Dhaka 8:42 am, Monday, 6 May 2024
News Title :
সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল মা-বাবার নিয়মিত ঝগড়া বিরক্ত হয়ে থানায় শিশু সন্তান সিয়াম পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩

সরাইলে অবাধে চলছে নদী দখল

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:25:45 pm, Sunday, 1 May 2022
  • 158 Time View

সরাইলে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে চলছে নদী দখল। সম্প্রতি ১৫-১৬ জন নদী দখলদারের তালিকা নদী রক্ষা কমিশনে পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অধিকাংশ দখলদার প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের লোক। দখলমুক্তের চেষ্টা করে মামলার আসামী হয়েছেন ইউএনও এসি ল্যান্ড। তাই অনেক সময় নীরব থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিছু জায়গায় চলছে ম্যানেজ বাণিজ্য। দিনদিন ছোট হয়ে আসছে নদী। হারাচ্ছে নাব্যতা। বিলীন হতে চলেছে মাছ ধরার জাল। দূর্লভ হয়ে যাচ্ছে নদীর মাছ। দীর্ঘ ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে সরাইল উপজেলার অরুয়াইলে তিতাস নদীতে চলছে এ দখল তান্ডব। নদী দখলে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশের অভিযোগ করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, অরুয়াইল ও পাকশিমুল গ্রামের সীমানা ঘেষে প্রবাহিত হয়েছে তিতাস নদী। হাজার বছরের ঐতিহ্য বুকে ধারন করে আছে তিতাস। দেশের বিভিন্ন জেলার সাথে নৌ পথে ওই ইউনিয়নের বাসিন্ধাদের অবাধ যাতায়তের মাধ্যম হচ্ছে এ নদী। এ ছাড়া রয়েছে নদীর তরতাজা মাছ। বাদে অরুয়াইল মৌজার সাবেক ৩০৩ ও হালে ১৬৮ নং দাগের ওই নদীটি ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত। সেখানে নদীর দু’পাড়ে অনেক আগেই গড়ে উঠেছে দু’টি বাজার। নদীর পশ্চিম পাড়ে অরুয়াইল। আর পূর্ব পাড়ে পাকশিমুল গ্রাম। উভয় পাড়ে রয়েছে কলেজ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। তিতাস নদীতে ভাসমান ছোট ডিঙ্গি নৌকাই ছিল দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। তখনও দখলদাররা ছিল সক্রিয়। ২০০৯ সালে নদীর উপর নির্মিত হয়েছে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭মিটার প্রস’ একটি সেঁতু। সেঁতুটি চালু হওয়ার পর আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে সেখানকার ভূমি খেঁকোরা। উভয় পাড়ে সেঁতুর দু’পাশ ঘিরে নদী দখলের প্রতিযোগীতায় নামে দখলদাররা। নদীর পাড় ঘেষা বিএডিসি থেকে শ্বশান ঘাট পর্যন্ত ভিট মালিকরা নিয়মিত দখল করে চলেছেন নদী।

দক্ষিণ বাজার এলাকায় চলছে নদীর জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা। নুরূদ্দিন নামের এক ব্যক্তিই দখল করেছেন কোটি টাকা মূল্যের জায়গা। এভাবে দখল চলছে ধামাউড়া নৌঘাট এলাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া ড্রেজারযুক্ত ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে বালু এনে তারা নদীর পাশে ফেলে। পরে খুঁটি বসিয়ে আস্তে আস্তে মাটি ভরাট করে। প্রথমে টিনের ঘর। কিছুদিন পরই চলে পাকা ইমারত নির্মাণের কাজ। পরে চড়া মূল্যের জামানত ও ভাড়ায় দিয়ে দেয় দোকান। কোটি টাকা বাজেটের নৌকা তৈরী করতে নদী দখল করে চালায় ওয়ার্কসপের (ডগ ইয়ার্ড) কাজ। একটি নৌকা তৈরী করতে সময় লাগে ৩-৪ মাস। নদীর ২০-৩০ জায়গায় চলছে ডগের কাজ। পশ্চিম পাড় অরুয়াইলে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরী করা হয়েছিল একটি পাকা ঘাটলা। যেখানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পণ্যবোঝাই নৌকার মালামাল উঠানামার কথা ছিল। কিন্তু দখলদাররা এত বড় ঘাটলা খালি পড়ে থাকার লোভ সামলাতে পারেনি। তারা কৌশলে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের সহায়তায় ওই ঘাটলাকে ফেরিফেরি করে বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলে গত ৪-৫ বছর আগে। ওই ঘাটলার পূর্ব পাশে নদীতে আরো মাটি ফেলে দখলে নেয় ভূমি খেঁকুরা। সুবিধা বঞ্চিত হয় নদী তীরবর্তী ব্যবসায়িরা। আর মাটি চাপা পড়ে যায় সরকারের অর্ধ-কোটি টাকা। অরুয়াইলের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বেশী দখল হয়েছে বাজারের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে। আবু মিয়া, আমির হোসেন ও আবু তালেব সহ অনেকেই নদী দখল করেছেন। এখনোও অব্যাহত আছে দখল। এ ভাবে দখল চলতে থাকলে নদী বন্দর নামটি মাটি চাপা পড়বে। আরেক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম বলেন, এভাবে নদী ও সরকারি জায়গা দখল চলতে থাকলে তিতাস হারিয়ে ফেলবে তার নিজস্ব চিত্র। জনস্বার্থে তৈরী করা ৫৬ লাখ টাকার ঘাটলা নিজেদের স্বার্থে মাটির নীচে ফেলে দিয়েছে এখানকার ভূমিদস্যুরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক লোক জানান, এখানে আ’লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগীতা ছাড়া কেউ নদী বা সরকারি জায়গা দখল করতে পারে না। স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. বোরহানের ভাই রূবেল নদীতে ডগ ইয়ার্ড তৈরী করে নৌকা নির্মাণের কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। উপজেলা ভূমি অফিসের সাবেক কাননগো মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, আমাদের কোন ক্ষমতা নেই কাউকে জায়গা দেওয়ার। অভিযোগ মিথ্যা। তবে সরকারি জায়গা দখল করেছিলেন আ’লীগ নেতা কুতুব উদ্দিন (বর্তমানে প্রয়াত)। ২০১৫ সালে ইউএনও’র নির্দেশে আমি ও সেখানকার তহশিলদার তার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করেছিলাম। আমাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন। আসামী করেছিলেন তৎকালীন ইউএনও মো. এমরান হোসেনকেও। তবে ইউপি আ’লীগের সভাপতি আবু তালেব বলেন, আ’লীগের সহযোগিতার কথাটি সঠিক নয়। দক্ষিণ বাজার মন্নান নামের এক ব্যক্তি মাটি ফেলে দখল করছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে ইউএনওসহ ভূমি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন। জায়গা মাপযোগ করেন। লাল কালির দাগ দেন। এই পর্যন্তই। পরে আর কিছুই হয় না। এই গুলি গত ১০-১৫ বছর ধরে দেখে আসছি। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন নদী দখলের কথা স্বীকার করে ক্ষোভের সাথে বলেন, উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় বিষয় গুলো অনেকবার বলেছি। কোন প্রতিকার পায়নি আদৌ। শুধু নদী কেন এখানকার খাস জায়গা গুলো ভূমি অফিসের যোগসাজশে দেদার চলছে দখল। অরূয়াইলের দক্ষিণ বাজার বর্তমানে নদী খাস জায়গা দখলের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বালু দিয়ে নদীর অংশ ভরাট করা কালে গভীর রাতে আমি একাধিকবার দৌড়ান দিয়েছি। উভয় পাড়ে ৩০-৪০ জন ব্যক্তি নদী দখল করছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সম্প্রতি নদীর বিশাল অংশ দখল করে রাতারাতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। পাকশিমুল অংশে আকবর নামের এক ব্যক্তি ভূমি অফিস সংলগ্ন স্থানে নদী দখল করে গত ৭/৮ বছল ধরে বালুর ব্যবসা করছে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল অরূয়াইলে নদী দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, গত দুই মাস আগে আমি এসিল্যান্ড ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার সহ দিন সেখানে মাপযোগ করেছি। ১৫-১৬ জন দখলদারের তালিকাসহ নদী রক্ষা কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছি। তাদের সিদ্ধান্ত পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করব। ইতিমধ্যে অনেকেই পুরাতন দলিল দেখাচ্ছেন। উনারা নাকি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছ থেকে অনেক আগে এই ক্রয় করেছেন।

মাহবুব খান বাবুল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল

সরাইলে অবাধে চলছে নদী দখল

Update Time : 04:25:45 pm, Sunday, 1 May 2022

সরাইলে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে চলছে নদী দখল। সম্প্রতি ১৫-১৬ জন নদী দখলদারের তালিকা নদী রক্ষা কমিশনে পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অধিকাংশ দখলদার প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের লোক। দখলমুক্তের চেষ্টা করে মামলার আসামী হয়েছেন ইউএনও এসি ল্যান্ড। তাই অনেক সময় নীরব থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিছু জায়গায় চলছে ম্যানেজ বাণিজ্য। দিনদিন ছোট হয়ে আসছে নদী। হারাচ্ছে নাব্যতা। বিলীন হতে চলেছে মাছ ধরার জাল। দূর্লভ হয়ে যাচ্ছে নদীর মাছ। দীর্ঘ ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে সরাইল উপজেলার অরুয়াইলে তিতাস নদীতে চলছে এ দখল তান্ডব। নদী দখলে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশের অভিযোগ করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, অরুয়াইল ও পাকশিমুল গ্রামের সীমানা ঘেষে প্রবাহিত হয়েছে তিতাস নদী। হাজার বছরের ঐতিহ্য বুকে ধারন করে আছে তিতাস। দেশের বিভিন্ন জেলার সাথে নৌ পথে ওই ইউনিয়নের বাসিন্ধাদের অবাধ যাতায়তের মাধ্যম হচ্ছে এ নদী। এ ছাড়া রয়েছে নদীর তরতাজা মাছ। বাদে অরুয়াইল মৌজার সাবেক ৩০৩ ও হালে ১৬৮ নং দাগের ওই নদীটি ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত। সেখানে নদীর দু’পাড়ে অনেক আগেই গড়ে উঠেছে দু’টি বাজার। নদীর পশ্চিম পাড়ে অরুয়াইল। আর পূর্ব পাড়ে পাকশিমুল গ্রাম। উভয় পাড়ে রয়েছে কলেজ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা। তিতাস নদীতে ভাসমান ছোট ডিঙ্গি নৌকাই ছিল দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। তখনও দখলদাররা ছিল সক্রিয়। ২০০৯ সালে নদীর উপর নির্মিত হয়েছে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭মিটার প্রস’ একটি সেঁতু। সেঁতুটি চালু হওয়ার পর আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে সেখানকার ভূমি খেঁকোরা। উভয় পাড়ে সেঁতুর দু’পাশ ঘিরে নদী দখলের প্রতিযোগীতায় নামে দখলদাররা। নদীর পাড় ঘেষা বিএডিসি থেকে শ্বশান ঘাট পর্যন্ত ভিট মালিকরা নিয়মিত দখল করে চলেছেন নদী।

দক্ষিণ বাজার এলাকায় চলছে নদীর জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা। নুরূদ্দিন নামের এক ব্যক্তিই দখল করেছেন কোটি টাকা মূল্যের জায়গা। এভাবে দখল চলছে ধামাউড়া নৌঘাট এলাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া ড্রেজারযুক্ত ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে বালু এনে তারা নদীর পাশে ফেলে। পরে খুঁটি বসিয়ে আস্তে আস্তে মাটি ভরাট করে। প্রথমে টিনের ঘর। কিছুদিন পরই চলে পাকা ইমারত নির্মাণের কাজ। পরে চড়া মূল্যের জামানত ও ভাড়ায় দিয়ে দেয় দোকান। কোটি টাকা বাজেটের নৌকা তৈরী করতে নদী দখল করে চালায় ওয়ার্কসপের (ডগ ইয়ার্ড) কাজ। একটি নৌকা তৈরী করতে সময় লাগে ৩-৪ মাস। নদীর ২০-৩০ জায়গায় চলছে ডগের কাজ। পশ্চিম পাড় অরুয়াইলে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরী করা হয়েছিল একটি পাকা ঘাটলা। যেখানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পণ্যবোঝাই নৌকার মালামাল উঠানামার কথা ছিল। কিন্তু দখলদাররা এত বড় ঘাটলা খালি পড়ে থাকার লোভ সামলাতে পারেনি। তারা কৌশলে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসের সহায়তায় ওই ঘাটলাকে ফেরিফেরি করে বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলে গত ৪-৫ বছর আগে। ওই ঘাটলার পূর্ব পাশে নদীতে আরো মাটি ফেলে দখলে নেয় ভূমি খেঁকুরা। সুবিধা বঞ্চিত হয় নদী তীরবর্তী ব্যবসায়িরা। আর মাটি চাপা পড়ে যায় সরকারের অর্ধ-কোটি টাকা। অরুয়াইলের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বেশী দখল হয়েছে বাজারের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে। আবু মিয়া, আমির হোসেন ও আবু তালেব সহ অনেকেই নদী দখল করেছেন। এখনোও অব্যাহত আছে দখল। এ ভাবে দখল চলতে থাকলে নদী বন্দর নামটি মাটি চাপা পড়বে। আরেক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম বলেন, এভাবে নদী ও সরকারি জায়গা দখল চলতে থাকলে তিতাস হারিয়ে ফেলবে তার নিজস্ব চিত্র। জনস্বার্থে তৈরী করা ৫৬ লাখ টাকার ঘাটলা নিজেদের স্বার্থে মাটির নীচে ফেলে দিয়েছে এখানকার ভূমিদস্যুরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক লোক জানান, এখানে আ’লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগীতা ছাড়া কেউ নদী বা সরকারি জায়গা দখল করতে পারে না। স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. বোরহানের ভাই রূবেল নদীতে ডগ ইয়ার্ড তৈরী করে নৌকা নির্মাণের কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। উপজেলা ভূমি অফিসের সাবেক কাননগো মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, আমাদের কোন ক্ষমতা নেই কাউকে জায়গা দেওয়ার। অভিযোগ মিথ্যা। তবে সরকারি জায়গা দখল করেছিলেন আ’লীগ নেতা কুতুব উদ্দিন (বর্তমানে প্রয়াত)। ২০১৫ সালে ইউএনও’র নির্দেশে আমি ও সেখানকার তহশিলদার তার অবৈধ দখল উচ্ছেদ করেছিলাম। আমাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন। আসামী করেছিলেন তৎকালীন ইউএনও মো. এমরান হোসেনকেও। তবে ইউপি আ’লীগের সভাপতি আবু তালেব বলেন, আ’লীগের সহযোগিতার কথাটি সঠিক নয়। দক্ষিণ বাজার মন্নান নামের এক ব্যক্তি মাটি ফেলে দখল করছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে ইউএনওসহ ভূমি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন। জায়গা মাপযোগ করেন। লাল কালির দাগ দেন। এই পর্যন্তই। পরে আর কিছুই হয় না। এই গুলি গত ১০-১৫ বছর ধরে দেখে আসছি। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ হোসেন নদী দখলের কথা স্বীকার করে ক্ষোভের সাথে বলেন, উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় বিষয় গুলো অনেকবার বলেছি। কোন প্রতিকার পায়নি আদৌ। শুধু নদী কেন এখানকার খাস জায়গা গুলো ভূমি অফিসের যোগসাজশে দেদার চলছে দখল। অরূয়াইলের দক্ষিণ বাজার বর্তমানে নদী খাস জায়গা দখলের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বালু দিয়ে নদীর অংশ ভরাট করা কালে গভীর রাতে আমি একাধিকবার দৌড়ান দিয়েছি। উভয় পাড়ে ৩০-৪০ জন ব্যক্তি নদী দখল করছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সম্প্রতি নদীর বিশাল অংশ দখল করে রাতারাতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। পাকশিমুল অংশে আকবর নামের এক ব্যক্তি ভূমি অফিস সংলগ্ন স্থানে নদী দখল করে গত ৭/৮ বছল ধরে বালুর ব্যবসা করছে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল অরূয়াইলে নদী দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, গত দুই মাস আগে আমি এসিল্যান্ড ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার সহ দিন সেখানে মাপযোগ করেছি। ১৫-১৬ জন দখলদারের তালিকাসহ নদী রক্ষা কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছি। তাদের সিদ্ধান্ত পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করব। ইতিমধ্যে অনেকেই পুরাতন দলিল দেখাচ্ছেন। উনারা নাকি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছ থেকে অনেক আগে এই ক্রয় করেছেন।

মাহবুব খান বাবুল