Dhaka 5:34 am, Tuesday, 7 May 2024
News Title :
সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল মা-বাবার নিয়মিত ঝগড়া বিরক্ত হয়ে থানায় শিশু সন্তান সিয়াম পাক্ষিক মত ও পথ এর সম্পাদক হওয়ায় প্রফেসর ফাহিমা খাতুন কে অভিনন্দন নবীনগরে সওজের জায়গায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ দোকান: চলছে কোটি টাকার দখল বাণিজ্য। ফেইক আইডি’র মাধ্যমে প্রার্থীর বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র শঙ্কায় থানায় অভিযোগ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন সরাইল বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পশ্চিম পাইকপাড়ায় ইমারত আইন অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ সরা্‌ইলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান, সাংবাদিকে আসামী করে মামলা সারাদেশে হিট এলার্ট; চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৩

গায়েবি বিলে দিশেহারা কৃষক আবদুল্লাহ নিস্পত্তির ফি দাবী দেড় লাখ টাকা!

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:03:42 pm, Thursday, 25 August 2022
  • 101 Time View

মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:

আকস্মিক গায়েবি বিলে দিশেহারা সরাইল পিডিবি’র একজন নিয়মিত গ্রাহক কৃষক মো. আবদুল্লাহ খাদেম (৫৩)। বিকল ঘোষণা দিয়ে গত ১৩ ফেব্রূয়ারি পিডিবি নিয়ে গেছেন ডিজিটাল মিটারটি। অফিসের রাজন জানিয়েছেন কোন বকেয়া নেই। নতুন মিটারের জন্য ৪ হাজার টাকা নিয়েছেন মাসুদ। কিছু দিন পর নতুন ডিজিটাল মিটার লাগিয়েছেন। চার মাস পর হঠাৎ সুর পাল্টে গেছে পিডিবি’র লোকদের। ভাঙ্গা ও বিকল মিটারে আবদুল্লাহর বকেয়া ১০ হাজার ইউনিট। সমাধান চাইলে প্রকৌশলী সুমন সরদারসহ ২০ জনকে দাওয়াত খাওয়ানোর প্রস্তাব। দাওয়াতও খাওয়ালেন। নৌকা ভাড়া দিয়েছেন ৩ হাজার টাকা। এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি। এখন বিষয়টি নিস্পত্তির ফি দাবী করা হচ্ছে দেড় লাখ টাকা। মুঠোফোনে আবদুল্লাহকে সুমন সরদারসহ পিডিবি অফিসের আরো ৩-৪ জন নিয়মিত চাপ দিচ্ছেন। সাড়া নেই তার। অবশেষে আবদুল্লাহকে ঘায়েল করতে গত জুলাই মাসে ধরিয়ে দিয়েছেন ২ হাজার ইউনিটের ২১ হাজার ৫৭২ টাকার একটি বিল। বর্তমান রিডিং দেখানো হয়েছে ৪৮৭০ ইউনিট। আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়েছে আব্দুল্লাহর। স্থানীয় পিডিব’র এমন সুপরিকল্পিত শোষণ ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে চাই কৃষক আবদুল্লাহ। ভুক্তভোগি ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় তিন বছর আগে পিডিবি’র বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিলেন আবদুল্লাহর বাবা ফাইজুর রহমান। মিটার নং-১০৭৩২৮৭৩। হিসাব নং-২৬২৭৩/এ। নিয়মিত বিল পরিশোধ করে আসছেন তারা। ৪/৫ মাস আগে পিডিবিতে কর্মরত মাসুদ নামের ব্যক্তি জানিয়েছেন মিটারটির ডিসপ্লে নষ্ট। পরিবর্তন না করলে সমস্যা হবে। সরল বিশ্বাসে রাজি হন কৃষক আবদুল্লাহ। পিডিবি’র লোকজন ভাঙ্গা ও বিকল মিটারটি খুলে নেন। আবদুল্লাহ গত ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর সর্বশেষ ১০০ ইউনিটের ৫১২ টাকা বিল জমা দেন। তখন আগের মিটারের রিডিং ছিল-২৬৪০ ইউনিট। অফিসে গেলে রাজিব জানায় কোন বকেয়া নেই আবদুল্লাহর। ৪ হাজার টাকা নিয়ে আরেকটি ডিজিটাল মিটার স’াপন করে দেন পিডিবি। নতুন মিটার দেয়ার পর আর বিল আসেনি। ৪-৫ মাস পর সুর পাল্টে যায় পিডিবি’র লোকজনের। প্রকৌশলী সুমন সরদার সহ কয়েকজন ওঠে পড়ে লাগে যান। অফিসে আসলে প্রকৌশলী সুমন বলেন পুরাতন মিটারে ১০ হাজার ইউনিট বকেয়া। প্রতি ইউনিট ১০ টাকা। অনেক টাকার ব্যাপার। শেষ করতে হলে দেড় লাখ টাকা দিতে হবে। আবদুল্লাহর সাফ কথা ‘ডিসপ্লে বিহীন নষ্ট মিটার আপনারাই অফিসে এনেছেন। ৪ মাস পর কেন ও কিভাবে রিডিং দেখলেন। আমাকে দেখালেন না কেন? সব ভন্ডামি। আমি গরীব মানুষ। এক টাকাও দিতে পারব না। অফিসের বেশ কয়েকজন আবদুল্লাহর পিছু নিয়েছেন। তাদের কথা একটাই। বিষয়টি দ্রূত শেষ করূন। এক লাখ ৭০ হাজার থেকে এখন ৫০ হাজারে নেমে এসেছেন। মিটারটিতে সর্বশেষ রিডিং ছিল ২৬৪০ ইউনিট। তাদের হিসেবে অফিসে রক্ষিত মিটারটির বর্তমান রিডিং ১২৬৪০ ইউনিট। বিকল হয়ে অফিসে পড়ে থাকা মিটারের রিডিং বাড়ছে কিভাবে? গায়েবী বিলের চাপে এখন দিশেহারা দরিদ্র কৃষক আবদুল্লাহ। তিনি কাগজপত্র নিয়ে পাগলের মত ঘুরছেন। আবদুল্লাহ বলেন, দুই বছরে যেখানে রিডিং ২৬৪০ ইউনিট। সেখানে মাত্র ৪ মাসে বিকল মিটারে কিভাবে ১০ হাজার ইউনিট হল? আবার নিস্পত্তির জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে শুরূ করে এখন ৫০ হাজার দিতে বলছেন। বকেয়াই যদি থেকে থাকে ৫০ হাজারে নিস্পত্তি করবেন কিভাবে? মামলার হুমকিও দিচ্ছেন। প্রকৌশলী সুমন সরদার ধান্ধার জাল ফেলেছেন। তিনি গোটা সরাইলেই নিরীহ সহজ সরল গ্রাহক দেখে এভাবে কৌশলে বেকায়দায় ফেলে টাকা কামাই করছেন। তার হাত থেকে আমাদেরকে বাঁচান। ঘরে খাবার নেই। এক টাকাও এখন দেয়ার ক্ষমতা নেই। সরাইল পিডিবি’র উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. সুমন হোসেন সর্দার বলেন, দেড় লাখ টাকা দাবীসহ অন্যান্য অভিযোগ সঠিক নয়। ৪ হাজার টাকায় কোন মিটার নেই। আমরা যখন উনার মিটারটি পেয়েছি। তখনই বকেয়া রিডিং দেখেছি। নতুন মিটারটি অফিসে নথিভুক্ত হয়নি। যিনি তাকে মিটার দিয়েছেন তার বিষয়ে এক্সেন স্যারের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। গ্রাহকের সুবিধার্থে আবেদন করলে অল্প অল্প করে বিল জমা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল

গায়েবি বিলে দিশেহারা কৃষক আবদুল্লাহ নিস্পত্তির ফি দাবী দেড় লাখ টাকা!

Update Time : 10:03:42 pm, Thursday, 25 August 2022

মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:

আকস্মিক গায়েবি বিলে দিশেহারা সরাইল পিডিবি’র একজন নিয়মিত গ্রাহক কৃষক মো. আবদুল্লাহ খাদেম (৫৩)। বিকল ঘোষণা দিয়ে গত ১৩ ফেব্রূয়ারি পিডিবি নিয়ে গেছেন ডিজিটাল মিটারটি। অফিসের রাজন জানিয়েছেন কোন বকেয়া নেই। নতুন মিটারের জন্য ৪ হাজার টাকা নিয়েছেন মাসুদ। কিছু দিন পর নতুন ডিজিটাল মিটার লাগিয়েছেন। চার মাস পর হঠাৎ সুর পাল্টে গেছে পিডিবি’র লোকদের। ভাঙ্গা ও বিকল মিটারে আবদুল্লাহর বকেয়া ১০ হাজার ইউনিট। সমাধান চাইলে প্রকৌশলী সুমন সরদারসহ ২০ জনকে দাওয়াত খাওয়ানোর প্রস্তাব। দাওয়াতও খাওয়ালেন। নৌকা ভাড়া দিয়েছেন ৩ হাজার টাকা। এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি। এখন বিষয়টি নিস্পত্তির ফি দাবী করা হচ্ছে দেড় লাখ টাকা। মুঠোফোনে আবদুল্লাহকে সুমন সরদারসহ পিডিবি অফিসের আরো ৩-৪ জন নিয়মিত চাপ দিচ্ছেন। সাড়া নেই তার। অবশেষে আবদুল্লাহকে ঘায়েল করতে গত জুলাই মাসে ধরিয়ে দিয়েছেন ২ হাজার ইউনিটের ২১ হাজার ৫৭২ টাকার একটি বিল। বর্তমান রিডিং দেখানো হয়েছে ৪৮৭০ ইউনিট। আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়েছে আব্দুল্লাহর। স্থানীয় পিডিব’র এমন সুপরিকল্পিত শোষণ ও অত্যাচার থেকে বাঁচতে চাই কৃষক আবদুল্লাহ। ভুক্তভোগি ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় তিন বছর আগে পিডিবি’র বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিলেন আবদুল্লাহর বাবা ফাইজুর রহমান। মিটার নং-১০৭৩২৮৭৩। হিসাব নং-২৬২৭৩/এ। নিয়মিত বিল পরিশোধ করে আসছেন তারা। ৪/৫ মাস আগে পিডিবিতে কর্মরত মাসুদ নামের ব্যক্তি জানিয়েছেন মিটারটির ডিসপ্লে নষ্ট। পরিবর্তন না করলে সমস্যা হবে। সরল বিশ্বাসে রাজি হন কৃষক আবদুল্লাহ। পিডিবি’র লোকজন ভাঙ্গা ও বিকল মিটারটি খুলে নেন। আবদুল্লাহ গত ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর সর্বশেষ ১০০ ইউনিটের ৫১২ টাকা বিল জমা দেন। তখন আগের মিটারের রিডিং ছিল-২৬৪০ ইউনিট। অফিসে গেলে রাজিব জানায় কোন বকেয়া নেই আবদুল্লাহর। ৪ হাজার টাকা নিয়ে আরেকটি ডিজিটাল মিটার স’াপন করে দেন পিডিবি। নতুন মিটার দেয়ার পর আর বিল আসেনি। ৪-৫ মাস পর সুর পাল্টে যায় পিডিবি’র লোকজনের। প্রকৌশলী সুমন সরদার সহ কয়েকজন ওঠে পড়ে লাগে যান। অফিসে আসলে প্রকৌশলী সুমন বলেন পুরাতন মিটারে ১০ হাজার ইউনিট বকেয়া। প্রতি ইউনিট ১০ টাকা। অনেক টাকার ব্যাপার। শেষ করতে হলে দেড় লাখ টাকা দিতে হবে। আবদুল্লাহর সাফ কথা ‘ডিসপ্লে বিহীন নষ্ট মিটার আপনারাই অফিসে এনেছেন। ৪ মাস পর কেন ও কিভাবে রিডিং দেখলেন। আমাকে দেখালেন না কেন? সব ভন্ডামি। আমি গরীব মানুষ। এক টাকাও দিতে পারব না। অফিসের বেশ কয়েকজন আবদুল্লাহর পিছু নিয়েছেন। তাদের কথা একটাই। বিষয়টি দ্রূত শেষ করূন। এক লাখ ৭০ হাজার থেকে এখন ৫০ হাজারে নেমে এসেছেন। মিটারটিতে সর্বশেষ রিডিং ছিল ২৬৪০ ইউনিট। তাদের হিসেবে অফিসে রক্ষিত মিটারটির বর্তমান রিডিং ১২৬৪০ ইউনিট। বিকল হয়ে অফিসে পড়ে থাকা মিটারের রিডিং বাড়ছে কিভাবে? গায়েবী বিলের চাপে এখন দিশেহারা দরিদ্র কৃষক আবদুল্লাহ। তিনি কাগজপত্র নিয়ে পাগলের মত ঘুরছেন। আবদুল্লাহ বলেন, দুই বছরে যেখানে রিডিং ২৬৪০ ইউনিট। সেখানে মাত্র ৪ মাসে বিকল মিটারে কিভাবে ১০ হাজার ইউনিট হল? আবার নিস্পত্তির জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে শুরূ করে এখন ৫০ হাজার দিতে বলছেন। বকেয়াই যদি থেকে থাকে ৫০ হাজারে নিস্পত্তি করবেন কিভাবে? মামলার হুমকিও দিচ্ছেন। প্রকৌশলী সুমন সরদার ধান্ধার জাল ফেলেছেন। তিনি গোটা সরাইলেই নিরীহ সহজ সরল গ্রাহক দেখে এভাবে কৌশলে বেকায়দায় ফেলে টাকা কামাই করছেন। তার হাত থেকে আমাদেরকে বাঁচান। ঘরে খাবার নেই। এক টাকাও এখন দেয়ার ক্ষমতা নেই। সরাইল পিডিবি’র উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. সুমন হোসেন সর্দার বলেন, দেড় লাখ টাকা দাবীসহ অন্যান্য অভিযোগ সঠিক নয়। ৪ হাজার টাকায় কোন মিটার নেই। আমরা যখন উনার মিটারটি পেয়েছি। তখনই বকেয়া রিডিং দেখেছি। নতুন মিটারটি অফিসে নথিভুক্ত হয়নি। যিনি তাকে মিটার দিয়েছেন তার বিষয়ে এক্সেন স্যারের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। গ্রাহকের সুবিধার্থে আবেদন করলে অল্প অল্প করে বিল জমা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।