Dhaka 2:04 pm, Friday, 4 October 2024
News Title :
নারী ও যুব অধিকার অর্জনে সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারীদের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূয়া সাংবাদিক ও অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে কমিটি গঠন সরাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে চার ইটভাটা প্রাইম বাংলা নিউজ: জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল লিখিত চুক্তি করেও ধার নেয়া টাকা নেয়নি মর্মে অস্বীকার, সরাইলে ভুক্তভোগীর আদালতে মামলা দায়ের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিপিএফ এর মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির বার্ষিক সাধারন সভা অনুষ্ঠিত

নাসিরনগরে ট্রাক্টরের চাপায় শিশুর মৃত্যু মামলা করে গ্রামছাড়া শিশুর পিতা ; হত্যার হুমকির অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:25:20 pm, Saturday, 19 February 2022
  • 418 Time View

নাসিরনগরে ইটভাটার মাটি বহনকারী অনুমোদন বিহীন ট্রাক্টর চাপায় শিশু রাসেল নিহতের ঘটনায় সড়ক অবরোধ ও মামলা করে গ্রামছাড়া এখন শিশুর পিতা ও চাচা। প্রধান আসামী আ’লীগ নেতা কাপ্তান মিয়া ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের হুমকি ধমকিতে ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন তাঁরা। চরম আতঙ্কে আছেন নিহত শিশুর স্বজনরা। ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কোন আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো বিষয়টিকে প্রচার করা থেকে বিরত থাকার চাপ আছে গ্রামবাসীর উপর। ওদিকে সন্তান হারা মায়ের আহাজারি থামছে না এখনো। আদরের নাতির নির্মম মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না দাদী সুফিয়া খাতুন (৫৫)। প্রতি মুহুর্তেই জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি। সরজমিন অনুসন্ধান, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, হরিপুর ইউনিয়নের টেকপাড়া গ্রামের আব্দুল আওয়াল মিয়ার ছেলে শিশু রাসেল (০৭)। তিন সন্তানের মধ্যে রাসেলই সবার বড়। আওয়াল অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। গত সোমবার টেকপাড়া গ্রামেই ট্রাক্টর চাপায় রাসেল মারা যায়। এ ঘটনায় মামলা দিতে গিয়ে বাঁধাগ্রস্ত হন আওয়াল। ঘটনার প্রতিবাদে মামলা না নেওয়া পর্যন্ত লাশ দাফন না করার অঙ্গিকার করেন শিশুর পিতা। নাসিরনগর-মাধবপুর সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসী। গত মঙ্গলবার রাতে মামলা নথিভুক্ত করেন পুলিশ। দুইদিন পর বুধবার দুপুরে ওই শিশুর লাশ দাফন করা হয়। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, কাপ্তান মিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক। ভাবশাপ এমন যে তিনিই ওই এলাকার হর্তাকর্তা। যা বলবেন তাই হতে হবে। তার কথা বা স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটলেই অগ্নিমূর্তি ধারণ করেন। ওই ট্রাক্টরে করে তিনি ইটভাটায় মাটি সাপ্লাই দিচ্ছিলেন। ট্রাক্টরের অবাধ যাতায়তে গ্রামীণ সড়ক বেহাল হওয়ায় গত রোববার প্রতিবাদ করেন শিশুর ইতালি প্রবাসী চাচা দাউদ খাঁ ও পিতা আওয়াল মিয়া। ওইদিন বিকেলেই আওয়ালের ঘর সংলগ্ন চার রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে কাপ্তান মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আগামীকাল থেকে এসব বাড়ির কোন মুরগীর বাচ্চাও যেন রাস্তায় না আসে। গাড়ির সামনে যা পড়বে সব পিষে ফেলবে। শুধু গাড়ি কেন? এখানে ধূঁলা উড়বে। কে বাঁধা দেয় দেখি।’পরের দিন সোমবার এ সড়কেই বেপরোয়া গতির ট্রাক্টরের চাপায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নাসিরনগর থানায় মামলা করতে যায় শিশুর পরিবার। মামলা নিতে রাজি হননি পুলিশ। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। হরিপুর বাজার সংলগ্ন পালবাড়ি এলাকায় নাসিরনগর-মাধবপুর সড়কটি ২ ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন এলাকাবাসী। ঘটনার ৩৬ ঘন্টা পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দায়ের করা হত্যা মামলাটি গত মঙ্গলবার রাতে নথিভূক্ত করেন পুলিশ। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় আ’লীগ নেতা কাপ্তানকে। তার ২ ছেলে খোকন মিয়া (২২), শুকন মিয়া (১৫) ও স্বজন দ্বীন ইসলামসহ মোট আসামী ৫ জন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাসেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকে কাতর গোটা পরিবার। কাঁদছেন আশপাশের লোকজনও। রাসেলের দাদী সুফিয়া বেগম জ্ঞান হারাচ্ছেন বারবার। চিৎকার করে কাঁদছেন শিশুর মা শাহানা বেগম (২৫)। শাহানা বেগম বলেন, “মজা খাওয়ার জন্য রাসেল ১০ টাকা চেয়েছিল। টাকা নিয়ে দুই ভাই দোকানে চলে যায়। চিপস্‌ এনে সড়কের ডান পাশে পাইপের উপর বসে খাচ্ছিল রাসেল। কিছুক্ষণ পরই ট্রাক্টরের চাপায় রাসেল লাশ। ১০ টাকাই যে সন্তানের জীবন কেড়ে নিবে আমি জানতাম না। মামলার আসামী খোকনকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এলাকায় ঘুরাফেরা করতে দেখেছি।” বাড়িতে নেই রাসেলের পিতা আওয়াল মিয়া ও চাচা দাউদ খাঁ। লোকজন জানায়, মামলার পর থেকে তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিচ্ছে কাপ্তান। তারা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। মুঠোফোনে আওয়াল মিয়া বলেন, আরো ৫-৬ জন মেরে ফেললেও কিছুই হবে না বলে আমাকে হুমকি দিচ্ছেন কাপ্তান মিয়া ও তার লোকেরা। আমি টেনশনে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি। ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে আছি। তাই সন্তানকে দাফনের পরও বৃদ্ধ মা স্ত্রী সন্তানদের ফেলে বাড়ির বাহিরে অবস্থান করছি। আওয়ালের প্রতিবেশী মহসিন মিয়া, সোহেল মিয়া, ইসমাইল হোসেন ও মিলন বেগম বলেন, এ সড়ক দিয়ে ৩০-৪০টি ট্রাক্টরে মাটি সাপ্লাই করে কাপ্তান। ট্রাক্টরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ গ্রামবাসী। ট্রাক্টর চলাচলে প্রতিবাদের কারণেই পরের দিন শিশুটিকে হত্যা করেছে কাপ্তানের মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চালক। লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও মামলা করায় আওয়াল ও দাউদ এখন গ্রামছাড়া। প্রত্যক্ষদর্শী ইদন আলী বলেন, দুপুরের দিকে নিজেদের ঘর ঘেষা পাইপের উপর বসে কি যেন খাচ্ছিল রাসেল। একটু দূরে আমি মুঠোফোনে কথা বলছিলাম। মূহুর্তের মধ্যেই দেখি ট্রাক্টরের সামনের চাকার নিচে শিশুটি। বাম উরূর মাংশ ছিটকে গেছে। মগজ বেরিয়ে গেছে। দাঁত ভেঙ্গে পড়ে গেছে। বাম হাতটি ৩ টুকরা হয়ে গেছে। চালক দৌঁড়ে কাপ্তানের বাড়ির দিকে চলে গেছে। আওয়ালের বাড়ি থেকে দেড় শত গজ দূরেই কাপ্তানের বাড়ি। কাপ্তান ও তার ছেলেরা বাড়িতে নেই। নতুন বহুতল ভবন নির্মানের কাজ চলছে। তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, ‘তারা মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করছে। রাস্তায় ট্রাক্টরের চাপায় শিশু মারা গেছে। আমাদের অপরাধ কি? দূর্ঘটনায় মানুষ মারা গেলে হত্যা মামলা দেওয়া যায়? এ গুলো শত্রূতা ও ষড়যন্ত্র। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ বলেন, ট্রাক্টরের চাপায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কে বা কারা বিষয়টিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে ষড়যন্ত্র করছেন। তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিষয়টিই প্রতিবেদনে আসবে। চালকের নাম ঠিকানা পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করছি না। নিহত শিশুটি যেন সঠিক বিচার পায়। সেই চেষ্টাও অব্যাহত আছে। দ্রূততম সময়ের মধ্যে আসাসীদের গ্রেপ্তার করা হবে।

মাহবুব খান বাবুল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

নারী ও যুব অধিকার অর্জনে সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারীদের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

নাসিরনগরে ট্রাক্টরের চাপায় শিশুর মৃত্যু মামলা করে গ্রামছাড়া শিশুর পিতা ; হত্যার হুমকির অভিযোগ

Update Time : 03:25:20 pm, Saturday, 19 February 2022

নাসিরনগরে ইটভাটার মাটি বহনকারী অনুমোদন বিহীন ট্রাক্টর চাপায় শিশু রাসেল নিহতের ঘটনায় সড়ক অবরোধ ও মামলা করে গ্রামছাড়া এখন শিশুর পিতা ও চাচা। প্রধান আসামী আ’লীগ নেতা কাপ্তান মিয়া ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের হুমকি ধমকিতে ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন তাঁরা। চরম আতঙ্কে আছেন নিহত শিশুর স্বজনরা। ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কোন আসামী গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো বিষয়টিকে প্রচার করা থেকে বিরত থাকার চাপ আছে গ্রামবাসীর উপর। ওদিকে সন্তান হারা মায়ের আহাজারি থামছে না এখনো। আদরের নাতির নির্মম মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না দাদী সুফিয়া খাতুন (৫৫)। প্রতি মুহুর্তেই জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি। সরজমিন অনুসন্ধান, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, হরিপুর ইউনিয়নের টেকপাড়া গ্রামের আব্দুল আওয়াল মিয়ার ছেলে শিশু রাসেল (০৭)। তিন সন্তানের মধ্যে রাসেলই সবার বড়। আওয়াল অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। গত সোমবার টেকপাড়া গ্রামেই ট্রাক্টর চাপায় রাসেল মারা যায়। এ ঘটনায় মামলা দিতে গিয়ে বাঁধাগ্রস্ত হন আওয়াল। ঘটনার প্রতিবাদে মামলা না নেওয়া পর্যন্ত লাশ দাফন না করার অঙ্গিকার করেন শিশুর পিতা। নাসিরনগর-মাধবপুর সড়ক অবরোধ করেন গ্রামবাসী। গত মঙ্গলবার রাতে মামলা নথিভুক্ত করেন পুলিশ। দুইদিন পর বুধবার দুপুরে ওই শিশুর লাশ দাফন করা হয়। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, কাপ্তান মিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক। ভাবশাপ এমন যে তিনিই ওই এলাকার হর্তাকর্তা। যা বলবেন তাই হতে হবে। তার কথা বা স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটলেই অগ্নিমূর্তি ধারণ করেন। ওই ট্রাক্টরে করে তিনি ইটভাটায় মাটি সাপ্লাই দিচ্ছিলেন। ট্রাক্টরের অবাধ যাতায়তে গ্রামীণ সড়ক বেহাল হওয়ায় গত রোববার প্রতিবাদ করেন শিশুর ইতালি প্রবাসী চাচা দাউদ খাঁ ও পিতা আওয়াল মিয়া। ওইদিন বিকেলেই আওয়ালের ঘর সংলগ্ন চার রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে কাপ্তান মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আগামীকাল থেকে এসব বাড়ির কোন মুরগীর বাচ্চাও যেন রাস্তায় না আসে। গাড়ির সামনে যা পড়বে সব পিষে ফেলবে। শুধু গাড়ি কেন? এখানে ধূঁলা উড়বে। কে বাঁধা দেয় দেখি।’পরের দিন সোমবার এ সড়কেই বেপরোয়া গতির ট্রাক্টরের চাপায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নাসিরনগর থানায় মামলা করতে যায় শিশুর পরিবার। মামলা নিতে রাজি হননি পুলিশ। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। হরিপুর বাজার সংলগ্ন পালবাড়ি এলাকায় নাসিরনগর-মাধবপুর সড়কটি ২ ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন এলাকাবাসী। ঘটনার ৩৬ ঘন্টা পর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দায়ের করা হত্যা মামলাটি গত মঙ্গলবার রাতে নথিভূক্ত করেন পুলিশ। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় আ’লীগ নেতা কাপ্তানকে। তার ২ ছেলে খোকন মিয়া (২২), শুকন মিয়া (১৫) ও স্বজন দ্বীন ইসলামসহ মোট আসামী ৫ জন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাসেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকে কাতর গোটা পরিবার। কাঁদছেন আশপাশের লোকজনও। রাসেলের দাদী সুফিয়া বেগম জ্ঞান হারাচ্ছেন বারবার। চিৎকার করে কাঁদছেন শিশুর মা শাহানা বেগম (২৫)। শাহানা বেগম বলেন, “মজা খাওয়ার জন্য রাসেল ১০ টাকা চেয়েছিল। টাকা নিয়ে দুই ভাই দোকানে চলে যায়। চিপস্‌ এনে সড়কের ডান পাশে পাইপের উপর বসে খাচ্ছিল রাসেল। কিছুক্ষণ পরই ট্রাক্টরের চাপায় রাসেল লাশ। ১০ টাকাই যে সন্তানের জীবন কেড়ে নিবে আমি জানতাম না। মামলার আসামী খোকনকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এলাকায় ঘুরাফেরা করতে দেখেছি।” বাড়িতে নেই রাসেলের পিতা আওয়াল মিয়া ও চাচা দাউদ খাঁ। লোকজন জানায়, মামলার পর থেকে তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিচ্ছে কাপ্তান। তারা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। মুঠোফোনে আওয়াল মিয়া বলেন, আরো ৫-৬ জন মেরে ফেললেও কিছুই হবে না বলে আমাকে হুমকি দিচ্ছেন কাপ্তান মিয়া ও তার লোকেরা। আমি টেনশনে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি। ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে আছি। তাই সন্তানকে দাফনের পরও বৃদ্ধ মা স্ত্রী সন্তানদের ফেলে বাড়ির বাহিরে অবস্থান করছি। আওয়ালের প্রতিবেশী মহসিন মিয়া, সোহেল মিয়া, ইসমাইল হোসেন ও মিলন বেগম বলেন, এ সড়ক দিয়ে ৩০-৪০টি ট্রাক্টরে মাটি সাপ্লাই করে কাপ্তান। ট্রাক্টরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ গ্রামবাসী। ট্রাক্টর চলাচলে প্রতিবাদের কারণেই পরের দিন শিশুটিকে হত্যা করেছে কাপ্তানের মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চালক। লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও মামলা করায় আওয়াল ও দাউদ এখন গ্রামছাড়া। প্রত্যক্ষদর্শী ইদন আলী বলেন, দুপুরের দিকে নিজেদের ঘর ঘেষা পাইপের উপর বসে কি যেন খাচ্ছিল রাসেল। একটু দূরে আমি মুঠোফোনে কথা বলছিলাম। মূহুর্তের মধ্যেই দেখি ট্রাক্টরের সামনের চাকার নিচে শিশুটি। বাম উরূর মাংশ ছিটকে গেছে। মগজ বেরিয়ে গেছে। দাঁত ভেঙ্গে পড়ে গেছে। বাম হাতটি ৩ টুকরা হয়ে গেছে। চালক দৌঁড়ে কাপ্তানের বাড়ির দিকে চলে গেছে। আওয়ালের বাড়ি থেকে দেড় শত গজ দূরেই কাপ্তানের বাড়ি। কাপ্তান ও তার ছেলেরা বাড়িতে নেই। নতুন বহুতল ভবন নির্মানের কাজ চলছে। তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, ‘তারা মিথ্যা অভিযোগ প্রচার করছে। রাস্তায় ট্রাক্টরের চাপায় শিশু মারা গেছে। আমাদের অপরাধ কি? দূর্ঘটনায় মানুষ মারা গেলে হত্যা মামলা দেওয়া যায়? এ গুলো শত্রূতা ও ষড়যন্ত্র। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ বলেন, ট্রাক্টরের চাপায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কে বা কারা বিষয়টিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে ষড়যন্ত্র করছেন। তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিষয়টিই প্রতিবেদনে আসবে। চালকের নাম ঠিকানা পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করছি না। নিহত শিশুটি যেন সঠিক বিচার পায়। সেই চেষ্টাও অব্যাহত আছে। দ্রূততম সময়ের মধ্যে আসাসীদের গ্রেপ্তার করা হবে।

মাহবুব খান বাবুল