মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:
সরাইল থেকে খেলার ডাক দিয়েছেন বিএনপি দলীয় সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য ও দলটির সহ আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার রূমিন ফারহানা। তিনি বলেছেন, খেলতে চান। আসুন খেলি। ২০১৪ সালে খেলেছিলেন ফাঁকা মাঠে। এবার তো ফাঁকা মাঠ পাবেন না। মনে রাখবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া এই দেশে আর কোন নির্বাচন হবে না। হতে দেওয়া হবে না। আর ভোট চুরির নির্বাচন জনগণ মেনে নিবে না। মিথ্যা মামলা জেল জুলুম নির্যাতন অনেক করেছেন। আর না। মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এখন প্রতিরোধের পালা। আমরা আর মৃত্যুর ভয় করি না। বুকের রক্ত দিয়ে হলেও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। বিরামহীন লোডশেডিং জ্বালানি তেলসহ নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ সোমবার বিকেলে সরাইল উপজেলা বিএনপি’র উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোল্লেখিত কথা গুলো বলেছেন রূমিন ফারহানা এমপি। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরূজ্জামান লস্কর তপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শেখ মো. শামীম, তরূন দে, জেলা বিএনপি নেতা আক্তার হোসেন, কৃষক দল নেতা আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ, উপজেলা বিএনপি নেতা দুলাল মাহমুদ আলী, যুবদল নেতা নুর আলম, আবু সুফিয়ান, মেহেদী হাসান পলাশ প্রমূখ। ব্যানারে প্রধান অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার নাম থাকলেও তিনি আসেননি। ব্যারিষ্টার রূমিন ফারহানা বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের প্রায়ই বলছেন। খেলা হবে খেলা। কি খেলা খেলবেন? খেলা তো অনেক খেলেছেন। এখন আমরাও খেলার জন্য প্রস্তুত। রাতের অন্ধকারে ব্যালট বাক্স ভরে খেলেছেন। আপনারা তো খেলেন পুলিশ দিয়ে। সরাইল আমাকে আসতে দিবে না ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। এই খেলায় দেখলাম তারা কেউই মাঠে নেই। এই মঞ্চে যারা আছেন তাদের কার বিরূদ্ধে মামলা নেই? সবার বিরূদ্ধে মামলা আছে। অযথা সকলেই কারাবরণ করেছেন। আমাদেরকে দমাইতে পারছেন? পারেন নাই। আর পারবেনও না। আজও বিভিন্ন সড়কে পুলিশ বসিয়ে নেতা কর্মীদের আসতে দেননি। তারপরও যারা এসেছে তারা জিয়াউর রহমানের হার না মানা সৈনিক। মনে রাখবেন একটা ধানের শীষ থেকে ১০০টি ধানের শীষ জন্ম নেয়। হাসুলি মোরগ দেখেছেন? যতক্ষন জান আছে ততক্ষণ লড়াই করে। হার মানে না। জিয়ার সৈনিকরাও হার মানবে না। সরাইলের মাটি অত্যন্ত উর্বর। এই উর্বর মাটিতে ৭৩ সালের নির্বাচনে আমার পিতা অলি আহাদ এখান থেকে গাভী মার্কা প্রতীকে নির্বাচন করেছিল। বিপুল ভোটে পাস করেছিলেন। কিন্তু পরের দিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বিজয়ী ঘোষণা দিলেন তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে। তখন থেকেই শুরূ হয়েছে ভোট চুরি। এখনো আপনারা ভোট চুরি করছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মানেই বাংলাদেশ। তারেক রহমান মানেই বাংলাদেশ। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এই দেশের মাটিতে আর কোন নির্বাচন হতে দেব না। বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে অবাধ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে জাতীয় নির্বাচন। ভোট চুরির মেশিন ইভিএম মানি না। সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ করে তারা ৮০ টি আসনের জন্য ইভিএম মেশিন ক্রয় করেছেন। আরো ৭০টি আসনের জন্য ইভিএম মেশিন ক্রয় করবে। তিনি বলেন, আরেকটা নির্বাচন সামনে। এই নির্বাচনে কি তাদেরকে চুরি করে জিততে দিবেন ? কোন অপরাধ ছাড়া মামলার আসামী হয়। গুম হয়। খুন হয়। সব হারিয়েছি। আমাদের হারাবার আর কিছু বাকী নেই। দেওয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। তাই সর্ব শক্তি নিয়ে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। লুটপাট করেছে পদ্মা সেতু নির্মাণে। মেঘা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার লুট করছে। ১০টি প্রকল্পের একটিও সঠিক সময়ে শেষ করতে পারেনি। ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর কথা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু বিদ্যুৎ খাত থেকেই এই সরকার চুরি করেছে ৯০ হাজার কোটি টাকা। বেহেস্তে আছেন তারা। জনগণ আছেন দোজখে। জ্বালানি তেল ভোজ্য তেল কোনটির দাম বাড়েনি? বাঁচতে হলে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে হবে। টেনে খিচড়ে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। সকলে মিলে বিভেদ ভুলে আরেকটা মুক্তিযুদ্ধে সকলে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এই যুদ্ধটা হবে বেগম জিয়া, তারেক রহমান সহ দেশের সকল মানুষকে এই সরকারের কবল থেকে মুক্তি দিতে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। প্রসঙ্গত: সরাইল উপজেলা বিএনপি’র কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ঘোষিত জায়গায় কর্মসূচি দিয়েছিল ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। তাই বিএনপি তাদের কর্মসূচি সরাইল সদর থেকে একটু উত্তর দিকে হেলিপ্যাড মাঠে সরিয়ে নেন। আজ সকাল থেকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছিলেন পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন। দুপুরের পর থেকেই সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান করছিলেন পুলিশ।