৫) কে ঘটনার হোতা হিসেবে মামলায় নাম রয়েছে। তবে সাংবাদিক মামুন ও ইউপি চেয়ারম্যান আছমা দু’জনকেই এই দাঙ্গা আর খুনের হুকুমদাতা বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
হত্যার হুকুম দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আছমা আক্তার বলেন, দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা করার সময় জুয়েল মেম্বার আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিল। মিথ্যা আসামি করে দেখে নিয়েছে। আমি গ্রাম্য রাজনীতি ও গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। মামলার প্রধান আসামি সংবাদকর্মী মামুন খান বলেন, আমাকে কেন প্রধান আসামি করা হলো জানি না। আমার কোনো সত্য রিপোর্টে তারা হয়তো ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসবে। মূলহত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী জানিয়ে নিহত কামাল মিয়ার ছেলে তোফায়েল বলেন, মামলার পর এখনো মূল আসামী গ্রেপ্তার হয় নি। যতদিন না মূল আসামীরা গ্রেপ্তার হবে ততদিন আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় থাকব। তাই অনতিবিলম্বে আসামীদের গ্রেপ্তারে দাবী জানাই।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক। তদন্ত স্বাপেক্ষে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।