Dhaka 4:13 am, Thursday, 2 May 2024
News Title :
মা-বাবার নিয়মিত ঝগড়া বিরক্ত হয়ে থানায় শিশু সন্তান সিয়াম পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩ সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন

চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে দূর্নীতির ১২ অভিযোগ পুলিশ প্রহরায় তদন্ত, স্বাক্ষী শতাধিক

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:29:23 pm, Tuesday, 11 October 2022
  • 73 Time View

চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে দূর্নীতি

সরাইলের পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউছার হোসেনের বিরূদ্ধে দায়ের করা ১২ দূর্নীতির তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ইউনিয়ন পরিষদে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ প্রহরায় চলে এই তদন্ত। ইউপি সদস্যসহ শতাধিক লোক স্বাক্ষী দিলেও পরিষদের বাহিরে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের সহস্রাধিক লোক অবস্থান করছিল। কিছু লোক পক্ষে কথা বললেও চেয়ারম্যানের কর্মকান্ডে অধিকাংশ লোকজনই ক্ষোভে ফেঁটে যাচ্ছেন। তবে চেয়ারম্যান বলছেন অনিয়ম দূর্নীতি ও লুটপাটের সুযোগ না দেওয়ায় আমার বিরূদ্ধে এটা গভীর ষড়যন্ত্রের বহি:প্রকাশ। সরজমিনে তদন্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তদন্তের দিন ক্ষণটি আগেই জানা ছিল ওই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। তাই আজ সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামের নারী পুরূষরা জড়ো হতে থাকে পরিষদে ও আশপাশে। এক সময় হাজারো মানুষের ভীড় জমে। তদন্ত কর্মকর্তা সরাইল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া যথা সময়ে তদন্ত কাজ শুরূ করেন। ইউনিয়ন পরিষদের ৩ জন মহিলাসহ মোট ১২ জন সদস্যেরই স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পরে তাদের সাথে আসা ভুক্তভোগিদের স্বাক্ষীও গ্রহন করেন। চেয়ারম্যানের নানা কর্মকান্ডে স্বাক্ষী দিতে আসা লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছিল। উল্লেখযোগ্য অভিযোগ ছিল জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেডলাইসেন্স, মৃত্যুর সনদ প্রদানে ও সরকারি নলকূপ বসানোর কাজে ইচ্ছেমত অতিরিক্ত টাকা আদায়। পরিষদের সদস্য ও সুবিধাভোগিদের সাথে খারাপ আচরণ ও কোন বিষয়ে পাত্তা না দেয়া। ভূয়া প্রকল্প বা একই প্রকল্প একাধিকবার দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা। স্বাক্ষী দিতে আসা ভূঁইশ্বর গ্রামের রাশিদ মিয়া (৪৮) বলেন, উদ্যোক্তা মিঠু চেয়ারম্যানের স্বজন। ৩টি জন্মনিবন্ধনের জন্য আমার কাছ থেকে ২৪০০ টাকা নিয়েছে। একই গ্রামের রেজিয়া (৭৫) বলেন, নাতির জন্মনিবন্ধনের জন্য আমাকে ১৪০০ টাকা গুণতে হয়েছে। পরমানন্দপুর গ্রামের হাফেজ সাঈদ (২৭) বলেন, একটি নাগরিকত্বের সনদের জন্য চেয়েছেন ৫০০ টাকা। নেয়নি। পাকশিমুল গ্রামের মতিউর রহমান (৬৫) বলেন, ১টি ওয়ারিশ নামা নিতে চেয়ারম্যানের হাতে আমাকে নগদ ২৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। কথা বললেই কাজ না হওয়ার হুমকি। কালিশিমুল গ্রামের শাহ পরাণ (৪০) জানান, দুই মাস আগে ১টি ট্রেডলাইসেন্সের জন্য এসেছিলাম। ২৬০০ টাকা চেয়েছেন। তাই এখনো নেইনি। ইউপি সদস্য মলাই মিয়া বলেন, শুধু অনিয়ম আর দূর্নীতি করে টাকা কামাই করছেন। সাধারণ জনগণকে পরিষদে আসতে নিষেধ করেন। আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। সবকিছু থেকে দ্বিগুণ তিনগুণ টাকা আদায় করছেন। মানুষকে হয়রানি করছেন। এভাবে একটি পরিষদ চলতে পারে না। জুনাঈদ মিয়া (২৭) বলেন, ইউপি সচিব মিঠুকে ভিন্ন নামে একাধিক কমিটির সদস্য করছেন। সম্পাদক করেছেন ওই ব্যক্তি জানেনই না। এভাবে ভূয়া কমিটি দিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করে কোন কাজ না করেই আত্মসাৎ করছেন চেয়ারম্যান। আমরা উনার অপসারণ চাই। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ সকল অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। আমি চোখে না দেখে জন্মনিবন্ধনসহ কোন সনদ দেয় না। কারণ জালজালিয়াতি হলে পরে দায়িত্ব নিবে কে? তারা শুরূ থেকেই লুটপাটের চেষ্টা করছেন। আমি সেই সুযোগ দিচ্ছি না। কারণ আমি ইউনিয়নবাসীর কাছে স্বচ্ছ কাজ ও সেবা দেয়ার অঙ্গিকার করে এসেছি। আর এ জন্যই আমার বিরূদ্ধে কঠিন এই ষড়যন্ত্র। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া বলেন, সকল অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগির সাথে কথা বলেছি। তাদের বক্তব্য নোট করেছি। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে প্রমাণ চেয়েছি। এই অভিযোগের উপর স্বচ্ছ সুন্দর একটি প্রতিবেদন ইউএনও মহোদয়কে দেয়ার চেষ্টা করব। প্রসঙ্গত: গত ১২ সেপ্টেম্বর সোমবার পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন নির্বাচিত ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে ১২টি অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

মা-বাবার নিয়মিত ঝগড়া বিরক্ত হয়ে থানায় শিশু সন্তান সিয়াম

চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে দূর্নীতির ১২ অভিযোগ পুলিশ প্রহরায় তদন্ত, স্বাক্ষী শতাধিক

Update Time : 08:29:23 pm, Tuesday, 11 October 2022

সরাইলের পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউছার হোসেনের বিরূদ্ধে দায়ের করা ১২ দূর্নীতির তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ইউনিয়ন পরিষদে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ প্রহরায় চলে এই তদন্ত। ইউপি সদস্যসহ শতাধিক লোক স্বাক্ষী দিলেও পরিষদের বাহিরে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের সহস্রাধিক লোক অবস্থান করছিল। কিছু লোক পক্ষে কথা বললেও চেয়ারম্যানের কর্মকান্ডে অধিকাংশ লোকজনই ক্ষোভে ফেঁটে যাচ্ছেন। তবে চেয়ারম্যান বলছেন অনিয়ম দূর্নীতি ও লুটপাটের সুযোগ না দেওয়ায় আমার বিরূদ্ধে এটা গভীর ষড়যন্ত্রের বহি:প্রকাশ। সরজমিনে তদন্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তদন্তের দিন ক্ষণটি আগেই জানা ছিল ওই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। তাই আজ সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামের নারী পুরূষরা জড়ো হতে থাকে পরিষদে ও আশপাশে। এক সময় হাজারো মানুষের ভীড় জমে। তদন্ত কর্মকর্তা সরাইল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া যথা সময়ে তদন্ত কাজ শুরূ করেন। ইউনিয়ন পরিষদের ৩ জন মহিলাসহ মোট ১২ জন সদস্যেরই স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পরে তাদের সাথে আসা ভুক্তভোগিদের স্বাক্ষীও গ্রহন করেন। চেয়ারম্যানের নানা কর্মকান্ডে স্বাক্ষী দিতে আসা লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছিল। উল্লেখযোগ্য অভিযোগ ছিল জন্মনিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, ট্রেডলাইসেন্স, মৃত্যুর সনদ প্রদানে ও সরকারি নলকূপ বসানোর কাজে ইচ্ছেমত অতিরিক্ত টাকা আদায়। পরিষদের সদস্য ও সুবিধাভোগিদের সাথে খারাপ আচরণ ও কোন বিষয়ে পাত্তা না দেয়া। ভূয়া প্রকল্প বা একই প্রকল্প একাধিকবার দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা। স্বাক্ষী দিতে আসা ভূঁইশ্বর গ্রামের রাশিদ মিয়া (৪৮) বলেন, উদ্যোক্তা মিঠু চেয়ারম্যানের স্বজন। ৩টি জন্মনিবন্ধনের জন্য আমার কাছ থেকে ২৪০০ টাকা নিয়েছে। একই গ্রামের রেজিয়া (৭৫) বলেন, নাতির জন্মনিবন্ধনের জন্য আমাকে ১৪০০ টাকা গুণতে হয়েছে। পরমানন্দপুর গ্রামের হাফেজ সাঈদ (২৭) বলেন, একটি নাগরিকত্বের সনদের জন্য চেয়েছেন ৫০০ টাকা। নেয়নি। পাকশিমুল গ্রামের মতিউর রহমান (৬৫) বলেন, ১টি ওয়ারিশ নামা নিতে চেয়ারম্যানের হাতে আমাকে নগদ ২৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। কথা বললেই কাজ না হওয়ার হুমকি। কালিশিমুল গ্রামের শাহ পরাণ (৪০) জানান, দুই মাস আগে ১টি ট্রেডলাইসেন্সের জন্য এসেছিলাম। ২৬০০ টাকা চেয়েছেন। তাই এখনো নেইনি। ইউপি সদস্য মলাই মিয়া বলেন, শুধু অনিয়ম আর দূর্নীতি করে টাকা কামাই করছেন। সাধারণ জনগণকে পরিষদে আসতে নিষেধ করেন। আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। সবকিছু থেকে দ্বিগুণ তিনগুণ টাকা আদায় করছেন। মানুষকে হয়রানি করছেন। এভাবে একটি পরিষদ চলতে পারে না। জুনাঈদ মিয়া (২৭) বলেন, ইউপি সচিব মিঠুকে ভিন্ন নামে একাধিক কমিটির সদস্য করছেন। সম্পাদক করেছেন ওই ব্যক্তি জানেনই না। এভাবে ভূয়া কমিটি দিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করে কোন কাজ না করেই আত্মসাৎ করছেন চেয়ারম্যান। আমরা উনার অপসারণ চাই। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ সকল অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা। আমি চোখে না দেখে জন্মনিবন্ধনসহ কোন সনদ দেয় না। কারণ জালজালিয়াতি হলে পরে দায়িত্ব নিবে কে? তারা শুরূ থেকেই লুটপাটের চেষ্টা করছেন। আমি সেই সুযোগ দিচ্ছি না। কারণ আমি ইউনিয়নবাসীর কাছে স্বচ্ছ কাজ ও সেবা দেয়ার অঙ্গিকার করে এসেছি। আর এ জন্যই আমার বিরূদ্ধে কঠিন এই ষড়যন্ত্র। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া বলেন, সকল অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগির সাথে কথা বলেছি। তাদের বক্তব্য নোট করেছি। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে প্রমাণ চেয়েছি। এই অভিযোগের উপর স্বচ্ছ সুন্দর একটি প্রতিবেদন ইউএনও মহোদয়কে দেয়ার চেষ্টা করব। প্রসঙ্গত: গত ১২ সেপ্টেম্বর সোমবার পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন নির্বাচিত ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে ১২টি অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।