মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
শীত মৌসুমের পিঠার দোকানগুলোতে রীতিমতো মেলা বসে পিঠাপ্রেমিদের। বিশেষ করে সন্ধ্যায় উপচেপড়া ভিড় লাগে দোকানগুলোতে। আর তাই শীত মৌসুমে বিভিন্ন পিঠা বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হন অনেকেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মাজেদা বেগমও (৫০) এমনই একজন। তার বানানো হরেক স্বাদের পিঠা খেতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন মানুষজন। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি হয় তার দোকানে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ ৯ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করেই চলছে মাজেদার সংসার। প্রতিদিন চিতইসহ বিভিন্ন পিঠা তৈরি করেন তিনি। ৮টি চুলায় ১ হাজারেরও বেশি চিতই পিঠা তৈরি হয়। সাধারণ চিতইয়ের পাশাপাশি ডিম ও মসলাসহ স্পেশাল ডিম পিঠাও তৈরি হয় মাজেদার দোকানে। সাধারণ চিতই ১০ টাকা আর ডিম-মশলা দিয়ে বানানো চিতইয়ের জন্য ক্রেতাদের গুনতে হয় ৩০ টাকা।
পিঠার সঙ্গে ১০০ পদের ভর্তা ফ্রি দেয়া হয়। ভর্তা বানানোর জন্য ১২-১৩ রকমের শুঁটকি, বিভিন্ন রকমের মাছ, কয়েক রকমের ডাল, বাদাম, ধনেপাতা, মরিচ ও মৌসুমি সবজি ব্যবহার করা হয়। পার্শ্ববর্তী নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ থেকে পিঠা খেতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে মাজেদা আপার পিঠার সঙ্গে শত পদের ভর্তা দেয়ার কথা জানতে পারি। তাই এসেছি পিঠা খাওয়ার জন্য। আমাদের এলাকায় চিতই পিঠা পাওয়া গেলেও শত পদের ভর্তা পাওয়া যায়না।
নরসিংদী থেকে আসা ইমরান হোসেন বলেন, আমরা পাঁচটি মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েকজন বন্ধু মিলে এখানে পিঠা খেতে এসেছি। চিতই পিঠা দিয়ে টাটকা ভর্তার স্বাদ বেশ ভালই লেগেছে।
মাজেদা বেগমের স্বামী মো. রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমার পাঁচ মেয়ে, নয় বছর যাবত পিঠা বানানোর ব্যবসা করে দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছি, তিন মেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে। আমাদের সংসার ভালই চলছে। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আমাদের দোকানে আসছে পিঠা খেতে। এটি আমাদের জন্য আনন্দের।
মাজেদা বেগম বলেন, প্রথমে ৫০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে পিঠার ব্যবসা শুরু করেছিলাম। এখন দোকানে বেচাকেনা ভালো। শুক্রবারে ভিড় থাকে বেশি। তাই সেদিন স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ চালের পিঠা বিক্রি হয়।