Dhaka 6:32 am, Wednesday, 8 May 2024
News Title :
সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল মা-বাবার নিয়মিত ঝগড়া বিরক্ত হয়ে থানায় শিশু সন্তান সিয়াম পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩

সেবা চাইতে গিয়ে কর্মকর্তার হাতে লাঞ্ছিত হলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন

  • Reporter Name
  • Update Time : 02:19:37 pm, Monday, 7 February 2022
  • 238 Time View

কৃষি কাজের সেচ পাম্পের সংযোগ চাইতে গিয়ে সরাইল পিডিবি’র সহকারী প্রকৌশলী মো. তারেকুর রহমানের হাতে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হলেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন। মুক্তিযোদ্ধাকে কক্ষে আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে মারধরের হুমকি। গতকাল রোববার নিজ দপ্তরে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে নির্বাহী প্রকৌশলীর আচরণকেও হতাশাজনক বলেছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। গতকাল রোববার দুপুরে সরাইল প্রেসক্লাবের উপস্থিত হয়ে এমনসব অভিযোগ করেছেন আনোয়ার হোসেন। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে কটাক্ষ, অশালীন উক্তি ও হুমকি দেওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে। জাতীর সূর্য সন্তানের সাথে একজন সরকারী কর্মকর্তার এহেন উদ্বত্যপূর্ণ আচরণের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছেন আনোয়ার। তবে নিজেদেরকে নির্দোষ দাবী করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেনের এক স্বজন বোরো স্কীম পরিচালনা করেন। অন্যান্য বারের মত এবারও গত ৪-৫ দিন আগে লাইন চার্জ ও বিল পরিশোধ করে কাগজপত্র পিডিবি অফিসে দিয়েছেন। তিনি অফিসে ঘুরছেন কিন’ সংযোগ পাচ্ছেন না। ওদিকে বোরা চাষীরা পানি না পাওয়ায় ক্রমেই ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন। বিষয়টি জেনে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরাইল পিডিবি অফিসে আসেন মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার। দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী তারিকুর রহমান অফিসে আসেন ১১টায়। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে সংযোগের বিষয়টি বললে ওই কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ চান। সময় ক্ষেপন না করে কৃষক বাঁচাতে দ্রূত সংযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন মুক্তিযোদ্ধা। ক্ষেপে যান সহকারী প্রকৌশলী। দুজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে তারেকুর রহমান মুক্তিযোদ্ধাকে বলেন, ‘কত মুক্তিযোদ্ধা আসছে আর যাচ্ছে । এসবের সময় নেই এখন। স্যার না বলায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে অফিসের তাঁর সহকারীদেরকে মুক্তিযোদ্ধাকে আটকানোর নির্দেশ দেন। বেঁধে রাখতেও বলেন। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাকে মারমুখি ভাব। কয়েকজন লোকে আনোয়ার হোসেনকে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে নিয়ে যান। নির্বাহী প্রকৌশলী অভিযুক্ত তারেককে না ডেকে শুধু মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলেন। তিনি নিজেদের নির্দোষ দাবী করে মুক্তিযোদ্ধাকে ঠান্ডা হওয়ার পরামর্শ দেন। দফতর প্রধানের কথা ও আচরণে সন্তোষ্ট না হয়ে দ্রূত বেরিয়ে আসেন আনোয়ার হোসেন। মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিচয় দেওয়ার পরও প্রথম থেকেই ওই কর্মকর্তা আমার উপর ক্ষুদ্ধ। যা মন চাই তাই বলছে। এক সময় মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। অশ্লীল কথা বলেছেন। সহকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে আটক করে বেঁধে রাখতে। মারধর করার হুমকিও দিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা আমাকে যে অপমান ও লাঞ্ছিত করেছে ভাষায় কাউকে বুঝাতে পারব না। দফতর প্রধান বিচার না করে উল্টো আমার উপর দোষ চাপানোর নাটক করেছেন। আশ্চর্য হলাম। জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানের সাথে প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারীর এমন ব্যবহার ও শক্তি প্রদর্শনের ক্ষমতা সে পেল কোথায়? আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজাকার ও জামাতের প্রেতাত্বা ওই দায়িত্ব জ্ঞানহীন কর্মকর্তাদের বিচার দাবী করছি। সহকারী প্রকৌশলী মো. তারিকুর রহমান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এখানে নতুন। উনাকে (মুক্তিযোদ্ধাকে) চিনি না। জানিও না। ওই স্কীমের বিল পরিশোধ আছে কিনা আদৌ এখনো জানি না। লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। একটু সময় চেয়েছি। তিনি আমার উপর খুবই ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। মারমূখী ভাব। তাই আমিও রাগান্বিত হয়ে কিছু বলেছি। একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার সাথে এমন আচরণ করতে পারেন না। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) নওয়াজ আহমেদ খান মুক্তিযোদ্ধার সাথে ওই কর্মকর্তা তারিকের বাক-বিতন্ডা ও চেচামেচির কথা স্বীকার করে বলেন, সেচ লাইনের বিল পরিশোধের কাগজ কোন প্রকৌশলী পাননি। আমিও বিষয়টি জানি না। তাই সংযোগ দেয়া হয়নি। গতকাল জেনেছি কোন কর্মচারীর কাছে দিয়ে গেছেন। মুক্তিযোদ্ধাকে গালমন্দ আটক ও হুমকি দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। আমি উনার কাছ থেকে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম। তিনি রাগ করে চলে গেছেন। প্রসঙ্গত: এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্তও ওই সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগটি দেয়া হয়নি।

মাহবুব খান বাবুল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল

সেবা চাইতে গিয়ে কর্মকর্তার হাতে লাঞ্ছিত হলেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন

Update Time : 02:19:37 pm, Monday, 7 February 2022

কৃষি কাজের সেচ পাম্পের সংযোগ চাইতে গিয়ে সরাইল পিডিবি’র সহকারী প্রকৌশলী মো. তারেকুর রহমানের হাতে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হলেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন। মুক্তিযোদ্ধাকে কক্ষে আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে মারধরের হুমকি। গতকাল রোববার নিজ দপ্তরে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে নির্বাহী প্রকৌশলীর আচরণকেও হতাশাজনক বলেছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। গতকাল রোববার দুপুরে সরাইল প্রেসক্লাবের উপস্থিত হয়ে এমনসব অভিযোগ করেছেন আনোয়ার হোসেন। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে কটাক্ষ, অশালীন উক্তি ও হুমকি দেওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে। জাতীর সূর্য সন্তানের সাথে একজন সরকারী কর্মকর্তার এহেন উদ্বত্যপূর্ণ আচরণের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছেন আনোয়ার। তবে নিজেদেরকে নির্দোষ দাবী করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেনের এক স্বজন বোরো স্কীম পরিচালনা করেন। অন্যান্য বারের মত এবারও গত ৪-৫ দিন আগে লাইন চার্জ ও বিল পরিশোধ করে কাগজপত্র পিডিবি অফিসে দিয়েছেন। তিনি অফিসে ঘুরছেন কিন’ সংযোগ পাচ্ছেন না। ওদিকে বোরা চাষীরা পানি না পাওয়ায় ক্রমেই ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন। বিষয়টি জেনে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরাইল পিডিবি অফিসে আসেন মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার। দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী তারিকুর রহমান অফিসে আসেন ১১টায়। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে সংযোগের বিষয়টি বললে ওই কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ চান। সময় ক্ষেপন না করে কৃষক বাঁচাতে দ্রূত সংযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন মুক্তিযোদ্ধা। ক্ষেপে যান সহকারী প্রকৌশলী। দুজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে তারেকুর রহমান মুক্তিযোদ্ধাকে বলেন, ‘কত মুক্তিযোদ্ধা আসছে আর যাচ্ছে । এসবের সময় নেই এখন। স্যার না বলায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে অফিসের তাঁর সহকারীদেরকে মুক্তিযোদ্ধাকে আটকানোর নির্দেশ দেন। বেঁধে রাখতেও বলেন। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাকে মারমুখি ভাব। কয়েকজন লোকে আনোয়ার হোসেনকে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে নিয়ে যান। নির্বাহী প্রকৌশলী অভিযুক্ত তারেককে না ডেকে শুধু মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলেন। তিনি নিজেদের নির্দোষ দাবী করে মুক্তিযোদ্ধাকে ঠান্ডা হওয়ার পরামর্শ দেন। দফতর প্রধানের কথা ও আচরণে সন্তোষ্ট না হয়ে দ্রূত বেরিয়ে আসেন আনোয়ার হোসেন। মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিচয় দেওয়ার পরও প্রথম থেকেই ওই কর্মকর্তা আমার উপর ক্ষুদ্ধ। যা মন চাই তাই বলছে। এক সময় মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। অশ্লীল কথা বলেছেন। সহকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আমাকে আটক করে বেঁধে রাখতে। মারধর করার হুমকিও দিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা আমাকে যে অপমান ও লাঞ্ছিত করেছে ভাষায় কাউকে বুঝাতে পারব না। দফতর প্রধান বিচার না করে উল্টো আমার উপর দোষ চাপানোর নাটক করেছেন। আশ্চর্য হলাম। জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানের সাথে প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারীর এমন ব্যবহার ও শক্তি প্রদর্শনের ক্ষমতা সে পেল কোথায়? আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজাকার ও জামাতের প্রেতাত্বা ওই দায়িত্ব জ্ঞানহীন কর্মকর্তাদের বিচার দাবী করছি। সহকারী প্রকৌশলী মো. তারিকুর রহমান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এখানে নতুন। উনাকে (মুক্তিযোদ্ধাকে) চিনি না। জানিও না। ওই স্কীমের বিল পরিশোধ আছে কিনা আদৌ এখনো জানি না। লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। একটু সময় চেয়েছি। তিনি আমার উপর খুবই ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। মারমূখী ভাব। তাই আমিও রাগান্বিত হয়ে কিছু বলেছি। একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার সাথে এমন আচরণ করতে পারেন না। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) নওয়াজ আহমেদ খান মুক্তিযোদ্ধার সাথে ওই কর্মকর্তা তারিকের বাক-বিতন্ডা ও চেচামেচির কথা স্বীকার করে বলেন, সেচ লাইনের বিল পরিশোধের কাগজ কোন প্রকৌশলী পাননি। আমিও বিষয়টি জানি না। তাই সংযোগ দেয়া হয়নি। গতকাল জেনেছি কোন কর্মচারীর কাছে দিয়ে গেছেন। মুক্তিযোদ্ধাকে গালমন্দ আটক ও হুমকি দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। আমি উনার কাছ থেকে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম। তিনি রাগ করে চলে গেছেন। প্রসঙ্গত: এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্তও ওই সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগটি দেয়া হয়নি।

মাহবুব খান বাবুল