Dhaka ০৬:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
News Title :
পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩ সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত

আশ্বাসের ২৪ দিন পরও আসেনি পানি সরাইলের ২০ সহস্রাধিক কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৬২ Time View

কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের ২৪ দিন পরও খালে আসেনি সবুজের পানি। খাঁ খাঁ করছে জমি গুলো। জ্বলে ও লালচে হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বীজতলা। সেচের পানির অভাবে সরাইলের ২০ সহস্রাধিক কৃষকের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। বেকার হলেন অর্ধশতাধিক পাম্পের মালিকও। আর বিএডিসি বলছে মহাসড়কের বালু মাটি ও চাতালের ছাঁই-এ এখন পানির বড় বাঁধা। দিনে রাতে কাজ করেও উপায় করতে পারছি না। কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না সওজের। তবে আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সরাইলের জাফর খালে সবুজ প্রকল্পের পানি যেতে পারে। পানির দাবীতে আলোচনা সভার ডাক দিয়েছিলেন স্কীম মালিক ও কৃষকরা। প্রশাসনের বাঁধায় স্থগিত হয়ে যায় সভা।
সরেজমিনে কৃষক ও বিএডিসি’র কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্পের পানি দিয়ে সরাইলের ২০-২২ হাজার কৃষক এ চাষাবাদ করে আসছেন গত ৪২-৪৩ বছর ধরে। সাধারণত মাঘ মাসের শুরূতেই মহাসড়কের পাশের খাল দিয়ে এই পানি সরাইলের জাফর খাল দিয়ে আরো ২-৩ টি ইউনিয়নে প্রবেশ করে থাকে। কৃষকরা স্বাচ্ছন্ধে স্বল্প খরচে বোরো ধান চাষ করে থাকেন। কিন্তু এ বছর ফাল্গুন মাস চলে যাচ্ছে। এখনো পানির দেখা পাচ্ছেন না সরাইলের কৃষকরা। এবার চাষের সময় প্রায় শেষ। নিরাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ধান চাষের স্বপ্নও ভেঙ্গে গেছে তাদের। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের শুরূ থেকেই এখানকার কৃষকরা পানির জন্য ইউএনও জেলা প্রশাসক মহোদয়গণের শরনাপন্ন হয়েছেন। স্বারকলিপি দিয়েছেন। কোন সমাধান হয়নি আদৌ। মূলত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার লক্ষ্যে আশুগঞ্জ থেকে সরাইলের বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া পর্যন্ত মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার জুড়ে চার লেন উন্নয়নের কাজ চলছে। এ কাজের জন্য আশুগঞ্জ থেকে সরাইল পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের পাশের খালটি ভরাট হয়ে গেছে। কাজ শুরূর আগে ৩৫-৪০ ফুট প্রস্থের খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতো। বর্তমানে কিছু জায়গায় ওই খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কষ্টকর। অগণিত জায়গায় প্রবাহের দিক ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্বের তুলনায় কমে গেছে খালের গভীরতা। তাই এখন পর্যন্ত প্রকল্পের পানি ছাড়তে পারছেন না বিএডিসি। গত এক বছরেরও অধিক সময় ধরে চেষ্টা করে আসছে বিএডিসি। সড়কের পাশের চাতালের ছাঁই সহ অন্যান্য আবর্জনায় ভরাট হয়ে আছে খালটি। বিএডিসি ওই খালটির তলদেশ, আশপাশ কেটে পানি আনার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে চলে গেছে ধান চাষের মৌসুম। নষ্ট হয়ে গেছে বীজতলা গুলো। এখন একেবারেই অনিশ্চিত এই অঞ্চলের বোরো চাষ। এ সমস্যার উপর ডিজিটাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডট কমে গত ১লা ফেব্রূয়ারি “সরাইলে ১০ সহস্রাধিক হেক্টর বোরো জমি চাষ অনিশ্চিত” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে পানি দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। এরপর দ্রূত কৃষকদের পানি দেওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাঁপ করেছেন বিএডিসি ও প্রশাসনের লোকজন। জেলা প্রশাসক মহোদয়ও সরজমিনে খালের অবস্থা পরিদর্শন করে গেছেন। চলে গেছে ২০ দিন। এখনো পানি আসেনি খালে। ওদিকে সরাইলের ২০ সহস্রাধিক কৃষক তাদের ধান ফলানোর স্বপ্ন ভঙ্গের শঙ্কায় এখন ভেঙ্গে পড়েছেন। বেড়তলা গ্রামের কৃষক অহিদ মিয়া (৬৫), ইসলামাবাদের আফতাব মিয়া (৫৩), ফরিদ মিয়া (৬২), সরাইল সদরের শফিকুর রহমান(৫১), বিল্লাল মিয়া (৪৬), শাহবাজপুর দীঘিরপাড়ের কৃষক ওমেদ আলী (৬৫) ও ইউনুছ মিয়া (৪২) আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। বীজতলা জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে। এ বছর বোরো চাষের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। বড় উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হলাম। বুক কাঁপছে। আফসোস কৃষকদের উপকারে কেউ এগিয়ে আসল না। মহাসড়ক গিলে খাইল আমাদের খাল। গিলে খাইল রিজিক। স্থানীয় কৃষকদের দূর্ভোগে এগিয়ে এসেছেন ‘বাংলাদেশ কৃষক সমিতি’ সরাইল উপজেলা শাখা। বাংলাদেশ কৃষক সমিতি সরাইল শাখার সভাপতি দেবদাস সিংহ রায় বলেন, আমরা আর প্রশাসনের আশ্বাসের উপর আস্তা রাখতে পারছি না। তাদের একাধিক আশ্বাস আলোর মুখ দেখেনি। চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ২০ সহস্রাধিক কৃষক। এবার বোরো চাষের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। সরাইল উপজেলা বিএডিসি’র উপসহকারি প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম কৃষকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কের কাজের বালু ও পাশের চাতালের ছাঁই ময়লায় সরূ খালটিও ভরাট হয়ে গেছে। ২টি বেকু দৈনিক ১৬ ঘন্টা মাটি কাটছে। সওজ কোন সহযোগিতা করছেন না। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, এখনো কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। ৩-৪ দিনের মধ্যে পানি আসতে পারে।

মাহবুব খান বাবুল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন

Ev depolama Ucuz nakliyat teensexonline.com

আশ্বাসের ২৪ দিন পরও আসেনি পানি সরাইলের ২০ সহস্রাধিক কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

Update Time : ১২:৫২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের ২৪ দিন পরও খালে আসেনি সবুজের পানি। খাঁ খাঁ করছে জমি গুলো। জ্বলে ও লালচে হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বীজতলা। সেচের পানির অভাবে সরাইলের ২০ সহস্রাধিক কৃষকের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। বেকার হলেন অর্ধশতাধিক পাম্পের মালিকও। আর বিএডিসি বলছে মহাসড়কের বালু মাটি ও চাতালের ছাঁই-এ এখন পানির বড় বাঁধা। দিনে রাতে কাজ করেও উপায় করতে পারছি না। কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না সওজের। তবে আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সরাইলের জাফর খালে সবুজ প্রকল্পের পানি যেতে পারে। পানির দাবীতে আলোচনা সভার ডাক দিয়েছিলেন স্কীম মালিক ও কৃষকরা। প্রশাসনের বাঁধায় স্থগিত হয়ে যায় সভা।
সরেজমিনে কৃষক ও বিএডিসি’র কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্পের পানি দিয়ে সরাইলের ২০-২২ হাজার কৃষক এ চাষাবাদ করে আসছেন গত ৪২-৪৩ বছর ধরে। সাধারণত মাঘ মাসের শুরূতেই মহাসড়কের পাশের খাল দিয়ে এই পানি সরাইলের জাফর খাল দিয়ে আরো ২-৩ টি ইউনিয়নে প্রবেশ করে থাকে। কৃষকরা স্বাচ্ছন্ধে স্বল্প খরচে বোরো ধান চাষ করে থাকেন। কিন্তু এ বছর ফাল্গুন মাস চলে যাচ্ছে। এখনো পানির দেখা পাচ্ছেন না সরাইলের কৃষকরা। এবার চাষের সময় প্রায় শেষ। নিরাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ধান চাষের স্বপ্নও ভেঙ্গে গেছে তাদের। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের শুরূ থেকেই এখানকার কৃষকরা পানির জন্য ইউএনও জেলা প্রশাসক মহোদয়গণের শরনাপন্ন হয়েছেন। স্বারকলিপি দিয়েছেন। কোন সমাধান হয়নি আদৌ। মূলত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার লক্ষ্যে আশুগঞ্জ থেকে সরাইলের বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া পর্যন্ত মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার জুড়ে চার লেন উন্নয়নের কাজ চলছে। এ কাজের জন্য আশুগঞ্জ থেকে সরাইল পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের পাশের খালটি ভরাট হয়ে গেছে। কাজ শুরূর আগে ৩৫-৪০ ফুট প্রস্থের খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতো। বর্তমানে কিছু জায়গায় ওই খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই কষ্টকর। অগণিত জায়গায় প্রবাহের দিক ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্বের তুলনায় কমে গেছে খালের গভীরতা। তাই এখন পর্যন্ত প্রকল্পের পানি ছাড়তে পারছেন না বিএডিসি। গত এক বছরেরও অধিক সময় ধরে চেষ্টা করে আসছে বিএডিসি। সড়কের পাশের চাতালের ছাঁই সহ অন্যান্য আবর্জনায় ভরাট হয়ে আছে খালটি। বিএডিসি ওই খালটির তলদেশ, আশপাশ কেটে পানি আনার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে চলে গেছে ধান চাষের মৌসুম। নষ্ট হয়ে গেছে বীজতলা গুলো। এখন একেবারেই অনিশ্চিত এই অঞ্চলের বোরো চাষ। এ সমস্যার উপর ডিজিটাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডট কমে গত ১লা ফেব্রূয়ারি “সরাইলে ১০ সহস্রাধিক হেক্টর বোরো জমি চাষ অনিশ্চিত” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে পানি দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। এরপর দ্রূত কৃষকদের পানি দেওয়ার জন্য দৌঁড়ঝাঁপ করেছেন বিএডিসি ও প্রশাসনের লোকজন। জেলা প্রশাসক মহোদয়ও সরজমিনে খালের অবস্থা পরিদর্শন করে গেছেন। চলে গেছে ২০ দিন। এখনো পানি আসেনি খালে। ওদিকে সরাইলের ২০ সহস্রাধিক কৃষক তাদের ধান ফলানোর স্বপ্ন ভঙ্গের শঙ্কায় এখন ভেঙ্গে পড়েছেন। বেড়তলা গ্রামের কৃষক অহিদ মিয়া (৬৫), ইসলামাবাদের আফতাব মিয়া (৫৩), ফরিদ মিয়া (৬২), সরাইল সদরের শফিকুর রহমান(৫১), বিল্লাল মিয়া (৪৬), শাহবাজপুর দীঘিরপাড়ের কৃষক ওমেদ আলী (৬৫) ও ইউনুছ মিয়া (৪২) আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। বীজতলা জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে। এ বছর বোরো চাষের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল। বড় উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হলাম। বুক কাঁপছে। আফসোস কৃষকদের উপকারে কেউ এগিয়ে আসল না। মহাসড়ক গিলে খাইল আমাদের খাল। গিলে খাইল রিজিক। স্থানীয় কৃষকদের দূর্ভোগে এগিয়ে এসেছেন ‘বাংলাদেশ কৃষক সমিতি’ সরাইল উপজেলা শাখা। বাংলাদেশ কৃষক সমিতি সরাইল শাখার সভাপতি দেবদাস সিংহ রায় বলেন, আমরা আর প্রশাসনের আশ্বাসের উপর আস্তা রাখতে পারছি না। তাদের একাধিক আশ্বাস আলোর মুখ দেখেনি। চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে ২০ সহস্রাধিক কৃষক। এবার বোরো চাষের স্বপ্ন ভেঙ্গে গেছে। সরাইল উপজেলা বিএডিসি’র উপসহকারি প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম কৃষকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কের কাজের বালু ও পাশের চাতালের ছাঁই ময়লায় সরূ খালটিও ভরাট হয়ে গেছে। ২টি বেকু দৈনিক ১৬ ঘন্টা মাটি কাটছে। সওজ কোন সহযোগিতা করছেন না। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, এখনো কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। ৩-৪ দিনের মধ্যে পানি আসতে পারে।

মাহবুব খান বাবুল