Dhaka 8:26 am, Sunday, 8 September 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিপিএফ এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির বার্ষিক সাধারন সভা অনুষ্ঠিত বন্যার্তদের পাশে দাড়িয়েছে চাঁদপুর নৌ পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির বীমার মেয়াদপূর্তি চেক প্রদান ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলের আহ্বানে আখাউড়ায় ত্রাণ বিতরণ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে গুজব প্রতিরোধে সেমিনার ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়রকে অশ্রুসিক্ত বিদায় সতীর্থদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সভাপতি নির্বাচিত জাবেদ রহিম বিজন

পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে,অত:পর মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে শ্বশুরের ধর্ষন মামলা

  • Reporter Name
  • Update Time : 02:49:11 pm, Sunday, 3 September 2023
  • 297 Time View

পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে,অত:পর মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে শ্বশুরের ধর্ষন মামলা

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জিঃ
পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ের পর মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা দিয়েছেন শ্বশুর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের এ ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এলাকায়। জানা যায়-কর্জ টাকা ফেরত চাওয়ায় শ্বশুর ক্ষিপ্ত হন মেয়ের স্বামীর ওপর। মেয়েকে অপহরণ এবং ধর্ষনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন জামাইয়ের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে জামাই শ্বশুরের কর্জ নেয়া ১৭ লাখ টাকা ফেরত পেতে লিগ্যাল নোটিশ এবং প্রতারনার অভিযোগ দিয়েছেন আদালতে। শ্বশুর বাড়িতে আটকে রাখা স্ত্রী উদ্ধারেও আদালতে আবেদন করেছেন জামাই।

বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপর ইউনিয়নের কালাছড়ার মো: ফুল মিয়ার মেয়ে ইসরাত জাহান জুইয়ের সাথে সরাইলের ফকিরমোড়া গ্রামের মোরাম মিয়ার ছেলে আবদুর রউফের পারিবারিক সম্মতিতে নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে বিয়ে হয় এ বছরের ২৯শে মে। এরপর মেয়ের বাবা ফুল মিয়ার উপস্থিতিতে কাজী অফিসে বিয়েটি রেজিষ্ট্রি হয়। নিকাহনামাতেও ফুল মিয়ার স্বাক্ষর রয়েছে। বিয়েতে মোহরানা বাবদ ধার্য্য করা ১০ লাখ টাকার পুরোটাই নগদ উসুল দেখানো হয়েছে নিকাহনামায়। আবদুর রউফ অভিযোগ করেন-মোহরানার ১০ লাখ টাকার পুরোটা নগদ পরিশোধের পর বাড়িতে বিল্ডিং করার জন্যে শ্বশুর ফুল মিয়া তার কাছ থেকে গত ১০ই জুন আরো ১৭ লাখ টাকা ধার নেন। এসময় পিত্রালয়ে থাকা তার স্ত্রী জুইকে কিছুদিনের মধ্যে তার কাছে পাঠিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন ফুল মিয়া। পরবর্তীতে স্ত্রীকে ফেরত আনতে গেলে জুইয়ের মা শাহানা বেগম ও বড় বোন রোজিনা তাকে বাড়ি থেকে অপমান-অপদস্থ করে বের করে দেন। জুইয়ের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে জানতে পারেন, তার কাছ থেকে নেয়া টাকার চেয়ে আরো বেশী টাকার বিনিময়ে তার স্ত্রীকে অবৈধভাবে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার পায়তারা করছেন শ্বশুর ফুল মিয়া ও শ্বাশুরী শাহানা বেগম। এই অবস্থায় ৩রা আগষ্ট লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। এরপর স্ত্রীকে উদ্ধারে ৭ই আগষ্ট আদালতের শরনাপন্ন হন। এনিয়ে আদালতে যাওয়ায় গত ১০ই আগষ্ট সরাইলে রউফের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে তাকে মারধোর করতে উদ্যত হন শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় ওইদিনই নিরাপত্তাহীন হয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে ১০৭ ধারার মামলা করেন। কর্জ টাকা ফেরত না দিয়ে হুমকী এবং টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করলে ফুল মিয়ার বিরুদ্ধে গত ২১আগষ্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি অভিযোগ দেন রউফ। ওই একই তারিখে ফুল মিয়া তার মেয়ে জুইকে অপহরন এবং ধর্ষনের অভিযোগ এনে জামাই আবদুর রউফসহ ৩জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যৃনালে মামলা করেন। মামলার আর্জিতে বলা হয় বড় ব্যবসায়ী ও অবিবাহিত পরিচয়ে প্রতারনা করে তার মেয়েকে প্রেমের ফাদে ফেলে বিবাহিত এবং ৩ সন্তানের জনক রউফ। এরপর বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। মেয়ে নাবালিকা বলে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে গত ২৮শে মে স্কুলে যাওয়ার পথে তার মেয়েকে অপহরন করে নিয়ে যায় রউফ। পরে ৩ জন মিলে ধর্ষন করার হুমকী দিয়ে বিয়েতে রাজী করায়। এরপর কথিত বিয়ের নামে দিনের পর দিন জোরপূর্বক ধর্ষন করতে থাকে। মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ফুল মিয়ার মেয়ে রোজিনা পুলিশ সদস্য হওয়ায় এব্যাপারে প্রভাব বিস্তার করছে বলে অভিযোগ করেন রউফ।

এদিকে সরজমিনে কালাছড়া গ্রামে গেলে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরহাদ আলী জানান,ওই ছেলে একবছর ধরেই ফুল মিয়ার বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া এবং রাত্রিযাপন করতো। গ্রামের মানুষের মধ্যে এনিয়ে নানা কথাবার্তা চলতে থাকে। মাস তিনেক আগে ফুল মিয়া আমাকে এবং সাবেক ইউপি সদস্য হারিছ মিয়াকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে জানান কোর্টে তার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের ভিডিও দেখান। তার মেয়ে ক্লাশ নাইনে পড়ে,বিয়ের বয়স হয়নি বললে তিনি আমাকে বলেন কোর্টে সিষ্টেম করেই বিয়ে দিয়েছি। শুনেছি জামাই নগদ ২৮-৩০ লাখ টাকা এবং ৮ ভরি স্বর্নালংকার দিয়েছে। বিয়ের পর ৩ মাস সংসার করেছে। এখন ধর্ষনের মামলা কিভাবে হলো তা বুঝতে পারছিনা। ফুল মিয়া বলেন-যা হওয়ার হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা আছে। আমি কোন কথা বলব না। আমার মানসম্মান আছে। আমি কোর্টে মামলা করতেও রাজি ছিলাম না। ওরা আমার বিরুদ্ধে আগে মামলা করেছে বলে আমি করেছি। খোজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অফিসে হামলা,ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো এবং আগুন দেয়ার ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক আইনের মামলার অন্যতম আসামী ফুল মিয়া। তার বিরুদ্ধে এই মামলায় চার্জশীট হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে,অত:পর মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে শ্বশুরের ধর্ষন মামলা

Update Time : 02:49:11 pm, Sunday, 3 September 2023

মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকন্ঞ্জিঃ
পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ের পর মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা দিয়েছেন শ্বশুর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের এ ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এলাকায়। জানা যায়-কর্জ টাকা ফেরত চাওয়ায় শ্বশুর ক্ষিপ্ত হন মেয়ের স্বামীর ওপর। মেয়েকে অপহরণ এবং ধর্ষনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন জামাইয়ের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে জামাই শ্বশুরের কর্জ নেয়া ১৭ লাখ টাকা ফেরত পেতে লিগ্যাল নোটিশ এবং প্রতারনার অভিযোগ দিয়েছেন আদালতে। শ্বশুর বাড়িতে আটকে রাখা স্ত্রী উদ্ধারেও আদালতে আবেদন করেছেন জামাই।

বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপর ইউনিয়নের কালাছড়ার মো: ফুল মিয়ার মেয়ে ইসরাত জাহান জুইয়ের সাথে সরাইলের ফকিরমোড়া গ্রামের মোরাম মিয়ার ছেলে আবদুর রউফের পারিবারিক সম্মতিতে নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে বিয়ে হয় এ বছরের ২৯শে মে। এরপর মেয়ের বাবা ফুল মিয়ার উপস্থিতিতে কাজী অফিসে বিয়েটি রেজিষ্ট্রি হয়। নিকাহনামাতেও ফুল মিয়ার স্বাক্ষর রয়েছে। বিয়েতে মোহরানা বাবদ ধার্য্য করা ১০ লাখ টাকার পুরোটাই নগদ উসুল দেখানো হয়েছে নিকাহনামায়। আবদুর রউফ অভিযোগ করেন-মোহরানার ১০ লাখ টাকার পুরোটা নগদ পরিশোধের পর বাড়িতে বিল্ডিং করার জন্যে শ্বশুর ফুল মিয়া তার কাছ থেকে গত ১০ই জুন আরো ১৭ লাখ টাকা ধার নেন। এসময় পিত্রালয়ে থাকা তার স্ত্রী জুইকে কিছুদিনের মধ্যে তার কাছে পাঠিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন ফুল মিয়া। পরবর্তীতে স্ত্রীকে ফেরত আনতে গেলে জুইয়ের মা শাহানা বেগম ও বড় বোন রোজিনা তাকে বাড়ি থেকে অপমান-অপদস্থ করে বের করে দেন। জুইয়ের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে জানতে পারেন, তার কাছ থেকে নেয়া টাকার চেয়ে আরো বেশী টাকার বিনিময়ে তার স্ত্রীকে অবৈধভাবে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার পায়তারা করছেন শ্বশুর ফুল মিয়া ও শ্বাশুরী শাহানা বেগম। এই অবস্থায় ৩রা আগষ্ট লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। এরপর স্ত্রীকে উদ্ধারে ৭ই আগষ্ট আদালতের শরনাপন্ন হন। এনিয়ে আদালতে যাওয়ায় গত ১০ই আগষ্ট সরাইলে রউফের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে তাকে মারধোর করতে উদ্যত হন শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় ওইদিনই নিরাপত্তাহীন হয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে ১০৭ ধারার মামলা করেন। কর্জ টাকা ফেরত না দিয়ে হুমকী এবং টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করলে ফুল মিয়ার বিরুদ্ধে গত ২১আগষ্ট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি অভিযোগ দেন রউফ। ওই একই তারিখে ফুল মিয়া তার মেয়ে জুইকে অপহরন এবং ধর্ষনের অভিযোগ এনে জামাই আবদুর রউফসহ ৩জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যৃনালে মামলা করেন। মামলার আর্জিতে বলা হয় বড় ব্যবসায়ী ও অবিবাহিত পরিচয়ে প্রতারনা করে তার মেয়েকে প্রেমের ফাদে ফেলে বিবাহিত এবং ৩ সন্তানের জনক রউফ। এরপর বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। মেয়ে নাবালিকা বলে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে গত ২৮শে মে স্কুলে যাওয়ার পথে তার মেয়েকে অপহরন করে নিয়ে যায় রউফ। পরে ৩ জন মিলে ধর্ষন করার হুমকী দিয়ে বিয়েতে রাজী করায়। এরপর কথিত বিয়ের নামে দিনের পর দিন জোরপূর্বক ধর্ষন করতে থাকে। মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ফুল মিয়ার মেয়ে রোজিনা পুলিশ সদস্য হওয়ায় এব্যাপারে প্রভাব বিস্তার করছে বলে অভিযোগ করেন রউফ।

এদিকে সরজমিনে কালাছড়া গ্রামে গেলে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরহাদ আলী জানান,ওই ছেলে একবছর ধরেই ফুল মিয়ার বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া এবং রাত্রিযাপন করতো। গ্রামের মানুষের মধ্যে এনিয়ে নানা কথাবার্তা চলতে থাকে। মাস তিনেক আগে ফুল মিয়া আমাকে এবং সাবেক ইউপি সদস্য হারিছ মিয়াকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে জানান কোর্টে তার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের ভিডিও দেখান। তার মেয়ে ক্লাশ নাইনে পড়ে,বিয়ের বয়স হয়নি বললে তিনি আমাকে বলেন কোর্টে সিষ্টেম করেই বিয়ে দিয়েছি। শুনেছি জামাই নগদ ২৮-৩০ লাখ টাকা এবং ৮ ভরি স্বর্নালংকার দিয়েছে। বিয়ের পর ৩ মাস সংসার করেছে। এখন ধর্ষনের মামলা কিভাবে হলো তা বুঝতে পারছিনা। ফুল মিয়া বলেন-যা হওয়ার হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলা আছে। আমি কোন কথা বলব না। আমার মানসম্মান আছে। আমি কোর্টে মামলা করতেও রাজি ছিলাম না। ওরা আমার বিরুদ্ধে আগে মামলা করেছে বলে আমি করেছি। খোজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অফিসে হামলা,ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো এবং আগুন দেয়ার ঘটনায় দায়ের করা বিস্ফোরক আইনের মামলার অন্যতম আসামী ফুল মিয়া। তার বিরুদ্ধে এই মামলায় চার্জশীট হয়।